আলীকদম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট

fec-image

বান্দরবান আলীকদম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীর জন্য ১২টি পদের বিপরীতে ৩ জন শিক্ষক রয়েছেন। ফলে ১২টি পদের বিপরীতেশিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে ৯টি। শিক্ষক সংকট নিরসনে ২ জন খন্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে চলছে পাঠদান।

শিক্ষকের দাবীতে মানববন্ধন করেছে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা পরিচালক বরাবর স্মারকলিপিও পাঠায় শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়টির দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. রিদুয়ানুল ইসলাম জানায়, ‘আমাদের বিদ্যালয় থেকে বাংলা, বিজ্ঞান ও গণিত শিক্ষককে অন্যত্র বদলী করা হলেও নতুন শিক্ষক পদায়ন করা হয়নি। বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক না থাকায় আমরা শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।’

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘আলীকদম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শূণ্য পদে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, জীববিজ্ঞান, ব্যবসায়শিক্ষা, সামাজিকবিজ্ঞান, কৃষিশিক্ষা ও ধর্মীয় শিক্ষক পদায়ন না করলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা অন্ধকারে তলিয়ে যাবে।’

এদিকে, ‘জরুরী ভিত্তিতে শূন্যপদে বিষয় ভিত্তিক শিক্ষকপদায়নের ব্যবস্থা গ্রহন বিষয়ে মহাপরিচালকের কাছে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পত্র দিয়েছেন বিদায়ী প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইয়াহিয়া। পত্রে তিনি বলেন, আলীকদম উপজেলার একমাত্র সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আলীকদ মসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক স্বল্পতায় জর্জরিত। বিদ্যালয়ে ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীর জন্য ১২টি পদের বিপরীতে ৪ জন শিক্ষক আছেন। ফলে ১২টি পদেরবিপরীতেশিক্ষক পদ শূন্য থাকবে ৯টি।

প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইয়াহিয়া বলেন, বাংলা, ইংরেজী, গণিত, জীববিজ্ঞান, ধর্মীয় বিষয়, ব্যবসায় শিক্ষা ও কৃষি শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের শিক্ষক পদ শূন্য। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের শিক্ষক পদায়নের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। কিন্তু গত ৩১ জানুয়ারি সারাদেশে পদায়নকৃত ২০৬৫ জন শিক্ষক হতে এ বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষকও পদায়ন করা হয়নি। ফলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে শিক্ষক বিহীন এ সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে শঙ্কিত।

গত রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) উপজেলা পরিষদ সড়কে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের দাবী ও প্রধান শিক্ষকের পত্রে একই হতাশার চিত্রফুটে উঠেছে। বিদায়ী প্রধান শিক্ষক নিজেও বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক নিয়োগের দাবীতে দীর্ঘদিন ধরে আন্তরিক ও সোচ্চার ভূমিকা পালনকরছেন।

শিক্ষার্থীরা জানায়, আলীকদম শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া জনপদ। অবহেলিত এ পাহাড়ি অঞ্চলের একমাত্র সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের বিদ্যালয়টি। জরুরী ভিত্তিতে এ বিদ্যালয়ের শূণ্য পদে বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক পদায়ন করার দাবী জানায় শিক্ষার্থীরা।

মহাপরিচালক বরাবর প্রেরণ করা পত্রে প্রধান শিক্ষক দাবী করেন, শিক্ষক স্বল্পতাজনিত অনিশ্চয়তার কারণে মেধাবী ও স্বচ্ছল শিক্ষার্থীরা অন্যত্র চলে যায়। তারপরও অনেক দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থী থাকলেও প্রয়োজনীয় শিক্ষকের অভাবে তাদের মেধার অপমৃত্যু ঘটছে। স্বল্পসংখ্যক শিক্ষক অতিরিক্ত চাপ নিয়ে এসএসসি ও জেএসসিতে পাশের হার বাড়িয়েছেন বটে। কিন্তু সংখ্যাগত মানের উন্নতি হলেও গুণগত মানে রউন্নয়ন সম্ভব হচ্ছেনা।’ তিনি পত্রে জরুরী ভিত্তিতে বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের দাবী করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন