আলীকদমের পুরাকীর্তি : কিংবদন্তি আলীর সুড়ঙ্গ

10893602_796069263796926_525420911_n

মমতাজ উদ্দিন আহমদ, আলীকদম :

পার্বত্য আলীকদম উপজেলার প্রাচীন নিদর্শন ও অন্যতম পুরাকীর্তি হল ‘আলীর সুড়ঙ্গ’। রহস্যময় এ সুড়ঙ্গকে ঘিরে নানা কিংবদন্তি ও রূপকথা প্রচলিত আছে। স্থানীয়দের নিকট এটি ‘আলীর সুরঙ্গ’ বা ‘আলীর সুরম’ নামে সমধিক পরিচিত। উপজেলার সরকারী পরিসংখ্যান অফিস আলীর সুড়ঙ্গকে ‘ঐতিহাসিক স্থান’ মর্যাদা দিয়ে নথিভূক্ত করেছে। নানা উপকথা ও রূপকাহিনীর ভিড়ে ইতিহাসের সঠিক তথ্য-উপাত্ত খুঁজে পাওয়া না গেলেও এই কিংবদন্তি ‘আলীর সুড়ঙ্গ’ অন্যতম পুরাকীর্তি হিসাবেই এ উপজেলায় পরিগণিত।

আলীকদম উপজেলা সদর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণ দিকের পাহাড়ের নাম ‘আলীর পাহাড়’। এই আলীর পাহাড়েই রহস্যজনক ৪টি সুড়ঙ্গের অবস্থান। এসব সুড়ঙ্গ নিয়ে প্রচলিত আছে নানা রূপকথা ও ভৌতিক কল্পকাহিনী। একই সাথে আছে সত্য কাহিনীও। এ সুড়ঙ্গ দেখতে প্রতিবছর ভিড় করেন দেশের নানা প্রান্তের শত শত পর্যটক ও কৌতুহলি লোকজন। বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির বদৌলতে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে আলীর সুড়ঙ্গ অভিযানের নানা কাহিনী ও চিত্র।

বর্তমানে সুড়ঙ্গগুলো বাদুড় প্রজাতির প্রমোদ নীড়। সুড়ঙ্গে যাতায়াতের রাস্তাটি সংকীর্ণ গিরি পথ। শুষ্ক মৌসুমে অসংখ্য দর্শনার্থীরা সুড়ঙ্গ দেখতে যান। এর সংস্কার ও উন্নয়নে কোন মহলই অদ্যাবধি উদ্যোগি হয়নি। ফলে সুড়ঙ্গের গিরিপথ দুর্গম ও বন্ধুর। ইতোপূর্বে অসংখ্য পর্যটকের পাশাপাশি সরকারী বেসরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীগণও সুড়ঙ্গ পরিদর্শন করেছেন।

চীনের পরিভ্রাজক হিওয়েন সাং তার এক গবেষণায় বলেছেন যে, ‘নদী নাব্য জলাভূমির এ অঞ্চলে প্রাকৃতিক নিদর্শনসমুহ অতি অল্প সময়েই হারিয়ে যায়’। চীনের পরিভ্রাজকের বাণীটি আলীর সুড়ঙ্গের বেলায় দৃষ্টান্তের ইঙ্গিত দেয়। প্রাচীন আমলের নিদর্শন আলীর সুড়ঙ্গও হয়ত রক্ষণাবেক্ষণ ও সুষ্ঠু তদারকির অভাবে এক সময় কালের গর্ভে হারিয়ে গিয়ে শুধু ইতিহাস হয়ে থাকবে এই আশংকা এলাকাবাসীর।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন