parbattanews

আবারো মিয়ানমারের হেলিকপ্টার ও গোলা বাংলাদেশে

মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোঁড়া আবারো দুটি গোলা এসে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পড়েছে। শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় গোলা দুটি পড়ে। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো সীমান্ত লংঘন করলো মিয়ানমার।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন বান্দরবানের পুলিশ সুপার (এসপি) তারিকুল ইসলাম তারিক। তিনি জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে সতর্ক অবস্থায় আছে এবং সেখানে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

৩ সেপ্টেম্বর শনিবার ভোরে মায়ানমারের হেলিকপ্টার ও  জঙ্গী বিমান ঘুমধুম সীমান্তের, তুমব্রু, বাইশপাড়ী, রেজু গর্জন বুনিয়া, এলাকায় বোমা বর্ষণ শুরু করে। এসময় পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। মায়ানমারের বিদ্রোহী গ্রুপ পাল্টা বিমান বিধংসী হেভি মেশিন গান দিয়ে গোলা বর্ষণ করে সরকারি বাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার ধংস ও ভূপাতিত করার দাবী করেছে। তবে এ খবরের নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি।

এর আগে রবিবার (২৮ আগস্ট) বেলা ৩টার দিকে মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা দুটি মর্টার শেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় ঘুমধুমের তমব্রু উত্তর মসজিদের কাছে পড়ে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মিয়ারমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানালেও পরদিনই মিয়ানমারের জঙ্গী হেলিকপ্টার বাংলাদেশের আকাশ সীমা লংঘন করে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সকাল সাড়ে ৯টার সময় নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তের রেজু আমতলী বিজিবি বিওপির আওতাধীন সীমান্ত পিলার ৪০-৪১-এর মাঝামাঝি স্থানে মায়ানমার সীমান্তের ওপারে সেনাবাহিনীর দুটি যুদ্ধবিমান এবং দুটি ফাইটিং হেলিকপ্টার টহল দেয়। সে সময় তাদের যুদ্ধবিমান থেকে প্রায় ৮ থেকে ১০টি গোলা ছোড়া হয়। এ ছাড়া হেলিকপ্টার থেকেও আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫টি গুলি করতে দেখা যায়। এ সময় সীমান্ত পিলার ৪০ বরাবর আনুমানিক  ১২০ মিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা পড়ে।

এদিকে স্থানীয়রা জানান, নাইক্ষ্যংছড়ির ১নং ওয়ার্ডের তুমব্রু বিজিবি বিওপির সীমান্ত পিলার ৩৪-৩৫-এর মাঝামাঝি মিয়ানমার অংশে ২-বিজিপির তমব্রু রাইট ক্যাম্প থেকে চার রাউন্ড ভারী অস্ত্রের গুলি করা হয়। এখনও মিয়ানমারের মুরিঙ্গাঝিরি ক্যাম্প ও তমব্রু রাইট ক্যাম্প থেকে থেমে থেমে মর্টার ফায়ার চলমান রয়েছে। তবে এতে কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় আতঙ্কে আছেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ‘তমব্রু সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির ঘটনায় গত রবিবার দুটি এবং বৃহস্পতিবার একটি মর্টার শেল সীমান্তের এপারে এসে পড়েছে। আজ সকালে আবারও দুটি বিমান থেকে ছোড়া গোলা এসে সীমান্তে পড়েছে। এ ছাড়া গতকাল থেকে দুটি হেলিকপ্টারকে ওপারে সীমানাঘেঁষে টহল দিতে দেখা গেছে।’ এতে রোহিঙ্গা আশ্রয় প্রার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছে বলেও জানান তিনি। সীমান্তে বিজিবি কড়া সতর্কাবস্থায় রয়েছে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, গতকাল মায়ানমারের সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের সাথে তুমুল যুদ্ব শুরু হয়। কাছিম রাজার পাহাড়ের পার্শ্ববর্তী একটি ক্যাম্প বিদ্রোহীরা দখল করে নেওয়ার সময় সরকারি বাহিনীর অন্তত ৩০ জন সৈন্য নিহত ও ২০ হয় আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঐ সময় বিদ্রোহীদের ১০ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন বলে বিশ্বস্ত সুত্রে খবর পাওয়া গেছে।

সরকারি বাহিনীর নিকট থেকে বিদ্রোহীরা বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ উদ্বার করতে সক্ষম হয়।  জানা গেছে, বিদ্রোহী আরাকান আর্মি বাংলাদেশ- মিয়ানমার সীমান্তের বিপুল এলাকার নিয়ন্ত্রণ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিকট থেকে কেড়ে নিয়েছে। এ নিয়ন্ত্রণ উদ্ধারের লক্ষ্যে এ হামলা পরিচালিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Exit mobile version