আলীকদমে সিএইচটি সম্প্রীতি জোটের সংবাদ সম্মেলন


পার্বত্য চট্টগ্রামে গুম, খুন ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং আঞ্চলিক সংগঠন গুলোর দেশবিরোধী অপপ্রচার বন্ধের দাবি জানিয়ে বান্দরবানের আলীকদমে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর ) বিকাল ৩ঘটিকার সময় আলীকদম বাজার ব্যবসায়ী সমিতির হলরুমে সিএইচটি সম্প্রীতি জোটের আয়োজনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার থোয়াই চিং মং চাক বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং দুর্গম এলাকার মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। পাহাড়ে শান্তি বিনষ্টকারী গোষ্ঠী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে উন্নয়ন ও সম্প্রীতি বাধাগ্রস্ত হবে।
সংগঠনের মুখপাত্র পাইশিখই মার্মা তার বক্তব্যে বলেন, আঞ্চলিক কিছু সংগঠন পরিকল্পিতভাবে দেশবিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে,যা জাতীয় নিরাপত্তা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য হুমকি স্বরূপ। এসব অপতৎপরতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রকে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে আলীকদম উপজেলা
প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত থেকে সিএইচটি সম্প্রীতি জোটের দাবির প্রতি একমত পোষণ করেন এবং পাহাড়ে শান্তি ও সাংবাদিকদের নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে সিএইচটি সম্প্রীতি জোট পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি ও দুর্গম এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কয়েকটি বিশেষ দাবি তুলে ধরে। দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—দুর্গম এলাকায় হাসপাতালবিহীন অঞ্চলে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন ও মোবাইল মেডিকেল টিম চালু করা, পাহাড়ি মা ও শিশুদের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, দুর্গম পাড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও স্থানীয় ভাষায় শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা, মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক হোস্টেল সুবিধা বৃদ্ধি করা। এছাড়া সুপেয় পানির সংকট নিরসনে রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং ও গভীর নলকূপ স্থাপন, দুর্গম এলাকার সঙ্গে উপজেলা ও জেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ উন্নয়ন, সৌরবিদ্যুৎ ও নিরবচ্ছিন্ন মোবাইল নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে জুম চাষিদের অধিকার রক্ষা, ভূমি সমস্যার ন্যায়সঙ্গত সমাধান এবং স্থানীয়দের জন্য স্থায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, পার্বত্য অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকাণ্ড দমনে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি সংবিধানে সকল জাতিগোষ্ঠীর যথাযথ স্বীকৃতি ও রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে পার্বত্য অঞ্চলের সংসদীয় আসন ৩ থেকে ৯-এ উন্নীত করার দাবি জানানো হয়। আলীকদম উপজেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলনটি সমাপ্ত হয়।

















