বর্ষায় ব্যাপক ভাঙ্গনের আশংকা

ঈদগাঁও নদীর উভয়কূল দখল করে বহুতল ভবনসহ দুই ডজনাধিক অবৈধ স্থাপনা

fec-image

কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ঈদগাঁও নদীর উভয়কূল অবৈধ ভাবে দখল করে বহুতল ভবনসহ ডজানাধিক অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছে চিহ্নিত দখলদার চক্র। ঈদগাঁও নদীর উপর অংশ থেকে মহাসড়কস্থ ঈদগাঁও ব্রীজ থেকে বাঁশঘাটা নদী অংশ পর্যন্ত ঈদগাঁও বাজার ও ইসলামাবাদ বাঁশঘাটা সড়কের উভয় নদীকূলের নদী শিকস্তি জমি দখল করে রাতারাতি ডজনাধিক বহুতল ভবন গড়ে তুলেছে এবং এখনো করে চলছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর উত্তর তীরে ঈদগাঁও বাজার ও দক্ষিন তীরে বাঁশঘাটা সড়কে নদীর উভয় তীর দখল করে তাতে গড়ে তুলেছে এবং তুলছে অর্ধডজন আবাসিক বহুতল ভবন এবং ডজনাধিক ইটের ও টিনের তৈরি দোকান ঘর। এসব অবৈধ স্থাপনা ভাড়া দিয়ে দখলদার চক্রটি ইতিমধ্যে কোটি টাকা হাতিয়েও নিয়েছে বলে জানা গেছে।

নদীর জলায়তন ও মূল স্রোতধারার ২০ ফুটের মধ্যে নদী সিকিস্তি সরকারী জমিতে তৈরী করা এসব দোকান ভাড়া দিয়ে সেলামী বাবদ কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দখলদার সিন্ডিকেট৷
নদীর এলাকায় এসব দোকান নির্মানের ফলে আসন্ন বর্ষায় নদীর মূলস্রোতধারা বাঁধাপ্রাপ্ত হলে নদীর উভয় তীরে ব্যাপক ভাঙ্গন সৃষ্টি হতে পারে বলে শংকা প্রকাশ করছে ঈদগাঁও বাজারের হাজারো ব্যাবসায়ী। অবৈধ দখলের কারণে নদী এলাকা ছোট হওয়ায় আসন্ন বর্ষা মৌসুমে উক্ত নদী এলাকা ভাঙ্গন দেখা দিলে বাঁশঘাটা ব্রীজ, জাহানারা ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঈদগাঁও- গেমাতলী সড়ক, ইসলামাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, বাজার এলাকা, বাঁশঘাটা জামে মসজিদ ও সরকারী বেসরকারী অপরাপর স্হাপনা নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত দখলদারদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও মোবাইল সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। আবার একাধিক দখলদার ইতিপূর্বে সরকারি অনেক কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে এসব অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছে বলেও এলাকায় ব্যাপক প্রচার আছে।

সচেতন ঈদগাঁওবাসী ও বাজারের হাজারো ব্যাবসায়ীদের অভিযোগ, নদীটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন হলেও এ বিভাগের কর্মকর্তারা নামে মাত্র নদী এলাকার বিভিন্ন স্থানে তাদের কিছু সাইন বোর্ড টাঙ্গিয়ে এসব দখলদারদের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে নদী এলাকা দখলের সুযোগ করে দিচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন রায় বলেন, নদী শিকস্তি জমিতে স্হাপনা নির্মাণের কোন সুযোগ নেই। অভিযান পরিচালনা করে দখলকৃত সরকারী জমি উদ্ধার করা হবে। ঈদগাঁও বাজারের হাজারো ব্যাবসায়ী ও নদী সংলগ্ন বসবাসকারী জনগণের দাবি তড়িৎ নদী এলাকায় নির্মিত এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা না হলে আগামী বর্ষা মৌসুমে স্বাভাবিক গতিতে পানি উজান থেকে নীচে নামতে বাঁধা প্রাপ্ত হবে। এতে নদীর উভয়কূলে ব্যাপক ভাঙ্গন সৃষ্টি হলে তিন সহস্রাধিক ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান সমৃদ্ধ ঈদগাঁও বাজার এবং নদী সংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী হাজারো বসতি বন্যার পানির তোড়ে তলিয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। তাই তারা অবিলম্বে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন