আরআরআরসিসহ ৭টি ক্যাম্পের সিআইসি প্রত্যাহার

fec-image

কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার(আরআরআরসি), সরকারের অতিরিক্ত সচিব মো. আবুল কালামকে অবশেষে বদলি করে ওএসডি করা হয়েছেে। তদস্থলে যুগ্ম সচিব দুর্যোগ ব্যবস্হাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মাহবুব আলম তালুকদারকে আরআরআরসি হিসেবে নিযুক্ত করে তাকে ৫ সেপ্টেম্বরের মধ্য যোগদান করতে বলা হয়েছে।

এদিকে, বিতর্কিত সরকারি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ক্যাম্প থেকে প্রত্যাহারের সংবাদে স্থানীয় লোকজনের মাঝে স্বস্তি দেখা যায়। তবে তাদের বদলিতে রোহিঙ্গারা তেমন খুশি হতে পারেনি বলে জানা গেছে। গত ২৫ আগস্ট কক্সবাজারের কুতুপালংয়ে শরণার্থী শিবিরের অভ্যন্তরে একটি রোহিঙ্গা গ্রুপকে জনসমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হয়।

এ কারণে রোববার (১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) এর কার্যালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। দু’বছর আগে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার স্মরণ হিসাবে এ সমাবেশের আয়োজন করেছিলেন।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সাম্প্রতিক উত্তেজনা পূর্ণ ও উচ্ছৃঙ্খল পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে কক্সবাজারের আরআরআরসি ও উখিয়ার ৭টি ক্যাম্পের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বা সিআইসিকে প্রত্যাহার করে নেয়ার খবর পাওয়া গেছে। ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাদের মহা সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া ৫টি ক্যাম্পের ইনচার্জের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও উপ-সচিব শামীমুল হক পাভেলসহ অন্যদের প্রত্যাহরের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ জন প্রশাসন মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত সচিব ও শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম, উপ-সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা শামীমুল হক পাভেল, উপ-সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা আবদুল ওয়াহাব রাশেদ, সিনিয়র সহকারী সচিব জাহাঙ্গীর আলমের পৃথক বদলি আদেশ জারি করে।

শামীমুল হক পাভেল ছিলেন উখিয়ার কুতুপালং মেগা ক্যাম্প-১ ই, ১- ডাব্লু, ৩ ও ৪ নং এবং বর্ধিত-৪ নং সহ ৫ টি ক্যাম্পের ‘ক্যাম্প ইনচার্জ’ (সিআইসি) বা প্রধান ছিলেন। তাৎক্ষণিকভাবে তার বদলি আদেশ কার্যকর হয়ে তিনি উপ-পরিচালক হিসাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি প্রকল্পে যোগ দেবেন। পাভেল মিয়ানমার থেকে আগমন শুরু হওয়ার ঠিক এক মাস পরে, অক্টোবর ২০১৭ সালে সিআইসি হিসেব প্রেষণে যোগদান করেছিলেন।

অন্য আদেশে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রেষণ-১ অধিশাখার উপ-সচিব মুহাম্মদ আবদুল লতিফ স্বাক্ষরিত পত্রে এ তথ্য জানা যায়। অন্য আদেশে উখিয়ার -১৪ ও ১৫ নং ক্যাম্পের সিআইসি উপসচিব আবদুল ওয়াহাব রাশেদ ও সহকারী সিআইসি, সিনিয়র সহকারী সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম কে তাৎক্ষণিক বদলি করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।

২২ শে আগস্ট, উখিয়া ও টেকনাফ ভিত্তিক আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) এর চেয়ারম্যান মহিব উল্লাহ ২৫ আগস্ট শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে পাভেলের কাছে একটি লিখিত আবেদন জমা দিয়েছিলেন। উক্ত আবেদনে তিনি ৫ লক্ষ রোহিঙ্গার জমায়েত ও সমাবেশের আয়োজন করেছিল।

কিন্তু, শিবিরের অভ্যন্তরে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের পরে, বাংলাদেশি গণমাধ্যমের একটি বড় অংশ কিভাবে এই অর্থায়ন করা হয়েছিল এবং কিভাবে রোহিঙ্গা এটি পরিচালনা করতে পেরেছে, এর পিছনের ইন্ধন দাতাদের নিয়ে নানা প্রশ্ন ও বির্তক শুরু হয়। রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তার বদলিতে স্থানীয় লোকজন স্বস্তি প্রকাশ করেন। তবে সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা এ খবরে তেমন খুশি হতে পারেনি বলে জানা গেছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন