parbattanews

আন্তঃসীমান্ত হামলা শুরু করতে পারে রোহিঙ্গা জঙ্গিগোষ্ঠী: আইসিজি রিপোর্ট

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা আন্তঃসীমান্ত হামলা শুরু করতে পারে বলে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি)’র এক প্রতিবেদনে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারের ওপর নতুন করে যেকোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা পরিস্থিতির বিপর্যয় ঘটাবে এবং রোহিঙ্গাদের প্রতি মিয়ানমার জনগোষ্ঠীর বিদ্বেষ বাড়াবে বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।

পৃথিবীব্যাপী সংঘাত বন্ধে কর্মরত বেসরকারি ও স্বাধীন অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান আইসিজি বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকট নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করছে’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে প্রতিবেদন বিশ্লেষণ, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) হামলার খবরের তথ্য-উপাত্ত, আরসার কয়েক সদস্যের সাক্ষাত্কার এবং বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের বিভিন্ন উত্স থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আরসা গত ২৫ আগস্ট হামলার পর এতদিন নীরব থাকলেও  এখন আবার সংঘবদ্ধ হতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে মনে হচ্ছে। নতুন সদস্য সংগ্রহ ও প্রশিক্ষণ দেয়ার পর তাদেরকে আরসা আন্ত:সীমান্ত হামলার কাজে ব্যবহার করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এ ধরনের হামলার ফল হবে খুবই নেতিবাচক, যা বাংলাদেশ-মিয়ারমারের সম্পর্ককে চাপের মধ্যে ফেলবে। এতে রোহিঙ্গাদের প্রতি অবজ্ঞা আরো বাড়বে।

তা শেষ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনাকেও ধূলিসাৎ করবে বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়।

আইসিজি আরো বলেছে, আরসা কোনো হামলা না চালালেও তারা সংগঠিত।

কয়েক শত গ্রামে তাদের রয়েছে সুসংগঠিত সেল। তাদের কোনো নির্ধারিত পোশাক নেই। স্থানীয় পর্যায়ের কিছু নেতা ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব তাদের সঙ্গে রয়েছেন। এদের অনেকেই এখন বাংলাদেশে আশ্রয় শিবিরে রয়েছেন। তারা সীমান্ত পেরিয়ে হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে।

আইসিজি বলেছে, সীমান্ত অতিক্রম করে আরসা হামলা চালাতে সক্ষম হলে তাদের টার্গেট হতে পারে নিরাপত্তা স্থাপনা বা নিরাপত্তা বাহিনী।

অথবা তারা রোহিঙ্গাদের জমির দখল নেয়া অমুসলিমদের ওপরেও হামলা চালাতে পার। এরা হতে পারে তাদের সহজ টার্গেট। এমন হামলা হলে অপরিহার্যভাবে তার নেতিবাচক পরিণতি হবে।

এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটলে এর ফল হবে খুবই নেতিবাচক, যা বাংলাদেশ-মিয়ারমার সম্পর্ককে চাপের মধ্যে ফেলবে। এতে রোহিঙ্গাদের প্রতি অবজ্ঞা আরো বাড়বে। তা শেষ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনাকেও ধূলিসাৎ করবে।

আরসা যদি নতুন করে হামলা চালায় তাহলে মিয়ানমারের ভিতরে রোহিঙ্গা বিরোধী মনোভাব চাঙ্গা হবে। তাতে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে এবং রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার সুযোগ আরো কমবে।

তাছাড়া রাখাইনের বৌদ্ধ গ্রামগুলোতে হামলা হলেও মুসলিম বিরোধী ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়বে। তা ছড়িয়ে পড়তে পারে রাখাইন রাজ্যের মধ্যাঞ্চলেও। এই স্থানটিকে সাম্প্রতিক সহিংসতা স্পর্শ করেনি।

রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের জন্য মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিরুদ্ধেও কথা বলেছে আইসিজি। তারা বলছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দেশটিকে বিচ্ছিন্ন করার প্রতিযোগিতার বদলে তাদের উন্নয়ন সহায়তা করা উচিত এবং বেসামরিক সরকার বজায় রাখতে উতসাহিত করা উচিত।

নীতিনির্ধারকদের এমন কোন বিভ্রম থাকা উচিত নয় যে নিষেধাজ্ঞা ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। কারণ এতে পরিস্থিতি শুধু খারাপই হতে পারে।

নিষেধাজ্ঞার ফলে সরকার, সেনাবাহিনী এমনকি পুরো দেশের মানুষ রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আরও ঐক্যবদ্ধ এবং পশ্চিমাবিরোধী মনোভাব চাঙ্গা হতে পারে।

 

সূত্র: south asian monitor

Exit mobile version