parbattanews

আইনের তোয়াক্কা না করে সেন্টমার্টিনে নির্মিত হচ্ছে হোটেল

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

সেন্টমার্টিন দ্বীপের পশ্চিমপাড়া সৈকতে কোনাপাড়া এলাকার বিলাসবহুল একটি রিসোর্ট লাবিবা বিলাস। দোতলা এ স্থাপনাটি তিনতলা করার কাজ চলছে।

শ্রমিকরা জানান, তারা নির্বিঘেœই কাজ করছেন। প্রশাসনের কেউ দেখেননি।

অথচ দেশের একমাত্র এ প্রবালদ্বীপে স্থাপনা নির্মাণে অনুমতি দেয় না জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতর। এছাড়া প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন ঘোষিত এ এলাকায় গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলতে হাইকোর্টের নির্দেশও রয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সেন্টমার্টিনের পশ্চিমপাড়া সমুদ্র সৈকতের পাশেই একটি স্থায়ী পাকা ভবনের নির্মাণকাজ চলছে।

স্থানীয়রা জানান, এখানে একটি আবাসিক হোটেল হবে।

নির্মাণকাজে ব্যস্ত শ্রমিকরা জানান, ১৫-২০ দিন ধরে কাজ চলছে। একদিনও কাজ থেমে থাকেনি। এ ভবনের মালিক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি জাহেদ। তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। একইভাবে পশ্চিম কোনাপাড়া সৈকতের সঙ্গে লাগোয়া রিসোর্ট লাবিবা বিলাস এর তৃতীয় তলার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ চলছে। দোতলার হোটেলটি দীর্ঘদিন ধরেই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এখন তৃতীয় তলা পর্যন্ত বর্ধিত করা হচ্ছে।

রিসোর্টটির ম্যানেজার আবদুস সালাম বলেন, আমি রিসোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি নির্মাণকাজ দেখাশোনা করি। এখন হোটেলটি তিনতলা করা হচ্ছে। আমাদের কেউ কখনো বাধা দেয়নি। মালিক ঢাকায় থাকেন বলেও জানান তিনি।

পুরো এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শুধু এ দুটি স্থাপনাই নয়, লাবিবা বিলাস, সমুদ্র কুটিরসহ আট-নয়টি ছোট-বড় স্থাপণা নির্মাণের কাজ চলছে এবং শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বিঘ্নেই কাজ করছেন তারা। যদিও ২০১৭ সালে দ্বীপে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ১শ’ ৪টি আবাসিক হোটেলের মধ্যে তিনতলা, দোতলা ও একতলার ৩৮টি আবাসিক হোটেল ভাঙার নির্দেশ দেয় পরিবেশ অধিদফতর। কিন্তু ভাঙা তো দূরের কথা, নতুন নতুন স্থাপনা নির্মাণ চলছেই।

এর আগে ২০১১ সালের ২৪ অক্টোবর স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ ও সব স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। চার সচিব, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট ১১ সরকারি কর্মকর্তাকে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, হোটেল ফ্যান্টাসি, রিসোর্ট লাবিবা বিলাস, সমুদ্র কুটিরসহ যেসব হোটেল গড়ে উঠছে, তাদের বাধা দিয়েও থামানো যাচ্ছে না। কয়েকটি স্থাপনার নির্মাণ সামগ্রী জব্দ করা হয়েছিল। কিন্তু ঠিকই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া প্রভাবশালীদের জন্য স্বয়ং প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উল্টো তাকেই চাপ দেন বলে অভিযোগ করেন চেয়ারম্যান।

তথ্য থাকলেও লোকবল সংকটের কারণে তদারকি করা যায় না বলে জানান পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. মোয়াজ্জম হোসাইন।

নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায় ২০১৭ সালে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আদালত অবমাননার রুল জারি করেছিলেন উচ্চ আদালত। তাদের মধ্যে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকও ছিলেন।

এব্যাপারে বর্তমান জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, সেন্টমার্টিনে কয়েকদিন পরপর বিভিন্ন নির্মাণকাজ বন্ধ করা হচ্ছে। অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ যেকোনো মূল্যে বন্ধ করা হবে। আদালতের নির্দেশনাও যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।

Exit mobile version