‘আন্তর্জাতিক মহলের প্ররোচণায় রেডিও এবিসি পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত’

radio abc

আলমগীর মানিক,রাঙ্গামাটি:

সম্প্রতি আন্তার্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এর সহায়তায় এবিসি ৮৯.২ এফএম রেডিওতে সপ্তাহে ৩ দিন শুক্রবার, রবিবার ও মঙ্গলবার দুপুর ২টা ২০ মিনিটে প্রচারিত “আদিবাসী কন্ঠ” নামক অনুষ্ঠানটি বন্ধের দাবি জানিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে প্রেস বার্তা পাঠিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার ছাত্র আন্দোলন নামে একটি সংগঠন। আন্তর্জাতিক বিশেষ একটি মহলের প্ররোচনায় এবিসি ৮৯.২ এফএম রেডিও কর্তৃপক্ষ পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠার অভিযোগ এনে সংগঠনটি এই দাবি জানায়।উল্লেখ্য রেডিও এবিসি প্রথম আলো, ডেইলি স্টার গ্রুপের একটি সহযোগী গণমাধ্যম- যারা শুরু থেকেই ‘আদিবাসীদের’ একতরফাভাবে পক্ষাবলম্বন করে থাকে।

সোমবার দুপুরে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে প্রদত্ত প্রেস বার্তায় উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। এদেশ তার সংবিধান মতে প্রত্যেক নাগরিকের রাষ্ট্রীয় সমান অধিকারের কথা বলে। কিছু আন্তর্জাতিক কু-চক্রি মহল ও তাদের দ্বারা পরিচালিত সহচরদের কু-দৃষ্টি পড়েছে আমাদের স্বাধীন বাংলায়। তারা আমাদের দেশের উপজাতীয় সম্প্রদায়কে (বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত) আদিবাসী নাম করণের পাঁয়তারা করছে। যা দেশের অখন্ডতা রক্ষায় মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। যদিও বাংলাদেশ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে স্পষ্ট করে বলা আছে বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নেই। জাতি- ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এদেশের নাগরিক। সংবিধানের এই আইনকে উপেক্ষা করে দেশী-বিদেশী কু-চক্রি মহল দেশের অখন্ডতা নিয়ে নিজের স্বার্থে প্রকাশ্যে ষড়যন্ত্র করছে।

তারা বলেন, সম্প্রতি আন্তার্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এর সহায়তায় এবিসি ৮৯.২ অফএম রেডিওতে সপ্তাহে ৩(তিন) দিন শুক্রবার, রবিবার ও মঙ্গলবার দুপুর ২টা ২০ মিনিটে “আদিবাসী কন্ঠ” নামক একটি অনুষ্ঠান প্রচারিত হচ্ছে। উক্ত অনুষ্ঠানটি প্রমাণ করে যে এদেশের অখন্ডতায় বিদেশী চক্রান্তের সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে। এই অনুষ্ঠানে উপজাতিদের ঐতিহ্যর ও সংস্কৃতির নামে সারাদেশসহ সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের আদিবাসী পরিচয়ে পরিচিত করছে। যা দেশের সার্বোভৌম ও অখন্ডতায় আঘাত আনছে বলে আমরা মনে করি।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় স্মারক নং ২২.০৯.১.০/০/২৪/২০০৯(অঋশ-৮)৭৯৯, তারিখ: ২৮.০১.২০১০ইং মূলে সরকারের প্রশাসনিক ভাবে জানানো হয়েছে যে উপজাতি শব্দের পরিবর্তে আদিবাসী শব্দটি ব্যবহার করা যাবে না। তারপরও বিভিন্ন হলুদ মিডিয়া ও চক্রান্তকারি দেশী-বিদেশী দাতা সংস্থা আদিবাসী শব্দটি ব্যবহার করে। এই প্রেক্ষিতে ২০১১ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা: দীপু মনি, বিভিন্ন দেশের হাই কমিশনার, রাষ্ট্রদূত ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিদেরকে (৫০ জনের ও বেশী) পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অনক্লস ভবনে ডেকে এনে বিভিন্ন পত্র পত্রিকার সংবাদ দাতা ও টিভি চ্যানেলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিদেরকে আদিবাসী উচ্চরনে উস্কানি না দেওয়ার জন্য বারণ করেছেন। কিন্তু তারপরও আজ পর্যন্ত এই আদিবাসী ইস্যু নিয়ে দেশী-বিদেশী চক্রান্তকারিদের প্রচার থামেনি। তারা আরোও সংঘবদ্ধ হয়ে সরকারের অবহেলার অভিযোগ এনে পার্বত্য উপজাতিদের কে নিয়ে কিছু মিডিয়াকে হাত করে আদিবাসী শব্দের প্রচার করছে। আগামী মাসে ৩(তিন) পার্বত্য জেলায় আদিবাসী দিবস পালনের প্রস্তুতিও চলছে।

আমরা জানি বর্তমান সরকার সংবিধানের আলোকে দেশ পরিচালনায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কিন্তু আদিবাসী ইস্যু নিয়ে সংবিধান পরিপন্থি প্রচার প্রচারণা বিরুদ্ধে সরকাররে কোন পদক্ষেপ না থাকায় আমরা পার্বত্যবাসী সরকাররে প্রতি সন্ধিহান। এই মর্মে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার ছাত্র আন্দোলন রাঙ্গামাটি জেলা শাখার পক্ষ থেকে সরকারের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি যারা সংবিধান পরিপন্থি আদিবাসী ইস্যু নিয়ে বাঙালি ও উপজাতী সম্প্রদায়ের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য সৃষ্টি করে দেশকে বিভাজনের পাঁয়তারা করছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ও মিডিয়া সকল প্রকার আদিবাসী বিষয়ক প্রচার বন্ধ করা হোক। যা দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ কর। অন্যথায় আমরা দেশের অখন্ডতা রক্ষার স্বার্থে পবিত্র ঈদুল-ফিতর এর পরে যে কোন বৃহৎ কর্মসূচী দিতে বাধ্য হবো।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন