ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন: রাজস্থলীতে প্রার্থী নিয়ে আলোচনা সরগরম

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন
মো. আজগর আলী খান, রাজস্থলীঃ
বর্তমান সরকার চলতি মাসে ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার অধ্যাদেশ জারির পর থেকে রাঙামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের মাঝে আলোচনার ঝড় উঠেছে।
নির্বাচনের কি ধরণ হতে পারে নির্দিষ্ট কোন রোডম্যাপ জানা না থাকলেও রাজস্থলী উপজেলার বিভিন্ন দলের সমর্থিত বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু হঠাৎ করেই স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের অধ্যাদেশ জারির পর অনেকেই হতাশায় ভুগছেন।
জানা গেছে, এই উপজেলায় আগামী বৎসরের মার্চ-এর দিকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বহুমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। একে অপরের সাথে মিলে মিশে একসাথে বসে চা কিংবা নাস্তা করছেন এক টেবিলে বসে। কিন্তু রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ক্ষমতার লড়াইয়ের ক্ষেত্রে কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। এরা হলেন, আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি(জেএসএস)।
বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেএসএস এর সমর্থিত প্রার্থী উষাতন তালুকদার ২৯৯ আসনের সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর এই উপজেলায় ব্যাপক আকারে জেএসএসএর জনসর্মথন লাভ করেছে। সামাজিক সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সম্ভাব্য প্রার্থীরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে যাচ্ছে।
এদিকে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলেও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাঙ্গামাটির আসন হারিয়ে ফেলায় এলাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড সীমিত হয়ে পড়েছে। এছাড়াও আওয়ামীলীগ দলের আন্তদলীয় কোন্দল ব্যাপকহারে বৃদ্ধি হওয়ায় দলের মধ্যে সামান্য ত্রুটি রয়েছে। বিগত ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রয়াত দলের সিনিয়র সভাপতি মংক্য মারমা কাউন্সিলের মধ্যে পরাজিত হওয়ার পর তার নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তের গুলিতে তার মৃত্যু হয়।  অপরদিকে পরাজিত সাধারণ সম্পাদক উত্থান মারমা আওয়ামী লীগ ত্যাগ করেন।
বিশেষ সুত্রে জানা যায়, গত জেলা পরিষদ পুর্ণ গঠনে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের রাজস্থলী উপজেলা থেকে মারমা কোটায় সদস্য পদে না রাখার কারণে এলাকার ব্যর্থতা নিয়ে ভোটারদের একাংশে ও দলীয় জুনিয়র নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে আওয়ামীলীগ দলের সংরক্ষিত ভোট ব্যাংক এ এলাকায় প্রচুর রয়েছে। তাছাড়াও ব্যাপক আকারে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রাস্তাঘাট নির্মাণসহ উন্নয়ণের ইতিবাচক দিক রয়েছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, এ উপজেলায় সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের রবার্ট ত্রিপুরা (আওয়ামীলীগ সর্মথিত প্রার্থী) সদ্য জেএসএস যোগদানকারী সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত প্রসাদ তঞ্চঙ্গ্যা ও সতন্ত্র হিসেবে বিরচন্দ্র ত্রিপুরার নাম শোনা যাচ্ছে।
অপরদিকে ২নং গাইন্দ্যা ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান উবাচ মারমা, জেএসএস সমর্থিত উত্থান মারমা ও বিএনপি সমর্থিত সাবেক সাধারণ সম্পাদক চথোয়াইপ্রু মারমা। ৩নং বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, আওয়ামীলীগ সমর্থিত বর্তমান সদস্য নিওমং মারমা, বিএনপি সমর্থিত বর্তমান সদস্য ডালিম বড়ুয়া, আওয়ামীলীগের অন্যতম নেতা পুলক চৌধুরী ও বাঙ্গালহালিয়া কলেজের প্রভাষক অনুমং মারমা। এরাই নিজ নিজ প্রতীক নিয়ে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবেন বলে জানা গেছে।
তবে ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান দীপময় তালুকদার নির্বাচন করবেন না বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন