parbattanews

ইজিপিপি প্রকল্পে পাল্টে যাচ্ছে মানিকছড়ির যোগাযোগ ব্যবস্থা

খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার অনুন্নত পাড়া বা গ্রামে বসবাসরত মানুষ পায়ে হেঁটে গ্রামীণ সড়কে উঠে বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে হাটবাজার বা উপজেলা সদরে আসা-যাওয়া করেন। কিন্তু কখনও ওঁরা স্বপ্নেও ভাবেনি বাড়ি বা ঘরের কাছাকাছি রাস্তা হবে, আর সেই রাস্তা দিয়ে অনায়াসে চলাচল করতে পারবে! অবশেষে গ্রামীণ মানুষের ভাগ্যের আমল পরিবর্তনে সরকার গ্রামের অতিদরিদ্রের কর্মসংস্থান কর্মসূচীর (ইজিপিপি)মাধ্যমে মানুষের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে উন্নয়নের ছোঁয়া।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস ও ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি), ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর তৃণমূলের (আন্তঃসড়ক ও গ্রামীণ) সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করছে। এর মধ্যে জনপদের একেবারে অনুন্নত এলাকায় কাবিখা, কাবিটা ও ৪০ দিনের প্রকল্পে অতিদরিদ্র নারী ও পুরুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো। আর প্রকল্প বাস্তবায়নে পাল্টে যেত জনপদের চিত্র।

এভাবেই প্রতিটি জনপদের গ্রামীণ সড়ক ব্যবস্থার আমল পরিবর্তনে ছোঁয়া লাগে। সম্প্রতি ওইসব প্রকল্পের আদলে শুরু হয়েছে গ্রামের অতিদরিদ্রের কর্মসংস্থানে কর্মসূচি( ইজিপিপি)। মূলত ৪০ দিনের প্রকল্পের আদলে এই কর্মসূচীতে এলাকার অতিদরিদ্ররা দৈনিক হাজিরা হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছে। উপজেলার চারটি ইউনিয়নে ২৩টি অনুন্নত গ্রামীণ রাস্তাকে জনচলাচল উপযোগী করতে ইজিপিপি প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর এতে ৫১১ জন অতিদরিদ্র নারী-পুরুষ শ্রমের বিনিময়ে আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। জনপ্রতি দৈনিক ৪০০ টাকা নিজস্ব মোবাইল একাউন্টে কয়েক ধাপে শ্রমিকেরা মজুরী পাবেন।

তিনটহরী ইউপির রাইগ্যাপাড়া-পূর্বতিনটহরী সড়কে গত বুধবার গিয়ে দেখা গেছে, এই অনুন্নত পাড়ার পায়ে হাটার সরু রাস্তাটি প্রশস্ত করণে মাটি কাটছে ১৬ জন নারী ও পুরুষ। এ সময় আনুমা মারমা বলেন, এই গ্রামের শতাধিক জনগোষ্ঠী পায়ে হেটে গ্রামীণ সড়কে গিয়ে মোটরসাইকেলে হাঁটবাজারে যাওয়া-আসা করতাম। এখন মাটির কাজ হয়ে গেলে বাড়িতেই গাড়ি আসবে! ছেলে-মেয়েরা অনায়াসে স্কুলে যেতে পারবে। এ সময় ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে কাজ তদারকি করতে দেখা গেছে। তিনি জানান, আমার এই ৬নং ওয়ার্ডের প্রত্যন্ত এলাকার পাড়া বা গ্রামে যাতায়াতের সরু রাস্তা এই প্রকল্পে জনচলাচল উপযোগী করা হবে।

ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ আজকের পত্রিকাকে জানান, গ্রামীণ সড়কের মধ্যে একেবারে মানুষের দৌড়গোড়ায় যাওয়ার রাস্তা-ঘাটেে উন্নয়নের ছোঁয়ার অংশ হিসেবে ইজিপিপি প্রকল্পে এই ইউপিতে প্রথম পর্যায়ে ৮টি প্রকল্প দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন বলেন, সরকার গ্রামীণ সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়নে পূর্বের ন্যায় এবারও অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থানে নতুন প্রকল্প ইজিপিপি নামে গ্রামীণ সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়ন ও কর্মহীনদের কর্মসংস্থানে সহায়তার জন্য এই ৪০ দিনের কর্মসূচি প্রথম পর্যায় অন্য নামে চালু করেছে। এতে সত্যিই পাল্টে যাবে গ্রামীণ জনপদের জীবনচিত্র। শ্রমিক জনপ্রতি প্রতিদিন ৪০০টাকা হারে সপ্তাহ/পক্ষকাল ও মাসিক কিস্তিতে নিজস্ব মোবাইল একাউন্টে পাবেন।

Exit mobile version