parbattanews

আগেই ব্যাংক লুটের হুমকি দিয়েছিল কেএনএফ

প্রায় তেরমাস আগেই ব্যাংক লুটের হুমকি দিয়েছিল কেএনএফ। এরপর সতর্কতামূলক ব্যবস্থাও নেয় প্রশাসন, কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। পুলিশের ধারণা, নিজেদের আর্থিক সংকট মেটানোর পাশাপাশি অস্ত্র কিনতে ব্যাংক লুট করে তারা। থানা-চেকপোস্টে আক্রমণের আগাম তথ্য পেতে ছিলো গোয়েন্দা ব্যর্থতা।

গেলো বছরের জানুয়ারিতে বান্দরবানের স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য ছিল, বিভিন্ন ব্যাংকে হতে পারে সন্ত্রাসী হামলা। কারণ, পাহাড়ি সংগঠন কেএনএফ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি হুমকি দিয়ে রেখেছিল। এরপর সরকারি বেসরকারি সব ব্যাংকে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়।

সেসময় কিছু না হলেও, তেরমাস পর দুটি ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা চালিয়ে ২৫ লাখ টাকা লুট করে কেএনএফ। এরপর হামলা হয় থানায়-চেকপোস্টে। সংগঠনটির এমন আগ্রাসী আক্রমণের পর সামনে আসছে কেন ব্যাংক আর থানা হামলার লক্ষ্যবস্তু?

ঘটনার পর পুলিশের এক চিঠিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে আর্থিক সংকটে রয়েছে কেএনএফ। সেইসঙ্গে ভিনদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছ থেকে অস্ত্র কেনার জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে চায় তারা। তারই অংশ হিসেবে ব্যাংকে এই হামলা। এছাড়া ব্যাংক লুটে পুরোপুরি সফল না হওয়ার ক্ষোভ এবং নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিতেই সন্ত্রাসীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে বলে মনে করেন কর্মকর্তারা।

থানচি থানার ওসি জসিম উদ্দিন বলেন, তারা হয়তবা অস্ত্র লুট করা বা জনমনে আতঙ্ক তৈরি করে তাদের শক্তির জানান দিয়েছে। যাতে তারা আরও সুসংসহত হয়।

হামলার জন্য তারা বেছে নেয় ঈদের আগমুহূর্তকে। কেননা, এ সময়ে সব ব্যাংকেই টাকার সরবরাহ বাড়ে। পাশাপাশি শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সঙ্গে সমঝোতা প্রক্রিয়ার কারণে শিথিল ছিল যৌথ বাহিনীর অভিযান। ফলে, সহজে সংগঠিত হতে পেরেছে সন্ত্রাসীরা। এজন্য তারা দীর্ঘসময় ধরে পরিকল্পনা করেছে বলে মনে করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরেআলম মিনা বলেন, অবশ্যই তাদের একটা প্রস্তুতি ছিল। কারণ তারা কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন গ্রুপকে আটক করেছে। মসজিদে যারা নামাজ পড়েছে তাদের আটক করেছে। আমাদের পুলিশের টিমকে তারা আটক করেছে। আমরা স্থানীয়ভাবে তদন্ত করে যা দেখলাম তাতে বুঝলাম যে তারা পরিকল্পিতভাবেই কাজটি করেছে।

তবে এই নিরাপত্তা বিশ্লেষক করেন, এই হামলার জন্য কেএনএফের পেছনে কোন শক্তির মদদ আছে। না হলে, এভাবে সর্বাত্মক হামলায় যেত না সংগঠনটি।

মেজর (অব.) এমদাদুল বলেন, যারা শান্তি আলোচনার জন্য আগ্রহী তাদের এ প্রচেষ্টাকে ভন্ডুল করার জন্য আরেকটি গ্রুপ হয়ত মরিয়া হয়ে উঠেছে। আবার এমনও হতে পারে বাইরের কোথায় তাদের যে লিংক এক দু’বছরের ভেতরে হয়ে যায় সেখান থেকেও কোন ধরণের ইন্ধন পেতে পারে যে তোমরা এখন আত্মসমপর্ণ করো না।

প্রশ্ন উঠেছে, দীর্ঘ প্রস্তুতি আর পরিকল্পনা করে তিনদিন ধরে কেএনএফ এমন সাঁড়াশি হামলা চালালেও; কেন তার আগাম তথ্য পায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরেআলম মিনা আরও বলেন, নিশ্চয়ই এতগুলো লোক জড়ো হলে তার আগের প্রস্তুতি ছিল। সে তথ্যগুলো আগাম বা অগ্রিম না পাওয়া এটা তো অবশ্যই ব্যর্থতা বটে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যমতে, সংগঠনটির শীর্ষ অনেক নেতা সরাসরি অংশ নেয় এই মিশনে।

সূত্র: চ্যানেল ২৪

 

Exit mobile version