আ’লীগকে যদি নিশ্চিহ্ন করে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করবে কে: দীপংকর তালুকদার
রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:
শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করবে আওয়ামী লীগ সরকার। আর আ’লীগকে যদি নিশ্চিহ্ন করে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করবে কে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। তাই ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বিকেলে পাহাড়ি সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি উপলক্ষে রাঙ্গামাটিতে জেলা পরিষদ এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের উদ্যোগে চার দিনব্যাপী ‘বিজু সাংগ্রাই বৈসুক বিষু মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দীপংকর তালুকদার এমপি এসব কথা বলেন।
এসময় আলোচনা সভায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, ৩০৫ পদাতিক রাঙ্গামাটি রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রিয়াদ মেহমুদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কেএম শফি কামাল ও জেলা পরিষদের সদস্য শান্তনা চাকমা, রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ইন্সটিটিউটের পরিচালক রুনেল চাকমা প্রমুখ।
দীপংকর তালুকদার বলেন, ১৮ মার্চ উপজেলা নির্বাচন শেষে নির্বাচনের সাথে জড়িত নিরিহ মানুষদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো। টিভির টকশোতে, তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা বলছেন, শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় এ হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে কোন সর্ম্পক নেই শান্তিচুক্তির। গত ১৯ মার্চ বিলাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুরেশ কান্তি তঞ্চঙ্গ্যাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই সমস্ত হত্যাকাণ্ড এলাকার মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করা জন্য করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা লক্ষ্য করি যখনই একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়, যখনই এখানে পর্যটকরা আসতে শুরু করে, যখনই এখানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পায় তখই এই ধরণের একটি ইস্যু নিয়ে জনজীবনে অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়। এই সমস্ত অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের দাঁড়াতে হবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সক্রিয়া জাতি, সংস্কৃতি এবং আমাদের ঐতিহ্য রক্ষা করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
এদিকে চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠান ঘিরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ইন্সটিটিউট প্রাঙ্গণে বসানো হয়েছে মেলা। মেলায় বসানো হয়েছে পাহাড়িদের নিজস্ব সংস্কৃতির পোশাক, অলঙ্কার, খাবারসহ বিভিন্ন ব্যবহার্য্য সামগ্রির প্রদর্শনী ও বিক্রয় স্টল।
এ ছাড়া প্রতিদিন সন্ধ্যায় পরিবেশিত হবে মঞ্চ নাটক ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মেলা শেষ হবে শুক্রবার। গতবার পাহাড়িদের সব জাতিগোষ্ঠী অনুষ্ঠানে অংশ নিলেও এবার বেশিরভাগ অনুপস্থিত। অনুপস্থিতির মূল কারণ পাহাড়ের চলমান অস্থিতিশীলতা বলে জানা গেছে।
এরপর ৯ এপ্রিল শুরু হবে রাঙ্গামাটি বিজু, সাংগ্রাইং, বৈসুক, বিষু, বিহু, চাংক্রান-২০১৯ উদযাপন কমিটির তিন দিনের বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা। উদ্বোধনীর দিন শহরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ১০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা এবং ১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে আনুষ্ঠানিক ফুল ভাসানো।
প্রতি বছর চৈত্রসংক্রান্তিতে বাংলাবর্ষ বিদায় এবং বরণ উপলক্ষে উৎসবের আয়োজন করে পাহাড়ি জনগণ। পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব এটি। তিন দিনব্যাপী উৎসবটি পালিত হয় ২৯-৩০ চৈত্র ও পহেলা বৈশাখ।