আত্মসমর্পণকারী কক্সবাজারের মহেশখালী-কুতুবদিয়ার ৪৩ জলদস্যুকে জামিন দিয়েছে আদালত।
বুধবার (৮ মে) দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক খোন্দকার হাসান মোহাম্মদ ফিরোজ এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানাযায়, গত বছরের ২০ অক্টোবর আত্মসমর্পণের পর তাদের বিরুদ্ধে মহেশখালী থানায় মামলা করা হয় (যার নং-০৮)। জিআর মামলা ২৮৬/২০১৮। এ মামলা থেকে উদ্ধৃত পৃথক দুইটি মিস মামলায় (যার নং ৪৪৪৬/২০১৮) দীর্ঘ শুনানী শেষে ৩৭ জনকে ও ৮০৪/২০১৯ এ মামলায় বাকি ৬ জনকে জামিনের আদেশ দেন বিজ্ঞ বিচারক।
জামিনপ্রাপ্ত হলেন, আনজু বাহিনী: মহেশখালীর সোনাদিয়ার বদিউল আলমের ছেলে ও আনজু বাহিনীর প্রধান আনজু মিয়া সিকদার (৩৩), তার বাহিনীর সদস্য-মৃত মোস্তফার ছেলে সুমন মিয়া (৩৮), কুতুবজোমের মৃত এখলাছ মিয়ার ছেলে মকছুদ মিয়া (৩২), সোনাদিয়ার আব্দুর রহমানের ছেলে মোনাফ মিয়া (২৮), মোজাফফরের ছেলে মো. মোবারক (২৭), বাহাদুর মিয়ার ছেলে মনজু মিয়া (৩০), বাদশা মিয়ার ছেলে নুরুল মোস্তফা নাগু (৩০), নুরু মিয়ার ছেলে ছৈয়দ হোসেন (৩০), মৃত বাহাদুরের ছেলে নবাব মিয়া (২৯), আব্দুল গফুর ওরফে নাগু মেম্বারের ছেলে ইমতিয়াজ উদ্দিন নকিব(৩১)।
রমিজ বাহিনী: প্রধান কুতুবদিয়ার উত্তর ধুরুংয়ের মৃত নজির আহমদের ছেলে রমিজ উদ্দিন (৫৩), লেমশিখালীর মৃত আবু মুছার ছেলে ছালেহ আহমদ প্রকাশ ছইল্লা ডাকাত (৪৬)।
কালাবদা বাহিনী: প্রধান মহেশখালীর কালারমারছড়ার হাজী আবুল কাশেমের ছেলে নুরুল আলম প্রকাশ কালাবদা (৪৪), ফকির জামপাড়ার মোহাম্মদ আমিনের ছেলে রশিদ মিয়া (২৯), নুরুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ আলী (৩৩), মৃত করিম মিয়ার ছেলে আলমগীর প্রকাশ টুইন্না ডাকাত (২৪), মৃত ইসমাঈলের ছেলে আবু জাফর প্রকাশ আবু জাইল্যা (৪৮), ও মৃত নেজাম উদ্দিনের ছেলে আলা উদ্দিন (২৩)।
জালাল বাহিনী: হোয়ানকের ছিদ্দিক আহমদের ছেলে মো. ইসমাঈল (৩১), বশির আহমদের ছেলে মোস্তফা কামাল পারভেজ (২৫), সিদ্দিক আহমেদের ছেলে ওসমান (৩০), মৃত আবুল কালামের ছেলে আহমদ জামান (৪০), আবুল কালামের ছেলে নুরুল আমিন (২৬), ফরিদুল ইসলামের ছেলে আবু তাহের (৩১), মৃত সিদ্দিক আহমদের ছেলে আব্দুল মান্নান (২৬), মজিবুরের ছেলে মো. মান্নান (৩৩), মৃত মুজিবুর রহমানের ছেলে মো. রাশেদ (৩২), মৃত ছৈয়দ আহমদ মো. লোকমান (৩১), নুর আহমদের ছেলে জয়নাল আবেদীন (৩৫), মৃত মো. শরীফের ছেলে মো. শহিদুল্লাহ, মো. নাছিমের ছেলে মো. বাদল (৩৪), মৃত রফিক উদ্দিনের ছেলে মাহাবুব আলম (৩৫) ও মৃত মৌলভী রফিক উদ্দিনের ছেলে আতা উল্লাহ বাহারী (৩৩)।
আয়ুব বাহিনী: হোয়ানকের মৃত বদর আমিনের ছেলে আব্দুল মান্নান কালু (২৫), সৈয়দ মিয়ার ছেলে মো. জসিম (২৭), গোলাম কুদ্দুসের ছেলে মো. রবিউল আলম (২২), মৃত মোক্তার আহমদের ছেলে মো. রুবেল (২২), মৃত জোনাব আলীর ছেলে আবু তাহের (২৪), গোলাম কুদ্দুসের ছেলে মো. আনোয়ার (৩২), মৃত সিরাজের ছেলে মো. আনোয়ার পাশা (২৭), করিম দাদের ছেলে মো. ইউনূছ (২৮), মো. কুদ্দুসের ছেলে মো. কামাল (৩৫)।
এছাড়া আলা উদ্দিন বাহিনীর প্রধান মৃত সোনা মিয়ার ছেলে মো. আলাউদ্দিন (৪৫)। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মমতাজ উদ্দিন আহমদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২০ অক্টোবর শনিবার দুপুরে মহেশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের হাতে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার ৬ জলদস্যু বাহিনীর ৪৩ সদস্য। এসময় ১টি এসএমজি (বেলজিয়াম), ১ টি রিভলবার, বিদেশি পিস্তল দুইটি, দেশি-বিদেশি একনলা বন্দুক ৫২টি, দোনলা দুইটি, ওয়ান শুটারগান ১৯টি, থ্রি কোয়ার্টার গান ১৫টি এবং ২২ বোর রাইফেলসহ সাত হাজার ৬৩৭ রাউন্ড গুলি জমা দেয় তারা। জামিনে মুক্তির পর স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে অন্ধকার এ মানুষগুলো।
জামিনপ্রাপ্ত এসব জলদস্যুরা মঙ্গলবার রাতে আর না হয় পরদিন সকালে কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে বের হবে বলে জানান আত্সমমর্পনের মধ্যস্থতাকারী সাংবাদিক আকরাম হোসাইন।