ঈদের ৩ দিনে বিভিন্ন ঘটনায় টেকনাফে গুলিবিদ্ধ ২ আহত ৫০ গলাকাটা ১

মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান, টেকনাফ:
ঈদের আনন্দময় ৩ দিনে টেকনাফে পৃথক পৃথক ঘটনায় অসংখ্য শিশু ও বৃদ্ধসহ অন্তত ৫০ জন ব্যাক্তি আহত  হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের টেকনাফ, ককসবাজার ও চট্টগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । এতে টেকনাফের  অসংখ্য পরিবারের মধ্যে আনন্দের বদলে চলছে নীরব কান্না।  টেকনাফ হাসপাতাল ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়- ৯ আগষ্ট  ইয়াবা ব্যবসা প্রভাবে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজির পাড়ায় ঈদের নাযাজ পড়া ও কবর জিয়ারত কে কেন্দ্র  করে সংঘর্ষ হয় । এ ঘটনায়  নাজির পাড়া এলাকার দুদু মিয়া ও তার ৪ বছরের শিশুকন্যা নিহামণি গুলিবিদ্ধ হয় ।

জানা যায়, নাজিরপাড়ায় দুইটি গ্রুপের মধ্যে র্দীঘদিন ধরে পারিবারিকভাবে বিরোধ চলে আসছিল । এ বিরোধের জের ধরে দু গ্র“পে আলাদা প্যান্ডেল করে ঈদের নাযাজ আদায় করে। নাযাজ শেষে হঠাৎ গুলির শব্দ হলে মানুষ বিভিন্ন দিকে ছুটাছুটি করতে থাকে । ঘটনাস্থলে টেকনাফ থানা পুলিশের এস আই লিমন ও এ এস আই হিরন শান্ত করে জড়িত থাকার অভিযোগে মটর সাইকেল  ও জুবাইর নামে এক ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে যায়। পরে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। স্থানীয়রা জানায় ওই ঘটনায় কালু নামক ও ভূট্রো নামক দুই জনই গুলি চালিয়েছে । ভুট্রো জানায়- গুলি সে চালায়নি স্থানীয় ছোট ছেলেরা ঈদের আনন্দ করতে আতসবাজি ফাটিয়েছে। ওই আতসবাজির বারুদ শিশুটির চোখে ও গায়ে পড়ে শিশুটি আহত হয়েছে ।

অপরদিকে একই সময় সদর ইউনিয়নের মহেশখালীয়া পাড়ায়ও ঈদের নামাজ শেষে পূর্বের জের ধরে আরেক ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আজিজুর রহমানের মোঃ জাবেদ (২৫), আবদুল হামিদ (৪০) গুরুতর আহত হয়। এছাড়া টেকনাফ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়- মারামারি ট্রাক সিএনজি টমটম ও বিভিন্ন ঘটনায় অসংখ্য শিশু ও বৃদ্ধসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। আহতরা হল- জাহেদুল রহমান (৭), সখিনা খাতুন (৬৮), আজিজা বেগম (৫), মোঃ হোছেন (৭০), আবদুর রহিম, রহমান (২), মোঃ ইউনুছ (২), সাইফুল হোসেন (২), রবি আলম (৩), আপিয়া, আবদুর রহিম, আহমদ মিয়া, ইয়াছিন, আনোয়ার, শাহেদ আরো বেশ কয়েকজন।

এদিকে সাবরাং ইউনিয়নের চান্দলীপাড়ায় হিন্দুপল¬ীতে প্রতিপক্ষের হামলায় ৪ জন আহত হয়েছে।  ঘটনাটি ঘটে ১১ আগস্ট চান্দলী পাড়ায় দুপুর ১টায়। গাছের আমড়া পারাকে কেন্দ্র করে আমড়া পড়ার শব্দে ক্ষুদ্ধ হয়ে পার্শ্ববতী প্রতিবেশী তপন(কালায়া), নিতিবালা,রুবেল, উত্তমের নেতৃত্বে রায়মোহনশীলের উপর লাঠি দিয়ে হামলা করে । এসময় রায়মোহনের রায়ের স্ত্রী রিতু বালা এগিয়ে আসলে কাজলা বালা,অস্টমী বালা এগিয়ে আসলে তাদেরকে দা, কিরিচ,লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত অনেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এদিকে হ্নীলার দমদমিয়া চেকপোস্ট সংলগ্ন এলাকায় একটি ঝগড়া-ঝাটির তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১রোহিঙ্গা যুবককে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে অপর রোহিঙ্গা যুবক। উক্ত যুবককে মুমূর্ষ অবস্থায় চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানাযায়-১১ আগষ্ট সকালে টেকনাফের রোহিঙ্গা অধ্যূষিত দমদমিয়া চেকপোস্ট সংলগ্ন এলাকায় স্থানীয় বাঁচা মিয়ার পুত্র নুরুল আমিন প্রকাশ জাপাইন্যার সাথে মীর আহমদের পুত্র ফয়েজ উদ্দিন(১৬) মনিয়ার কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। লোকজন সমঝোতা করে দেয়। এরপর মনিয়া রাস্তার পশ্চিমে রোহিঙ্গা ভাড়াবাসার আবু ছিদ্দিকের বাড়িতে যায়। সেখান থেকে ফিরে আসার সময় রোহিঙ্গা কামাল উদ্দিনের পুত্র আব্দুর রাজ্জাক প্রকাশ লেগি পেছন থেকে এসে ধারালো দা’র কোপ দিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। লোকজন খবর পেয়ে দ্রুত মনিয়াকে চিকিৎসার জন্য টেকনাফ উপজেলা হাসপাতালে প্রেরণ করে। তবে ক্ষুদ্ধ লোকজন আবু ছিদ্দিক নামে এক যুবককে গণধোলাই দেয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত জেলা সদর হাসপাতালে হস্তান্তর করে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উক্ত যুবকের অবস্থা আশংকা জনক ছিল।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন