উখিয়ায় অপহৃত হওয়ার তিনদিন পর বাড়ি ফিরেছেন উপজেলার কুতুপালংয়ে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক (এজেন্ট ব্যাংকিং) শাখায় ক্যাশিয়ারের দায়িত্বরত হামিদ হোসেন (২১)। শুক্রবার (২ জুলাই) রাত ১১টার দিকে বালুখালী ১৩ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মরা আমগাছতলায় তাকে রেখে যায় অপহরণকারীরা।
হামিদের চাচাতো ভাই হারুনুর রশীদ বলেন, শুক্রবার রাত ১১টার কিছু পরে অপহরণকারীরা হামিদকে ছেড়ে দেয়। মুক্তি পেয়ে হামিদ পরিবারের কাছে চলে আসে।
মুক্তি পাওয়ার পর হামিদ বলেন, ‘বালুখালীর পানবাজার থেকে তিন রোহিঙ্গা যুবক ছুরি ধরে আমাকে অপহরণ করে ক্যাম্পের ভেতরে নিয়ে যায়। সেখানের একটি বাসায় আমাকে চোখ বেঁধে ফেলে রাখে। তারপর একজন আমাকে থাপ্পড় মেরে বলে, ব্যাংকে চাকরি করিস, ২০ লাখ টাকা দিতে হবে, না দিলে তুকে মেরে ফেলা হবে। আমি তাদের বলি, মাত্র ৭ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করি, ২০ লাখ টাকা কোথায় থেকে দেবো।
হামিদ আরও বলেন, (শুক্রবার) রাতে আমাকে দুজন দুই হাতে ধরে চোখ বেঁধে মরা আমগাছতলায় নিয়ে আসে, তারপর আমার চোখ খুলে দিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলে।
এর আগে উখিয়া উপজেলার পার্শ্ববর্তী টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কাঞ্জরপাড়া গ্রামের খাইরুল আলমের পুত্র ব্যাংক কর্মকর্তা হামিদ বুধবার (৩০ জুন) নিজ বাড়ি থেকে কর্মস্থল উখিয়ার কুতুপালংয়ে যাওয়ার পথে বালুখালী পানবাজার এলাকায় নিখোঁজ হন। ছেলে নিখোঁজ হওয়ার দিন উখিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন হামিদের বাবা খাইরুল আলম।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায় , কর্মস্থলে যাওয়ার সময় তালহা নামে এক ব্যক্তি হামিদকে ফোন দেয়। ওই ব্যক্তি তাঁকে বালুখালী পানবাজার এলাকায় দেখা করার জন্য বলে। একই সময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল হামিদের, কিন্তু কিছুক্ষণ পর তার আর খোঁজ মেলেনি। অভিযোগপত্রে খাইরুল আলম দাবি করেন, রোহিঙ্গাদের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যরা হামিদকে তুলে নিয়ে গেছে।
খাইরুল আলম জানান, হামিদ নিখোঁজ হওয়ার পরদিন অজ্ঞাত পরিচয় (০১৯৫…..৪২৬৮) থেকে কল দিয়ে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হামিদের গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, কিছুদিন আগেও একই এলাকার এক সিএনজি অটোরিকশা চালককে অপহরণ করে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। পরে ওই অটোরিকশা চালক ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠায় স্থানীয়রা আতঙ্কে রয়েছে।