parbattanews

উখিয়া টেকনাফে রোহিঙ্গা সঙ্কট মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নিতে পারে

ঘুমধুম প্রতিনিধি:
মায়ানমারের রাখাইনে সরকারী বাহিনীর নির্যাতনের মুখে দলে দলে রোহিঙ্গারা পালিয়ে আসছে বাংলাদেশে। ঢাকা চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের প্রত্যন্ত  জেলা থেকে ধন্যাঢ্য ও দানশীল ব্যক্তি, বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান অধিকহারে ত্রাণ নিয়ে আসছে উখিয়া টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য।

তারপরও রোহিঙ্গারাদের অনেকে না খেয়ে দিনাতিপাত করছে,অনেক রোহিঙ্গা শিশু, বৃদ্ধ অসুস্থতায় ভুগছেন, খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা পরিবার। তাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নিতে পারে বলে ধারণা করছে উখিয়া টেকনাফের স্থানীয় সচেতন মহল।

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর অভিযানের ফলে আরো ব্যাপক এলাকাজুড়ে অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে, রাখাইনের সহিংসতা মানবিক বিপর্যয় হয়ে দেখা দিতে পারে।

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ১০ লাখ শরণার্থী বাংলাদেশে আসতে পারে।  মনে করা হচ্ছে এ সংখ্যা ১৫ লাখেও পৌঁছাতে পারে।

তারা আসছে অপুষ্টির শিকার হয়ে, সম্ভবত এক মাসেরও বেশি সময় তারা প্রয়োজনমতো খাবার পায় না। তাদের ক্ষুধার্ত ও ভীত-সন্ত্রস্ত দেখাচ্ছে।

শরণার্থীরা নৌকা ছাড়াও স্থল সীমান্তের অনেক জায়গা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে বলে জানা যায়।

রাখাইনের কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়ি এবং একটি সেনা ক্যাম্পে ২৪ অাগস্টে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর সেখানে নতুন করে সহিংসতা শুরু হয়ে এখনো চলছে।

সুত্রমতে- এই পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের ২৬শ’ বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, সহস্রাধিক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। প্রায় ৫ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে রাখাইন থেকে।

জীবন ভয়ে পালিয়ে আসা গুরুতর আহত মানুষ, খাদ্যহীন-আশ্রয়হীন নারী-শিশু-বৃদ্ধরা এভাবে আসতে থাকলে পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। যেভাবে শরণার্থী বাড়ছে তাতে শিগগিরই আশ্রয়ের ক্ষেত্রে বড় ধরনের সংকট তৈরি হতে পারে।

রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের আকিয়াব, মংডু, ঢেকিবনিয়া, খিয়ারী পাড়া, বুচিডং, বলি বাজার, ফকিরা বাজারসহ বিভিন্ন স্থান থেকে এসে বাংলাদেশের সীমান্তের টেকনাফ, উলুবনিয়া, কাটাখালী, পালংখালী, ফারিরবিল, থাইংখালী, বালুখালী, ঘুমধুম, তুমব্রু, রেজু আমতলী ও নাইক্ষ্যংছড়ির বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশ করে টেকনাফের হৃীলা মুছনি ক্যাম্প,বালুখালী ক্যাম্প ও কুতুপালং ক্যাম্পসহ নতুন ক্যাম্প সৃষ্টি করে আশ্রয় নিচ্ছে। বেশীর ভাগ রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার টেকনাফ সড়কের দু-পাশে ঝুপড়ি ঘর তৈরি করে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে।

তাছাড়া এই বিপুলসংখ্যক শরণার্থীর ন্যূনতম চাহিদা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে ত্রাণ সংস্থাগুলোসহ স্থানীয় জনসাধারণ। ফলে বড় একটি মানবিক বিপর্যয়ের মুখেই দাঁড়িয়ে আছে অসহায় এ রোহিঙ্গারা।

উখিয়া টেকনাফসহ বাংলাদেশ স্থানীয় জনসাধারণ ও বিশ্লেষকরা মনে করেন রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান না হলে মানবিক বিপর্যয়ে ভয়াবহ রুপ নিতে পারে। যার করুন ফল এ দেশের মানুষকে ভোগ করতে হবে।

Exit mobile version