রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:
জেলার সার্বিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে আরো বেগবান করতে সরকারের পাশাপাশি সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা।
তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যেকের পরিশ্রম ও আন্তরিকতার কারণে সফলতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে জেলার প্রতিটি উন্নয়নমূলক কাজ। নিজেকে দেশের উন্নয়নকর্মী হিসেবে চিহ্নিত করে নিজেদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। সঠিক দায়িত্ব পালনই উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট কর্মীদের সাফল্য ও অর্জন। দেশের উন্নয়নে ও জাতির কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত হতে হবে। এ জেলার উন্নয়নে আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। হস্তান্তরিত বিভাগগুলো পরিষদের সাথে সমন্বয় রেখে কাজ করলে এ জেলার উন্নয়ন দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাবে।
তাই পরিষদের প্রতিটি সভায় প্রতিষ্ঠান প্রধানদের উপস্থিত থেকে জেলার উন্নয়ন, সমস্যা ও সম্ভাবনা সংক্রান্ত সকল তথ্য উপস্থাপন করার পরামর্শ দেন চেয়ারম্যান।
বৃহস্পতিবার (২০জুলাই) সকালে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত পরিষদের মাসিক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ছাদেক আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্যগণ ও হস্তান্তরিত বিভাগের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় স্বাস্থ্য বিভাগের সিভিল সার্জন ডা. শহীদ তালুকদার বলেন, রাঙ্গামাটিতে সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে নিয়মিত চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হচ্ছে। গত বুধবার পর্যন্ত ৫হাজার ৪শত ৫৮জনকে চিকিৎসাসেবা ও ঔষুধ প্রদান করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে রাঙ্গামাটিতে নার্সের শুন্যপদগুলো পূরণ হওয়ায় রোগীরা সেবা পাচ্ছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের জায়গা অবৈধভাবে দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে প্রশাসনের সাথে সভা করা হয়েছে। প্রশাসন অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, সাম্প্রতিক মাটি ধ্বস ও বন্যার ফলে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ৬০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে সদর, বিলাইছড়ি ও জুরাছড়ি উপজেলার ৩টি বিদ্যালয়ের অবস্থা খুবই নাজুক। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণার্থে মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তা বলেন, জেলায় সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে চাষীদের উদ্যান ফসল, ধান্যজমি, ফলদ, সবজি ফসলের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে যা কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে। কৃষকদের এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পরিষদ হতে সহায়তা প্রদানের অনুরোধ জানান তিনি।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, গত ১৮জুলাই ২০১৭ থেকে ২৪জুলাই পর্যন্ত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ শুরু হয়েছে। এরই আলোকে গত ১৯জুলাই পথর্যালি, পোনা অবমুক্ত ও আলোচনাসভা করা হয়েছে।
ওই অনুষ্ঠানে সাবেক প্রতিমন্ত্রী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলেরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা সমাজসেবা বিভাগের কর্মকর্তা বলেন, সমাজসেবা কর্তৃক তালিকাভুক্তদের মাঝে ক্ষুদ্রঋণ, বয়স্ক ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, প্রতিবন্ধী শিক্ষা ভাতা ব্যাংক একাউন্ট এর মাধ্যমে সঠিকভাবে প্রদান করা হচ্ছে।
জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আবাসিক ও অনাবাসিকভাবে বেকার যুবদের প্রশিক্ষণ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আগামী মাস থেকে গবাদী পশুপালন বিষয়ে প্রশিক্ষণ শুরু হবে।
সভায় হস্তান্তরিত বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ তাদের বিভাগের স্ব স্ব কার্যক্রম উপস্থাপন করেন এবং বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে মতামত ও পরামর্শ প্রদান করেন।