parbattanews

ইচ্ছাশক্তি, ধৈর্য্য চেতনা যুব সমাজকে এগিয়ে নেয় : পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা

বান্দরবানে যুব সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা

পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী জুম সংস্কৃতি হারিয়ে ফেলছে। কিন্তু এখনো পুরোপুরি সমাজ ব্যবস্থা পরিবর্তন হয়নি। বর্তমান বৈশ্বিক যুগে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে মানুষের মাঝে। এই অবস্থায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন ও নারী শিশু নির্যাতন রোধে প্রথমে মাদক থেকে সরে আসতে হবে। কারণ মাদক নারী ও শিশু নির্যাতনের দিকে মানুষকে ধাবিত করে।

মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) সকালে বান্দরবান অরুণ সারকী টাউন হলে আয়োজিত বেসরকারি সেচ্ছাসেবী সংগঠন বিএনকেএস এর যুব সমাবেশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা।

তিনি আরো বলেন-ইচ্ছাশক্তি, ধৈর্য্য চেতনা যুব সমাজকে এগিয়ে নেয়। গ্রাম আদালতের মাধ্যমে বাঙালিদের সামাজিক পরিবর্তন এসেছে। ক্ষুদ্র নৃ গোষ্টী সম্প্রদায়ের আইনগুলোর বিষয়ে জেলা পরিষদ কাজ করছে। ইতিমধ্যে কিছু আইন সংশোধন হয়েছে। মারমা সমাজে প্রত্যেকটি গ্রামের জন্য লিখিত আইন থাকলে সঠিকভাবে বিচার করা সম্ভব হবে। আর এই প্রেক্ষাপটে মানুষকে সচেতন করার জন্য কাজ করায় বিএনকেএস’সহ সহযোগীদের সাধুবাদ জানান তিনি।

বিএনকেএস নির্বাহী পরিচালক হ্লা সিং নু’র সভাপতিত্বে যুব সমাবেশের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা সিভিল সার্জন অফিসার অংসুই প্রু মারমা, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারি জজ মোহাম্মদ আবুল মনসুর সিদ্দিকী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর, জেলা পরিষদ সদস্য ক্য সা প্রু, সিং ইয়ং ম্রো , মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান য়ই সা প্রু মারমা।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এর সহযোগিতায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিএনকেএস ১হাজার ৩৪৬জন নারী-শিশুর সাথে কথা বলে একটি গবেষণা চিত্র তুলে ধরেন। তাদের এই তথ্যমতে, চলতি বছরের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বান্দরবান জেলায় মোট ১১২জন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তারমধ্যে শারিরিক নির্যাতন ১৭জন, মানসিক নির্যাতন ১৯জন, অর্থনৈতিক নির্যাতন ৩৭জন, যৌন নির্যাতন ২জন এবং তালাকপ্রাপ্ত ৫জন, ধর্ষণের শিকার নারী ও শিশু ৮জন।

এছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা ১জন, ১২শিশু মানসিক নির্যাতন, বাল্য বিয়ে ৪, নির্যাতনের পর হত্যার শিকার হয়েছে ১শিশু ও ১নারী। এই সময়ে ৭জন নারী আত্মহত্যা করেছে, ৮০জন পারিবারিক নির্যাতনের
শিকার এবং অন্যান্য সহিংসতার শিকার হয়েছে ৩২জন শিশু ও নারী।

অনুষ্ঠানের ধারনাপত্রে আয়োজকরা জানান- নারী ও বালিকাদের প্রতি সহিংসতা কমিয়ে নারী ও পুরুষের সমান অধিকার বাড়ানো এবং নারীদের মানবাধিকার সংরক্ষণের লক্ষে তারা কাজ করছেন। এই প্রকল্পে মোট ৮শ কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী এবং নারী-পুরুষ নিয়ে জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে এগুচ্ছেন তারা।

স্বাগত বক্তব্যে প্রোগ্রাম ডিরেক্টর পেশল চাকমা বলেন- সাম্প্রতিক সময়ে নারী ও শিশুর প্রতি ক্রমবর্ধমান সহিংসতা রোধে এবং এসব কিছুকে রুখে দাড়িয়ে সুন্দও সুষ্ঠ ও নিরাপদ সমাজ গড়তে যুব সমাজকেই সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ যুব সমাজই পারে সকল অন্যায় অবিচার বলিষ্ট কন্ঠে না বলতে।

প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর উবানু মারমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনকেএস এর প্রোগ্রাম অফিসার মুমু রাখাইন ধারনাপত্র এবং চা উ চিং নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন।

Exit mobile version