parbattanews

আমরা আসলে কতটুকু বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ?

পার্বত্য নিউজ ডেস্ক:

আমরা কি কখনো ফিরে তাকিয়েছি ভূমি হারানো, স্বজন হারানো, বঞ্চিত জুম্মদের প্রতি। কখনো ভেবেছি বান্দরবানের দূর পাহাড়ে খুমি, খিয়াংরা কেমন আছে? কখনো খোঁজ নিয়েছি লক্ষী বিজয় চাকমার স্ত্রী/পরিবার কিভাবে জীবন চালাচ্ছে? কিভাবে বুদ্ধপুদীর মা-হারা সন্তানেরা পড়ালেখা চালাচ্ছে?

কোটার সুবিধা নিচ্ছে কারা? ইন্ডিয়া/অস্ট্রেলিয়ায় স্কলারশিপ নিয়ে যাচ্ছে কারা? আমি, তুমি, আমরা। এই “আমরা” কিন্তু সমাজের তুলনামূলকভাবে সকল সুবিধাপ্রাপ্ত অগ্রগামী অংশ ।
বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটার সুবিধার পেয়ে ভর্তি হচ্ছে কে? নটরডেম কলেজ/হলিক্রস কলেজে পড়ার সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থী অথবা খাগড়াছড়ি/রাঙামাটি সদরের শিক্ষার সব সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থী।
সেই একই সুবিধাপ্রাপ্তরা কিন্তু আবার বিসিএস বা সরকারী চাকরিতে একই সুযোগ নিচ্ছি। কিন্তু জাতির অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে আমরা কি করছি? আমরাই কি কম সুবিধাবাদি? আমরাই কি বেঈমান নই?

ফেসবুকে, ব্লগে বিদ্রোহ করা, এসি রুমে বসে আদিবাসীদের নিয়ে সংগ্রাম করা, আদিবাসী, আদিবাসী বলে এনজিওর কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে নিজের পকেট ভারী করা, জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের নামে দরিদ্র জনগনের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে সেই টাকায় বুলেট কিনে তা আরেক জুম্ম ভাইয়ের বুক ঝাঝরা করে দেওয়া, এগুলোই কি সুবিধাবাদের লক্ষণ নয়? এগুলোই কি বেঈমানির লক্ষণ নয়?

আসলে কাদের জন্য এই আন্দোলন? কাদের জন্য এই মুক্তি সংগ্রাম? তোমার, আমার মতো সুবিধাবাদিদের জন্য? যে আন্দোলন, যে সংগ্রাম, যুবসমাজ সমাজের পিছিয়ে পড়া শোষিত, বঞ্চিত জনগনের কথা বলতে পারেনা, তাদেরকে আশার আলো দেখাতে পারেনা, সে যুবসমাজ নিয়ে জাতি স্বপ্ন দেখতে পারেনা, সেই আন্দোলন, সেই সংগ্রামে মুক্তি আসবেনা।
আমরা ভুলে যাচ্ছি আমাদের জাতির অস্তিত্বের সংকটের কথা, আমাদের সেই জুম্ম ভাই বোনদের কথা, আমাদের স্বজনদের কথা যারা সত্যিকার অর্থে অনেক অনেক পিছিয়ে, অনেক অনেক বঞ্চিত।

আমরা আসলে কতটুকু বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ?
প্রশ্নটা আমার কাছে, সবার কাছে।

(মন্তব্যটি ফেসবুকের ‘প্রাউড টু বি এ জুম্ ‘ নামক পেইজ থেকে নেয়া। পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান অবস্থার চাপা পড়ে কিছু অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এই মন্তব্যে উঠে এসেছে। সে কারণে মন্তব্যটি  মুক্তমত পেইজে পার্বত্য নিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো- বি.স.)

Exit mobile version