parbattanews

ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে সিমু মারমার সুখী সংসারের পথে যতবাধা

53369
নিজস্ব প্রতিনিধি:
প্রেম মানে না কোন বাধা। মানে না জাত কিংবা সংসারও! এই প্রেমের জন্য বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয় স্বজনের মায়া ছেড়ে নিজ ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করে এখন আলোচনায় রাঙামাটি জেলার কাউখালি উপজেলার পাহাড়ি কিশোরী সিমু মারমা (১৯)।

মেয়েটি বৌদ্ধ ধর্মের। আর ছেলেটি মুসলিম সম্প্রদায়ের। ২৫ বছরের যুবক ইলিয়াস। দুজনই একে অপরকে ভীষণ ভালোবাসেন। বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে চিরসুখী হতে চেয়েছিল দুজন। কিন্তু ভালোবাসার জন্য তাদেরকে এখনও মোকাবিলা করতে হচ্ছে সামাজিক প্রতিবন্ধকতা।

এক পরিবারের দায়ের করা মামলায় পুলিশ তাদের নিয়ে বিপাকে! সিমু আর ইলিয়াস দুজনেই থানায় বসে জানালেন কেউ কাউকে ছাড়া বাঁচবেন না। পৃথিবীতে জন্ম হয়েছে তাদের একে অপরের জন্য।

কিন্তু বিবাহের দুই মাস পর মারমা কিশোরীর পিতার করা মামলায় রাউজান থানা পুলিশ আটক করে কাউখালি থানা পুলিশের কাছে দু’জনকে সোপর্দ করে।

গত রোববার এ বিষয়ে সিমু ও ইলিয়াসের কাছে জানতে চাইলে তারা হাসিমাখা মুখে তুলে ধরেন প্রেমের বর্ণনা। জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালি উপজেলার হীরাগাজী এলাকার চাতিও মারমার কন্যা সিমু। আর প্রেমের টানে রাউজান উপজেলার ডাবুয়া ইউনিয়নের আরব নগর এলাকার মৃত হামদু মিয়ার পুত্র মো. ইলিয়াসের সঙ্গে পালিয়ে যান। পালিয়ে আসার পর মারমা যুবতী সিমু চলতি বছরের গত ৮ই জুন আদালতে উপস্থিত হয়ে পূর্বের ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। পরে তার নাম রাখেন জান্নাতুল ফেরদৌস। একই সময়ে মুসলিম নিয়ম অনুযায়ী দুজনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর থেকে ইলিয়াস তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসকে নিয়ে রাউজানের ডাবুয়া ইউনিয়নের আরব নগর এলাকায় বসবাস করে আসছিল।

ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী ইলিয়াসের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস তার শ্বশুরালয়ে হিজাব পরে চলাফেরা করতো বলে জানান এলাকার লোকজন। পালিয়ে আসার পর সিমুর পিতা চাতিও মারমা কাউখালি থানায় ২৯শে জুন নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ২০০৩ এর ৭/৩০ ধারায় মামলা দায়ের করেন।

কাউখালি থানার মামলা নং-১১। কাউখালি থানায় মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রাউজান থানায় আসলে মারমা যুবতী উদ্ধার ও অপহরণকারীকে গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা চালায় থানা পুলিশ। অবশেষে গত রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাউজান ফকিরহাট বাজারের ‘আলো শাড়ীজ’ নামের একটি বিপণি বিতানে শপিং করতে আসলে রাউজান থানার এস আই পরিতোষ দাশ তাদের দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। পরে স্বামী-স্ত্রী দুজনকে কাউখালি থানার এসআই বিপ্লবের কাছে সোপর্দ করেন।

সিমু মারমা বলেন, ইলিয়াস আমাকে অপহরণ করেনি। প্রেমের সম্পর্কের কারণে তার সঙ্গে পালিয়ে এসে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। একে অপরকে ভালোবেসে মরতে চাই। রাউজান থানায় পুলিশের হেফাজতে থাকাকালে জান্নাতুল ফেরদৌস বোরকা পরা অবস্থায় ছিলেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ইলিয়াস পেশায় একজন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক। আর সিমু রাউজান উপজেলার একটি বিউটি পার্লারে কাজ করতেন। একদিন পার্লারে গেলে প্রথম দেখাতেই সিমুকে ভালো লেগে যায় ইলিয়াসের।

Exit mobile version