কক্সবাজারের উখিয়ার তেলীপাড়াস্থ ক্যাম্প-৭ এর দুস্কৃতকারী রোহিঙ্গাদেন প্রতিনিয়ত হুমকি আর অস্ত্রের মহড়ায় পরিবার-পরিজনের ঘরছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে হতদরিদ্র এক কৃষক পরিবার। এ নিয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে আব্দু ছাত্তার নামে এক ব্যক্তি।
জানা গেছে, গত ১৬ মার্চ ভোর সাড়ে ৫ টায় তেলিপাড়া গ্রামের আব্দু ছাত্তার নামের এক কৃষকের ৬০ শতক বোরো চাষাবাদ সম্পূর্ণ উপড়ে ফেলে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। এঘটনায় জড়িত ১৫ জন রোহিঙ্গা দুস্কৃতকারীদের নাম উল্ল্যেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ২০/২২ জনের নামে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আবদুস সাত্তার।
থানায় দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ১৬ মার্চ ভোর সাড়ে ৫ টার দিকে ক্যাম্প-৭ এর মাহমদুল হক হাসানের ছেলে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী মৌঃ রফিক,খাইরুল আমিনের ছেলে হেডমাঝি মুহিদুল্লাহ, হেডমাঝি ছৈয়দ নুর, মীর আহমদের ছেলে ছৈয়দ আকবর, ছানাউল্লাহ, জোবাইর ও কলিমউল্লাহ, সিদ্দিক মাঝি, তাহের।
আজিজ, রহিম উল্লাহ, মোহাম্মদ উল্লাহ, এনাম,মৌঃ জোবাইর, আনোয়ার শাহ, আবছার ওরফে বুলবুল, জাবের ও আরাফাতের নেতৃত্বে শতাধিক রোহিঙ্গা দুর্বৃত্ত ভোরে এসব ধানের রোপা উপড়ে ফেলে।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক আবদুস ছাত্তার নিজের ধান উপড়ে ফেলার দৃশ্য দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বাধা দিতে গেলে উল্টো প্রাণনাশের ধমকি দিয়ে ধাওয়া দেয় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। ফলে হতদরিদ্র কৃষক আবদুস ছাত্তারের পরিবার চরম বেকায়দায় পড়েছে।
শুধু খাদ্য সংকট নয়, ঘটনার পর থেকে ছাত্তার, তার ভাই ফকরুদ্দিন, আবদুল হাকিম, ভগ্নিপতি মঞ্জুর আলমের বসতবাড়িতে রাত-বিরাতে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘুরাফেরা করতে থাকায় জানমাল নিয়ে চরম আশংকায় রয়েছেন।
নিজেদের সহায় সম্পদ রক্ষা, শারিরীক নিরাপত্তার বিষয়ে একাধিকবার ক্যাম্প-৭ এর সহকারী ইনচার্জ মোঃ শাহজাহানের শরনাপন্ন হন আব্দুস সাত্তার। কিন্তু ক্যাম্প ইনচার্জের ভুমিকা বরাবরই রহস্যজনক বলে মনে করেন সে।
ছাত্তার বলেন, আমার দীর্ঘ যুগ-যুগ সময় ধরে ভোগদখলীয় সামাজিক বনায়নের জায়গা কোন এনজিওর নিকট ভাড়া দিয়ে দেবে মর্মে ক্যাম্প ইনচার্জ শাহজাহান ১০ হাজার টাকা উপঢৌকন নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
সাত্তার আরো জানান, আমি কোন রোহিঙ্গাকে দোকান বা জায়গা ভাড়া দিইনি বা টাকা গ্রহণ করিনি। আমার জায়গা জবর দখল করে, আমার বাড়িঘর উচ্ছেদ করার পাঁয়তারা করছে তাঁরা। যেকোন মুহুর্তে তাঁর উক্ত ফসলা জমি জোর পূর্বক দখলে নিয়ে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপের আস্তানা গেঁড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উক্ত ঘটনায় রোহিঙ্গা এবং গ্রামবাসীদের মাঝে টান-টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন মুহুর্তে আবারো বড় ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা সংঘটিত করার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। ক্যাম্প অভ্যন্তরে থাকা গ্রামবাসীদের পরিবারগুলো জানমাল নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।
ক্যাম্প-৭ এর সহকারী ক্যাম্প ইনচার্জ মোঃশাহজাহান এ বিষয়ে জানতে কল করা হলে মোবাইল বন্ধ পাওয়ায় মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মরজিনা আকতার মরজু বলেছেন, এজাহার পেয়েছি, জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।