উখিয়ায় বৌদ্ধ ভাবণা কেন্দ্রের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৬

fec-image

উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের দক্ষিণ ক্লাশা পাড়া প্রাচীন বৌদ্ধ মহাশ্মশান বৌধি জ্ঞান ভাবনা কেন্দ্রের আধিপত্য বিস্তার ও কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের দু’গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষসহ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৬ জন আহত হয়েছে বলে দু পক্ষেই দাবি করেছেন। আহতদেরকে উখিয়া ও কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে উখিয়া থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে ২ ঘন্টাব্যাপী চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।

বুধবার (২৮ এপ্রিল ) দুপুর ২টার দিকে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। থানার সাব-ইন্সপেক্টর তারিক হোসেন বলেন, পুলিশ ধৈর্য্য ধারণ করে বিবাদমান দু’পক্ষকে শান্ত করা হয়েছে । বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে ।

আহতরা হলেন প্রজ্ঞা রত্ন ভান্তে (৫৫), রনি বড়ুয়া (২১) পিতা রুপন বড়ুয়া, বাপ্পু বড়ুয়া (২৮) পিতা স্বপন বড়ুয়া, রুবেল বড়ুয়া (২৫) পিতা রবিন্দ্র বড়ুয়া, রুবেল বড়ুয়া (২) পিতা সুদপ্ত বড়ুয়া।

এদিকে বিকেলে একটি পক্ষ ঘটনার জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়ে কোটবাজার ভালুকিয়া সড়কে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

সূত্রমতে, সাবেক মেম্বার মধু সুধন বড়ুয়া , মাস্টার সুবধন বড়ুয়া, সাবেক মেম্বার দিপক বড়ুয়া ও জয়েনসু বড়ুয়া জানান, বড়ুয়া সম্প্রদায়ের ৬টি সমাজের সমন্বয়ে প্রাচীন বৌদ্ধ মহা শ্মশান ও বৌধি ভাবণা কেন্দ্র পরিচালনা করে আসছে । কিন্তু রনজিত বড়ুয়া নামক এক ব্যক্তি আরো কয়েকজন সহযোগী নিয়ে বহিরাগত ভান্তে এনে ভাবণা কেন্দ্রটি দখলের প্রক্রিয়া শুরু করে। তারা আরো বলেন, সংঘদানে অংশ গ্রহণ করতে আসা লোকদের হামলা ও মারধর করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে গুটি কয়েক ব্যক্তি।

মৃদুল বড়ুয়া ও নসু বড়ুয়া অভিযোগ করে বলেন, ভাবণা কেন্দ্রে প্রজ্ঞা রত্না ভান্তের স্বর্গীয় মাথর অস্ট পরিস্কার ও ধর্মীয় সভা ছিল। ওই সময় একপক্ষ এসে ভান্তে সহ আমাদের উপর হামলা চলায়।

এদিকে মাস্টার পরিমল বড়ুয়া, পলাশ বড়ুয়া ও বিজন বড়ুয়া তা অস্বীকার করে বলেন, বুধবার বেলা ২টায় আমাদের পূর্ব নির্ধারিত পরলোকগত কল্যাণ মিত্র জ্ঞাতি স্বরণে পূণ্যদান ও বৈশ্বিক করোনা মহামারী থেকে বাঁচাতে বৈকালিক সংঘদান অনুষ্ঠান ছিল। উক্ত সংঘদানে ৬টি সমাজের বৌদ্ধ বিহারের ভান্তেসহ প্রায় ৬ শত দায়েকগণ ভাবণা কেন্দ্রে আসলে বাধা প্রদান করে অপর একটি পক্ষ। এমনকি ৬টি বৌদ্ধ মন্দির থেকে আসা ৬ জন ভান্তেকে ভাবণা কেন্দ্রে ধর্মীয় সভায় অংশ গ্রহণ করতে দিচ্ছিল না। তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, ওই সময় রনজিত বড়ুয়ার ইন্ধনে একটি পক্ষ পূর্ব পরিকল্পনা মতে রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে ভান্তে এনে ভাবণা কেন্দ্রে জমায়েত করে রাখে । যা খুবই দুঃখ জনক।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল তর্ক বিতর্কসহ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দা, কিরিচ ও লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি হামলায় বেশ কয়েক জন আহত হন।

ঘটনাস্থলে আসা এসআই তবারক ও এসআই মনিরুল ইসলাম জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয় এবং দু পক্ষকের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ নিয়ে থানায় বৈঠকের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন