আলুটিলা পর্যটন পার্কের এম্ফিথিয়েটারে পর্যটকদের জন্য চাকমা গীতি- নৃত্য-নাট্য রাধামন-ধনপুদির প্রথম বানিজ্যিক শো উপলক্ষে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) বিকালে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলুটিলা পর্যটন পার্কে অ্যাম্ফিথিয়েটারে এ সংবাদ সম্মেলন ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিউটের শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোরম গীতি-নৃত্য-নাট্য অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন খাগড়াছড়ি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিউটের উপপরিচালক জিতেন চাকমা। এছাড়াও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, প্রাচীন গ্রীসে অ্যাম্ফিথিয়েটার ব্যবহৃত হতো নাটকের মত সাংস্কৃতিক পরিবেশনার জন্য। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন কর্তৃক পরিচালিত আলুটিলা পর্যটন পার্কের নন্দনকানন সৃষ্টির সময়ে পাহাড়ের প্রাকৃতিক একটি কার্ভ দেখে অ্যাম্ফিথিয়েটার নির্মাণের চিন্তা আসে। সেই বিশ্ব ঐতিহ্যের অনুরূপ ছোঁয়া পেতে আলুটিলা পর্যটন পার্কে একটি পাহাড়ের খাঁজে পাহাড়ের প্রাকৃতিক বক্রতার সাথে মিল রেখে কোনোরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিনষ্ট না করে গ্রীক স্থাপনার আদলে একটি অ্যাম্ফিথিয়েটার নির্মাণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নির্মিত ১০০০ আসন বিশিষ্ট, এটি বাংলাদেশে প্রথম গ্রীক স্থাপত্যের আদলে নির্মিত অ্যাম্ফিথিয়েটার। অ্যাম্ফিথিয়েটার এর নীচতলায় ২৫০ বর্গফুট আয়তনের একটি মাল্টিপারপাস কক্ষ আছে যেটি মূলত শিল্পিদের গ্রিনরুম হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
আরও জানা যায়, কোন বিশেষ অঞ্চলের বৈচিত্রময় সংস্কৃতির বিকাশের লক্ষ্যে পর্যটন স্পটে অ্যাম্ফিথিয়েটারের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মঞ্চায়নের এটিই প্রথম উদ্যোগ। নি:সন্দেহে এ অঞ্চলের তথা বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে এটি নতুন মাত্রা যোগ করবে। তাছাড়া, সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে পর্যটকদের জন্য কোন স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন বাংলাদেশে প্রথম যা দেশের পর্যটন শিল্পে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে।
খাগড়াছড়িতে বেড়াতে আসা অসংখ্য দেশি-বিদেশি পর্যটক এই অ্যাম্ফিথিয়েটারের মঞ্চে পাহাড়ে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য মন্ডিত সাংস্কৃতিক চর্চা উপভোগ করবে। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের সাথে সবার পরিচয় হবে। ফলে তাদের মাঝে সাংস্কৃতিক চর্চা বৃদ্ধি পাবে। সমতল থেকে আসা পর্যটক পাহাড়ের বৈচিত্রময় ও নান্দনিক এই সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হতে পারবে। এর ফলে সমতল ও পাহাড়ের মধ্যে এক অদৃশ্য সেতুবন্ধন রচিত হবে। পাহাড়ে পর্যটন শিল্পের আকর্ষণ বৃদ্ধি পাবে এবং পর্যটনের বিকাশ হবে। খাগড়াছড়ির অর্থনীতিতে অর্থের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে, দরিদ্রতা হ্রাস পাবে এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।