parbattanews

ইউ কে চিং বীর বিক্রমের অন্ত্যষ্ঠিক্রিয়া সম্পন্ন

SAMSUNG CAMERA PICTURES

স্টাফ রিপোর্টার, বান্দরবান :

তিন পার্বত্য জেলার পাহাড়ীদের একমাত্র মহান মুক্তিযোদ্ধের খেতাব পাওয়া ইউ কে চিং বীর বিক্রমের অন্তষ্ঠিক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। রবিবার বিকালে পারিবারিক শ্মাশানে তাকে দাহ হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, বান্দরবান প্রেসক্লাব সভাপতি ও দৈনিক সচিত্র মৈত্রীর সম্পাদক অধ্যাপক মো. ওসমান গনি, রাজপুত্র চহ্লা প্রু জিমি, আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য কেএসমং, জেলা পরিষদ সদস্য ক্য সা প্রু, জেএসএস নেতা জলি মং, মুক্তিযোদ্ধা সেলিম আহমেদ চৌধুরীসহ বিজিবি সদস্য ও স্থানীয় গণ্যামান্য ব্যাক্তিবর্গরা। এছাড়াও স্থানীয় শত শত লোকজন ইউ কে চিং মারমার শেষ কৃত্য অনুষ্ঠানে অংশ নেয়।

গত বুধবার ব্রেইন স্ট্রোক করলে তাকে বান্দরবান সদর হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন। তার মৃত্যুতে বান্দরবানের সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে আসে।

গত শুক্রবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বীর বিক্রম ইউ কে চিং মারমা। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। তিনি দুই ছেলে ও এক কন্যা সন্তানসহ অনেক গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

চট্টগ্রাম মেডিকেল থেকে সকালে তার মৃতদেহ বান্দরবানের লাঙ্গীপাড়াস্থ নিজ বাসবভনে আনা হয়। শুক্রবার বিকাল ৩টায় লাঙ্গীপাড়া রেজিঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ের মাঠে বীর বিক্রম ইউ কে চিং মারমাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নকিব আহমেদ পিএসসি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, জেলা প্রশাসক কে.এম. তারিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য্যসহ মুক্তিযোদ্ধারা ও স্থানীয় গণ্যামান্য ব্যক্তিবর্গ।

জানা গেছে, বান্দরবান জেলার উজানীপাড়ায় ১৯৩৩ সালে এই বীরের জম্ম। তার বাবার নাম মৃত বাইশাউ মারমা। লেখাপড়া তেমন করতে পারেননি ইউকেচিং বীরবিক্রম। কিন্তু তার মধ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করার প্রত্যয় ছিল বাল্যকাল থেকেই। সেই লক্ষ্যে ১৯৫২সালে যোগ দেন পাকিস্তান রাইফেলস ব্যাটালিয়নে (ইপিআর)।

১৯৭১ সালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ৯মাস রণাঙ্গনে দেশমাতৃকার জন্য যুদ্ধ করেছেন। এই কাজের স্বীকৃতি হিসেবে সরকারিভাবে তাকে বীরবিক্রম খেতাবে ভূষিত করা হয়। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবান তিন পার্বত্য জেলার পাহাড়ীদের মধ্যে একমাত্র খেতাব অর্জনকারী ইউকেচিং। পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ১১টি পাহাড়ি সম্প্রদায়ের মধ্যে তিনি মারমা সম্প্রদায়ভুক্ত। তার সম্মানে বান্দরবান শহরে ইউ কে চিং সড়ক রয়েছে। এছাড়া শহরের কাছে নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রে একটি আবক্ষ ভাস্কর্য রয়েছে। ইউ কে চিং এর সম্মানে বান্দরবানে সম্প্রতি মেধা বৃত্তিও চালু করা হয়েছে।

Exit mobile version