parbattanews

উখিয়ায় চাকরি মেলা, প্রত্যাশা আর প্রাপ্তি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড়  

উখিয়ায় পুর্ব নির্ধারিত শনিবার (৬জুলাই) অনুষ্ঠিত হয়েছে বহু প্রতিক্ষিত চাকরি মেলা। ওই মেলায় উখিয়া-টেকনাফ ছাড়াও কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলা যথাক্রমে-কক্সবাজার সদর, রামু, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়া ও পেকুয়া থেকে শিক্ষিত বেকার ছেলে/মেয়েরা মেলায় অংশ গ্রহণ করেন। প্রত্যেকের একটি উদ্দেশ্য ছিল ‘চাকরি’। সেই প্রত্যাশিত চাকরি নিশ্চিত না হওয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

শনিবার সকালে উখিয়া হাইস্কুল মাঠ চাকরি মেলা প্রাঙ্গন ঘুরে দেখা যায়, উখিয়া-টেকনাফ ছাড়াও অন্যান্য উপজেলা প্রার্থীর সংখ্যা অনেক গুণ বেশি। প্রচণ্ড ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে বেকারত্ব দুর করতে মেলায় অংশ গ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছেন কয়েকজন প্রার্থী। তারমধ্যে চকরিয়া উপজেলা থেকে আগত চাকরি প্রার্থী কামরুল হাসান পার্বত্যনিউজকে জানায়, মাত্র কয়েক মাস পূর্বে অনার্স শেষ করেছে। বর্তমানে বেকার অবস্থায় বাড়িতে রয়েছে। চাকরি মেলার খবর পেয়ে সে কাগজপত্র নিয়ে মেলায় অংশ গ্রহণ করলেও চাকরি হওয়ার কোন লক্ষণ দেখছেন না। তার কাজ থেকে আবেদন ব্যাপারে জানতে চাইলে সে জানান, অনলাইনে গত ৫ জুলাই আবেদন করেছেন, কিন্তু কোন ম্যাসেজ পাননি। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যান্ত্রিক অথবা আবেদনে কোন সমস্যা থাকায় ম্যাসেজ আসেনি।

এসময় কথা হয় টেকনাফ উপজেলা হ্নীলা থেকে আসা এক মহিলা প্রার্থীর সাথে। তার নাম কহিনুর আক্তার। গত এক বছর পুর্বে বিএ পাশ করার পর থেকে অনেক জায়গা আবেদন করেছে কিন্তু কোথাও চাকরি হয়নি। এভাবে হতাশার বাণী মেলায় অংশ গ্রহণকারী অধিকাংশ প্রার্থীদের।

এতে চাকরি মেলায় প্রত্যাশা আর প্রাপ্তি নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে সমালোচনা করতে দেখা গেছে। মুফিদুল আলম নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী তার আইডিতে লিখছেন ‘এটি কি চাকরি মেলা নাকি তামাশার মেলা’? শরিফ আজাদ নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন চাকরি মেলার নামে উখিয়াবাসির সাথে নতুন করে প্রতারণা করা হয়েছে। রশিদ আহমদ নামের এক যুবক লিখেছেন ‘যে জাতির অভিভাবকরা প্রতারক, তাদের কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি কি আর আশা করা যায়?? ফ্যাক্ট-চাকরি মেলা।

উখিয়া নিউজ ডট কমের সম্পাদক ওবাইদুল হক চৌধুরী লিখেছেন চাকরি মেলা নয়, যেন স্থানীয়দের জন্য সান্তনার মেলা! উখিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি সরওয়ার আলম শাহীন লিখেছেন চাকরি মেলা প্রত্যাশা আর প্রাপ্তি কি? রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ও পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী লিখেছেন শেষ পর্যন্ত চাকরি মেলার নামে নাটকের সমাপ্তির পথে, আন্দোলন করবে উখিয়াবাসি চাকরি পাবে জেলাবাসি হায়রে নিয়তি’ এভাবে শতশত ফেসবুক ব্যবহারকারী সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের ক্ষোভ আর মতামত ব্যক্ত করতে দেখা গেছে। তবে মেলার মাধ্যমে বিভিন্ন এনজিওতে ৩১৮ বেকার ছেলে/মেয়ের চাকরি নিশ্চিত হওয়ায় প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।

এব্যাপারে মেলার সভাপতি, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জানান, একদিনে এত সংখ্যক ছেলে/মেয়ের চাকরি নিশ্চিত করা কখনো সম্ভব নয়। আজ (শনিবার) মেলার মাধ্যমে ৩১৮জনের চাকরি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরপর ধাপে ধাপে বাকিতের চাকরি নিশ্চিত করা হবে। তিনি এসময় আরো বলেন কারো চাকরি না হয়ে থাকবেনা, তবে অপেক্ষার পাশাপাশি নিজেকে দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

উল্লেখ্য যে, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় মেলাটি উদ্বোধন করেন এনজিও ব্যুরোর মহাপরিচালক কে.এম আবদুস সালাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোজাম্মেল হক, কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম, ইন্টারসেক্টর কো-অর্ডিনেটর গ্রুপ (আইএসসিজি)-এর সিনিয়র কো-অর্ডিনেটর মিস নিকুল এপটিং, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান,উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান চৌধুরী।

Exit mobile version