কক্সবাজার প্রতিনিধি:
কক্সবাজার পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি ইয়াবা সেবী আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইয়াবার ভয়াল থাবায় দিন দিন তরুন প্রজম্ম অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছে। ফলে অভিভাবকরা তাদের উঠতি বয়সের সন্তানদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। ইয়াবা তৎপরতাব বৃদ্ধি পাওয়ায় আইন শৃঙ্খলারও চরম অবনতি ঘটছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কক্সবাজার পৌর শহরের চাউল বাজার, হোটেল মোটেল জোন এলাকা, টেকপাড়া, কালুরদোকান, বাসটার্মিনাল এলাকা, লিংকরোড, লাইট হাউজ, ঘোনারপাড়া, গোলদীঘিরপাড়, কুতুবদিয়াপাড়া, সমিতিপাড়া, লালদীঘিরপাড় ও শহরের অধিকাংশ আবাসিক হোটেলসহ বেশ কয়েকটি স্পট রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই সব স্থানে সেবন ও কেনাবেচা হয় বলে স্থানীয় লোকজন জানায়। ভয়াল ইয়াবায় আসক্ত হচ্ছে শিক্ষিত তরুন যুবক, ছাত্র, দিনমজুর, চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন। ইয়াবার টাকা জোগাড় করতে অনেকেই চুরি ছিনতাইয়ের মতো অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন।
সূত্র জানায়, ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকদের ম্যানেজ করে দীর্ঘ দিন ধরে এ ব্যবসা করে আসছে। প্রতিদিন শতশত তরুন যুবক ওই সব স্পটে এসে সেবনসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা।
সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন অলিগলিতে ফ্রি স্টাইলে চলছে ইয়াবা সেবন ও বিক্রি। এছাড়া যারা হোটেল মোটেল জোন ও আবাসিক হোটেলে ইয়াবা বিক্রি করে তারাই অধিকাংশ হোটেল বয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলাতলির এক ব্যক্তি জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে হোটেল মোটেল জোনের ব্যবসায়ীরা রুম বুকিং না দিয়ে বিশেষ টোকেনের মাধ্যমে এখন কটেজে ও আবাসিক হোটেলে ইয়াবা সেবন ও পাইকারী বিক্রি করছে।
তিনি আরও বলেন, কি করে বন্ধ হবে এই মরননেশা ইয়াবা কক্সবাজারের এমন কোন বাহিনী নেই যেখানে প্রতিদিন ওই প্রশাসনের লোকজন ইয়াবা সেবন করে না। আর প্রত্যেক মাসে মাসে মাসিক মাসোহারা তুলে নিয়ে যায়। যার কারণে আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে ইয়াবা সেবনকারী ও পাচারকারীর সংখ্যা। বর্তমানে কক্সবাজার শহরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন তা দেখেও না দেখার ভান করছেন। গড়ে উঠা স্পটগুলো থেকে তারা নিয়মিত মাসোহারা পায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
একটি সূত্র জানায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন নিয়মিত মাসোহারা না পেলে তারা ওইসব স্পটে অভিযান চালায়। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকদের ম্যানেজ করে সড়ক ও বিমান পথ দিয়ে লাখ লাখ টাকার ইয়াবা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে কক্সবাজার শহরের উঠতি বয়সের তরুন যুবক ও বিভিন্ন বয়সের মহিলারা এ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছেন বেশি। মাঝে মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন অভিযান চালিয়ে ইয়াবাসহ পাচারকারীকে আটক করলেও আইনের ফাঁক ফোকরে বের হয়ে পুনরায় এ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, মাদক নির্মূলে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যে কোন মূল্যে মাদক নির্মূল করা হবে। হোটেল মোটেল জোনে যে কটেজগুলোতে ইয়াবা সেবন ও বিক্রির অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে।