parbattanews

ঈদের দিন দেশজুড়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা

আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে সারা দেশেই মোটামুটি বৃষ্টি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দেশের দক্ষিণাঞ্চল ও উপকূলীয় বিভাগগুলোতে বৃষ্টি কিছুটা কম থাকতে পারে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, ঈদের এই সময় তাপমাত্রা থাকবে স্বস্তিদায়ক ও সহনীয় পর্যায়ে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঈদের দিন সারা দেশেই মোটামুটি বৃষ্টি থাকবে।

গতকাল দেশের মধ্যাঞ্চলসহ সারা দেশেই বৃষ্টি বেড়েছে। ঈদের দিনও এ রকম থাকতে পারে।’

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বেশির ভাগ জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। এ সময় সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে আগামীকাল ঈদের দিন এবং তার পরের দিন ঢাকা, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

গতকাল ঈদের আগের দিন, ঈদের দিন এবং ঈদের পরের দিনের আবহাওয়ার বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক।

তিনি জানান, আজ দেশের দক্ষিণাঞ্চল অর্থাৎ খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে বৃষ্টি বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ঈদের দিন থেকে (২৯ জুন) অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। এদিন ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগে বৃষ্টি বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ঈদের পরের দিন (৩০ জুন) ঢাকা বিভাগে বৃষ্টি কিছুটা কমে উত্তরের দিকে সরে যেতে পারে। অর্থাৎ এ সময় রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে বৃষ্টি বেশি হতে পারে।

ঈদের দিন সকালের দিকে রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান আবহাওয়াবিদরা। এ ছাড়া উত্তরাঞ্চলের এলাকাগুলোতে দুপুরের দিকে বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়াবিদ নাজমুল হক বলেন, ঢাকা বিভাগে ঈদের দিনটা মোটামুটি বৃষ্টিময় হতে পারে। সকালে রাজধানীতে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। ঈদের দিন সকালে খোলা মাঠে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে বৃষ্টির বিষয়টি মাথায় রাখার পরামর্শও দেন এই আবহাওয়াবিদ।

এদিকে ঈদের সময় তাপমাত্রাও থাকবে কমের দিকে। আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক জানান, ঈদের সময় দিনের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নিচে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। নাজমুল হক জানান, ঈদের দিন ঢাকার তাপমাত্রা থাকতে পারে ৩০ থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। তবে দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি কিছুটা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় সেখানে তাপমাত্রা ০.৫ থেকে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে।

আগের দিনের তুলনায় গতকাল দেশে বৃষ্টিপাত বেড়েছে অনেকটাই। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৪৪টি স্টেশনের ৪২টিতে বৃষ্টির খবর মিলেছে। সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে, ১২৫ মিলিমিটার। এ ছাড়া নোয়াখালীর হাতিয়ায় ৮১ মিলিমিটার, মাইজদীকোর্টে ৫৯ মিলিমিটার এবং চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় ঢাকায় ১২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

বৃষ্টি বাড়ায় আগের দিনের তুলনায় গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমেছে ২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল নীলফামারীর সৈয়দপুরে, ৩৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আগের দিনের তুলনায় যা ৩.৮ ডিগ্রি কম।

ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দেশের চার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সতর্কবার্তায় বলা হয়, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত আছে।

ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তত্সংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

Exit mobile version