ঈদগাঁওয়ে করোনা ত্রাণকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী হামলা: মেম্বারসহ ডজানাধিক নারী-পুরুষ আহত

fec-image

কক্সবাজারের ঈদগাঁওয়ে করোনা কালীন ত্রাণ বিতরণকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী হামলায় মেম্বারসহ ডজনাধিক নারী পুরুষ আহত হয়েছে। আহতদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে একটি ষড়যন্ত্রকারী পক্ষ দিবালোকে সংঘটিত এ ঘটনাকে উল্টো সাম্প্রদায়িক হামলা হিসেবে রুপ দিতে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে হামলার শিকার লোকজন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড মেম্বার সাইফুল ইসলাম সম্প্রতি নিজস্ব তহবিল থেকে করোনাকালীন ত্রাণ বিতরণ করছিল। হিন্দু পাড়ায় এর দায়িত্ব দেয় শুকলাল নামের সনাতন ধর্মালম্বী এক হিন্দু যুবককে। তাকে বারবার ত্রাণ কাজে বাঁধা দেয় আরেক সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু যুবক ও মেম্বার সাইফুলের নির্বাচনী প্রতিপক্ষ সুমন ও তার লালিত সন্ত্রাসীরা।

সর্বশেষ রবিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে শুকলালকে সুমনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা বেদড়ক মারধর শুরু করে। এ সংবাদ পেয়ে মেম্বার সাইফুল ঘটনাস্থল পৌছলে তার উপরও হামলা করে।এসময় তাকে রক্ষায় স্বজনরা এগিয়ে আসলে নারী পুরুষ সকলকে হামলা করে। এতে অনেকেই আহত হয়।

পরে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং আহতদের হাসপাতালে প্রেরণের পরামর্শ দেয়। হামলার শিকার মেম্বার সাইফুল জানান, সে দুর্দশার কথা চিন্তা করে ওয়ার্ডের গরীব-দুস্থদের নিজস্ব তহবিল থেকে ত্রাণ সহায়তা দেন। হিন্দু পাড়ায় দায়িত্ব দেন হিন্দু যুবক শুকলালকে। কিন্তু শুরু থেকেই তার নির্বাচনী প্রতিপক্ষ সুমন কান্তি দে তাতে বাঁধা দিতে শুরু করে। অবশেষে ঘটনার দিন সকালে শুকলালের স্ত্রী তার স্বামীকে সুমনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা মারধর করে আটক করে রেখেছে জানালে সে ঘটনাস্থলে যায়।এতে সুমনের নেতৃত্বে বাবুল, টুইল্লা, প্রদীপসহ ১০/১৫ জনের সশস্ত্র সন্ত্রাসী তার উপরও উল্টো হামলা করে। এসংবাদ তার স্বজনরা জানলে নারী পুরুষ সকলে তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসে। এতে তাদের উপরও দফায় দফায় হামলা হয়। এতে ধারালো অস্ত্রে তার ভাগিনা ইমরান গুরুতর আহত হয়। এছাড়া তার বোন জুলেখাও গুরুতর আহত হয় এবং তার রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে বেশি। এছাড়া অপর আহতরা হল তার ভাই গোলাম কবির, ভাতিজা টিপু, ভাবি সাবেকুন্নাহারসহ আরও কয়েকজন।

তিনি আরও দাবি করেন, সুমন দে প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করেছেন এবং তা উদ্ধারের দাবি জানান। বর্তমানে তারা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, উল্টো এ সুমন কান্তি দে দিবালোকে সংঘটিত এ ঘটনাকে মুসলমান কতৃক হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা করেছে মর্মে অপ্রপ্রচার করে ষড়যন্ত্রকারীদের ইন্ধনে।

তিনি আরও জানান, স্থানীয় প্রশাসনের তড়িৎ হস্তক্ষেপ বড় ধরণের সাম্প্রদায়িক উস্কানি থেকে এলাকাবাসী রক্ষা পেয়েছে। তিনি জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান।

ঈদগাঁও থানা অফিসার ইনচার্জ আবদুল হালিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান, ঘটনাটি সাম্প্রদায়িক নয়। করোনার ত্রাণ বিতরণকে কেন্দ্র করে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে মেম্বারের এক আত্মীয় ধারালো অস্ত্রে গুরুতর আহত হয়েছে। উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনাটি সাম্প্রদায়িক হামলা নয় বলে নিশ্চিত হয়েছেন।

রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত কোন পক্ষ থানায় অভিযোগ বা এজাহার দেয়নি। তবে উভয় পক্ষের নেতৃস্থানীয় কিছু লোক মিমাংসার চেষ্টা করছে বলে জানান। হামলায় জড়িত বলে অভিযোগ উঠা, বাবুলের সাথে যোগাযোগ করা সে থানায় ব্যস্ত বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন