parbattanews

আরো ৩৭ বাংলাদেশীকে হস্তান্তর করল মিয়ানমার

Coxs Myanmar update copy
স্টাফ রিপোর্টার:
মিয়ানমারের জলসীমা থেকে উদ্ধার হওয়া অভিবাসী প্রত্যাশীদের মধ্যে শনাক্ত আরো ৩৭ বাংলাদেশীকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেছে মিয়ানমার ইমিগ্রেশন বিভাগ।

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ঘুমধুম জিরো পয়েন্টে পতাকা বৈঠক শেষ এদেরকে হস্তান্তর করা হয়। দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর বিজিবির কক্সবাজার সেক্টরের কমান্ডার এমএম আনিসুর রহমানের কাছে ৩৭ বাংলাদেশী কে হস্তান্তর করেন মিয়ানমার ইমিগ্রেশন বিভাগের সহকারী পরিচালক চ নাইং।

বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সেতুতে এসব বাংলাদেশিকে বুঝে নেয়ার পর সাংবাদিকদের বিজিবির কক্সবাজার সেক্টর কমান্ডার এম এম আনিসুর রহমান জানান, প্রথম দফায় ১৫০ জন কে ফেরত আনার পর দ্বিতীয় দফায় শুক্রবার আরো ৩৭ বাংলাদেশীকে ফেরত আনা হয়েছে। এদেরকে যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে মিয়ানমার থেকে ফেরত আনা হয়।

তিনি বলেন, গত বুধবার টেকনাফের নাফনদীর জাদিমুরা পয়েন্ট সীমান্তে বিজিবি-বিজিপির মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে গোলাগুলির ঘটনায় ধরে নিয়ে যাওয়া বিজিবি সদস্য নায়েক রাজ্জাকের বিষয়টি নিয়ে পতাকা বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। পরবর্তীতে আরো একটি পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিজিবি সদস্য নায়েক রাজ্জাককে ফেরত দিতে রাজি হয়েছে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

অপরদিকে মিয়ানমার ইমিগ্রেশন বিভাগের সহকারী পরিচালক চ নাইং বলেন, বাংলাদেশী হিসেবে শনাক্তদের ফেরত আনায় আমরা সন্তুষ্ট। এর মাধ্যমে দু’দেশের সু-সম্পর্ক বজায় রাখতে পারষ্পরিক যোগাযোগ আরো সুদৃঢ় করতে হবে। এ সু-সম্পর্কের মাধ্যমে সীমান্তে শান্তি বিরাজ করবে। এসময় তিনি সবাইকে রমজানের শুভেচ্ছা জানান।

এর আগে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলাদেশের সীমান্তের ঘুমধুম বিপরীতে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের ১০ সদস্যের নেতৃত্ব দেন বিজিবি ১৭ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর ইমরান উল্লাহ সরকার। তার সাথে প্রতিনিধি দলে পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজিবি ১৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল খন্দকার সাইফুল আলম, বিজিবি কক্সবাজার সেক্টরের অতিরিক্ত পরিচালক মেজর মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, মেজর মাহবুব সাবের সহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও ইমিগ্রেশনের প্রতিনিধিরা। মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ইমিগ্রেশন বিভাগের সহকারী পরিচালক চ নাইং। এসময় তার সাথে পর্যবেক্ষক হিসেবে ছিলেন মিয়ানমারের ১নং বর্ডার গার্ড পুলিশের কমান্ডিং অফিসার লেঃ কর্ণেল ক্যাই তুই জা সহ স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধিরা।

বিজিবি ১৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল খন্দকার স্ইাফুল আলম জানান, গত ৮ জুন পতাকা বৈঠকের মাধ্যমের ১৫০ জনকে বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়। একই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্বে প্রত্যাবাসনের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মত যাচাই করে শনাক্ত আরো ৩৭ বাংলাদেশীকে শুক্রবার ফেরত আনা হয়েছে। পরে তাদেরকে কক্সবাজার জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে আইনগত প্রক্রিয়ার জন্য হস্তান্তর করা হয়।

তিনি জানান, শনাক্ত হওয়া ৩৭ জন বাংলাদেশীর মধ্যে রয়েছে সিরাজগঞ্জের ৫, মাদারীপুর ১, সুনামগঞ্জ ৪, কিশোরগঞ্জ ৮, হবিগঞ্জ ১১, জামালপুর ১ ও বগুড়ার ৭ জন।

গত ২১ মে মিয়ানমারের জলসীমা থেকে সাগরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ২০৮ জন অভিবাসী প্রত্যাশীদের মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে বাংলাদেশী হিসেবে শনাক্ত ১৫০ জনকে ৮ জুন ফেরত আনা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া অপর ৫৮ জনের মধ্যেও ৩৭ জনকে বাংলাদেশী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এ বিষয়টি মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী মঙ্গলবার এক চিঠির মাধ্যমে অবগত করেছে।

এছাড়া গত ২৯ মে মিয়ানমারের জলসীমা থেকে দেশটির নৌ-বাহিনী আরো ৭২৭ জন অভিবাসী প্রত্যাশীদের উদ্ধার করে। এদের অধিকাংশই বাংলাদেশী ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক বলে খবর প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম।

Exit mobile version