আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে পেকুয়ার উপকূলের মানুষ

fec-image

ঘূর্ণিঝড় মোখা কক্সবাজারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১০নং বিপদ সংকেত জারির পর থেকে নিরাপদ আশ্রয় নিতে আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছেন পেকুয়ার উপকূলের মানুষ।

শনিবার (১৩ মে) সকালে উজানটিয়া এলাকার বেড়িবাঁধ লাগোয়া মালেক পাড়ায় সরেজমিনে দেখা যায় শতাধিক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। তারা তাদের সাথে গবাদিপশু ও তাদের প্রয়োজনীয় মালামাল নিয়ে এসেছেন। একইভাবে রাজাখালী মাতবর পাড়া ও মগনামা শরতঘোনা এলাকায় গিয়ে দেখা যায় অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।

তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা ৮নং মহা বিপদ সংকেত জারির পর থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছেন।

তাদের মধ্যে মালেক পাড়ার বাসিন্দা রহিমা খাতুন বলেন, আমার ঘর ভাঙ্গাচুরা ঘূর্ণিঝড় আসলে মনে হয় কিছুই থাকবেনা তাই আমি বাচ্চাদের নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাতে ও সকালে মালেক পাড়ায় এসে আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের সাথে কথা বলেছেন এবং সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় খাবার সরবরাহ করবেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে আসন্ন ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে উপজেলা প্রশাসন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুকিপূর্ণ এলাকায় সচেতনতামুলক মাইকিং করা হচ্ছে। খোলা হয়েছে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোলরুম, প্রস্তুত রাখা হয়েছে মেডিকেল টিম ও ১২১টি আশ্রয়কেন্দ্র। এরই মধ্যে ৮৬টি চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো। গ্রাম পুলিশ, থানা পুলিশ, সিপিপিআই সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও সেনাবাহিনীর একটি টিমও পেকুয়ায় কাজ করছে।

মগনামা, উজানটিয়া, রাজাখালী লঞ্চ ঘাট ঘুরে দেখা যায়, সারি সারি ট্রলার, ফিশিং বোট নোঙর করে আছে ঘাটে। তারা তাদের জিনিসপত্র নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে।

দুর্যোগ মোকাবেলায় সিপিপির প্রায় ৯০০ স্বেচ্ছাসেবক মাঠে সচেতনতামূলক কাজ করছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা বলেন, আমরা চেষ্টা করছি মানুষকে ব্যাপকভাবে সচেতন করতে, শুধু তাই নয় উপজেলা প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।

আমি ইতোমধ্যেই প্রায় অনেক আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি, যারা আশ্রয় নিয়েছে তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছি। ঝুকিপূর্ণ বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে মাইকিং অব্যাহত আছে।

ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি সিপিপি উপজেলা টিম লিডার আনোয়ার আজিম বাবুল চৌধুরী বলেন, সিপিপির ৯০০ স্বেচ্ছাসেবক মাঠে এখন কাজ করছেন, মানুষকে নিরাপদ স্থানে নিতে সহযোগিতা করছেন। আমরা চেষ্টা করছি যেন ঘূর্ণিঝড়ে জানমালের ক্ষতি কমিয়ে আনতে পারি। সেজন্য সকলের আন্তরিক সহযোগিতা ও সচেতনতার বিকল্প নাই বলে জানান তিনি।

এই ছাড়াও উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে কাজ করছেন ইউপি চেয়ারম্যানগণ । মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুস চৌধুরী জানান, মগনামা উপকুলীয় ইউনিয়ন আমরা ঝুকিপূর্ণ বাসিন্দাদের সরিয়ে নিচ্ছি। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি, যেন মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যায়। গ্রাম পুলিশ ও সিপিপির সহায়তায় আমরা সচেতন করার কাজ করছি, মানুষকে যেন আতঙ্কিত না হয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আশ্রয়কেন্দ্র, পেকুয়া, মানুষ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন