উখিয়ার ট্রানজিট ক্যাম্পে ১৩৬ রোহিঙ্গা পরিবার

fec-image

সারাদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে ফেরাতে নানান উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজার জেলাসহ চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে গত ১ সপ্তাহে ট্রানজিট ক্যাম্পে এসেছে প্রায় ১৩৬ রোহিঙ্গা পরিবার।

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) কুতুপালং টিভি রিলে কেন্দ্র সংলগ্ন ট্রানজিট ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া এক রোহিঙ্গার সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা যায়। তবে এ নিয়ে ক্যাম্প প্রশাসন কথা বলতে নারাজ।

সরেজমিন ট্রানজিট ক্যাম্প ঘুরে বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরকারের কঠোর অবস্থানের ফলে দেশব্যাপী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে ফেরাতে কঠোর ভাবে কাজ করে যাচ্ছে আইনশৃংখলা বাহিনী । যার প্রেক্ষিতে বাইরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা নিজ উদ্যোগে ক্যাম্পে ফিরতে শুরু করেছে।

চট্টগ্রামের পটিয়া জমিদারখিল শিবাতলী স্কুল এলাকা থেকে ট্রানজিট ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া জাহেদ (৩০) জানান, প্রায় ১৬ পূর্বে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে সে স্বপরিবারে পটিয়া ভাড়া বাসায় অবস্থান করছিল। তার ১ স্ত্রী ২ ছেলে/মেয়ে রয়েছে। মিয়ানমারে তার বাড়ি বুচিডং খানসামা এলাকায়। পিতার নাম আমির হামজা। মঙ্গলবার তিনিসহ ওই এলাকা থেকে ২০ পরিবার ট্রানজিট ক্যাম্পে এসেছে বলে জানায়।

এসময় তার পাশে দাঁড়ানো আবুল কামাল (৩৪) নামের আরেক রোহিঙ্গা বলেন, সে ২০ বছর পূর্বে মিয়ানমার থেকে এসেছে। স্ত্রী: আসমা বেগম(২৫) ছাড়াও ১ ছেলে ১ মেয়ে রয়েছে তার। সেও স্ব পরিবারে মঙ্গলবার ট্রানজিট ক্যাম্পে এসেছে। সে জানায়, মঙ্গলবার তাদের সাথে ৪০ পরিবার এবং বুধবার সকালে ট্রানজিট ক্যাম্পে আরো ২০ পরিবার। এভাবে গত ১ সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৭৬ রোহিঙ্গা পরিবার ট্রানজিট আশ্রয় নিয়েছে বলে সুত্রে জানিয়েছে।

ট্রানজিট ক্যাম্পে কর্মরত কর্তা ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ট্রানজিট ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়ে তালিকাভুক্ত হয়েছে ৭৬ পরিবার। বাকীরা এখনো তালিকাভুক্ত হয়নি। এসব রোহিঙ্গাকে উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে পৌঁছে দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে কুুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ মো. রেজাউল করিমের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আগে ট্রানজিট ক্যাম্প দেখাশোনার দায়িত্ব আমাদের ছিল। কিন্তু এখন ইউএনএইচিসআর এবং আরআরআরসি অফিস দেখাশোনা করে থাকেন, তাই রোহিঙ্গা আশ্রয় নেওয়ার ব্যাপারে আমার কাছে কোন তথ্য নেই।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানায়, সরকার দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছড়িয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে ফেরাতে কাজ করছে। আমরা নিজেরাও এ নিয়ে কঠোর ভাবে কাজ করে আসছি। তাই রোহিঙ্গারা নিজ উদ্যোগে ক্যাম্পে ফিরছে। তবে ট্রানজিট ক্যাম্পে রোহিঙ্গা আশ্রয়ের ব্যাপারে আমি অবগত নই।

অতিরিক্ত শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসুদ্দোজার নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কোন কিছু বলা সম্ভব নয়।

ট্রানজিট ক্যাম্পে দায়িত্বরত ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধির সাথে কথা বলার জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও কথা বলতে রাজী না হওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন