parbattanews

আজও গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে: বিজিবি’র সতর্ক টহল

2851304573156928558691-500x298

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের গোলা বর্ষনের আওয়াজ পেয়েছেন স্থানীয়রা। বুধবার সীমান্তের কাঁটাতার ঘেঁষে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা যাচ্ছে। সীমান্তের দুই পারের খবর রাখেন এমন এক নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি থেকে এ খবর পাওয়া গেছে।

মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) গুলিতে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) সদস্য নিহত হওয়ার এক সপ্তাহ পরেও সীমান্তে উৎকন্ঠা ও আতঙ্ক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সীমান্তের ওপারে ফকিরা বাজার এলাকায় বুধবার সকাল নয়টার সময়ে আবারো থেমে থেমে গুলি বর্ষনের আওয়াজ শুনেছেন স্থানীয়রা। মায়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও মায়ানমার -বাংলাদেশ সীমান্তের রোহিঙ্গা বিছিন্নতাবাদী সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) সাথে এই গুলাগুলি ধারনা করা হচ্ছে।

অন্য আরেকটি সূত্র জানায়, মিয়ানমার সৈন্যদের মনোবল বৃদ্ধি করতে প্রশিক্ষনের অংশ হিসেবে গোলাবারুদ ব্যবহার করা হচ্ছে। মঙ্গলবার রাত পৌনে নয়টার দিকে গোলা বর্ষন ও পরে থেমে থেমে গুলির শব্দে আতংকিত হয়ে উঠে নাইক্ষ্যংছড়ির জামছড়ি, প্রধানঝিরি ও আশারতলী সীমান্তে বসবাসরত জনসাধারণ। বাংলাদেশ-মিয়ানমারের ৪৫নং সীমান্ত পিলারের ওপারে মর্টারের শব্দের পর ব্যাপক গুলি বর্ষণ শুরু হয়। ধারণা করা হচ্ছে, মিয়ানমারের ফকিরা বাজারসংলগ্ন থালিডং রোহিঙ্গা বসতি এলাকায় ওই হামলার ঘটনা ঘটতে পারে।

নাইক্ষংছড়ি সীমান্তের জামছড়ি এলাকার বাসিন্দা আফতাব মিয়া, জয়নাল, ইকবাল, লোকমান হাকিম, মঞ্জুর আলম জানান, মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ করে পর পর দশ’টি বিকট শব্দ শুনতে পেয়ে তারা ঘর থেকে বের হয়ে পার্শ্ববর্তী নিরাপদ আশ্রয়ে জড়ো হন। এর কিছুক্ষণ পর অন্তত ৫০ রাউন্ডের মত গুলির শব্দ শুনতে পান। রাত এগারটা পর্যন্ত গুলির শব্দ শুনতে পান।

একটি নির্ভর যোগ্য সুত্র জানায়, গত ২৮ মে দোছড়ির পাইনছড়া এলাকায় বিজিবি জওয়ান হত্যার পর থেকে মিয়ানমারের মংডু জেলায় সান্ধ্য আইন জারি করে জনগণের চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। সীমান্তে দায়িত্বরত বিজিবির এক কর্মকর্তা গুলির শব্দের কথা স্বীকার করে রাতে বিজিবি সদস্যদের সর্তক অবস্থানে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে গোলা বাংলাদেশের সীমানায় এসে পড়েছে কি না সেটা নিশ্চিত হতে পারেনি।

এ ব্যাপারে ৩১ বিজিবির অধিনায়ক লে.কর্ণেল শফিকুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি, দেশের ভূখণ্ড রক্ষায় তাঁরা সতর্ক। সীমান্তে বিজিবি সর্তক আছে জানিয়ে গোলা বর্ষনের খবর নিয়ে দেখছেন বলে জানান।

এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু বাজারে ব্যবসায়ী আব্দুল হক জানান, গতকাল বুধবার সকালে সীমান্তের তমব্রু হেডম্যান পাড়া থেকে বাইশফাঁড়ি বিওপি পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তে মিয়ানমার সেনাদের বাংলাদেশের দিকে অস্ত্র উঁচিয়ে টহল দিতে তিনি দেখেছেন। তিনি জানান, ৩৫ নম্বর সীমান্ত পিলার থেকে ৩৯ নম্বর পিলার পর্যন্ত সীমান্তের এপারে বিজিবি সদস্যদেরও তিনি সতর্কাস্থায় রয়েছেন। জানা গেছে, গত তিন দিন ধরে মিয়ানমারের ওয়ালিদ, সালিদং, পুরান মাইজ্যা, আমতলা, সিকদারপাড়া, মিয়াজিপাড়া ও পার্শ্ববর্তী ফকিরা বাজার সীমান্তে মোতায়েন করা সৈন্যদের বিভিন্ন কাজের জন্য রোহিঙ্গা জোর করে বিনা পারিশ্রমিকে ব্যবহার করা হচ্ছে।

Exit mobile version