parbattanews

একজনের কারণেই পুরো এলাকা অন্ধকার: বিদ্যুৎ বিভাগের আইনানুগ ব্যবস্থা

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

কক্সবাজার শহরের পশ্চিম বাহারছড়া মাদ্রাসা রোডে দেড়’শ এরও বেশি পরিবার রয়েছে। এসবের মধ্যে ১০টি পরিবারে মিটার থাকলেও বাকিরা বিদ্যুৎ সরবরাহ নেয় ওই এলাকার মৃত হায়দার আলী’র ছেলে মো. হেলালের টিসি (ব্যবসায়ীক) মিটার থেকে।আর এ মো. হেলাল’ই বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে দীর্ঘদিন এলাকাবাসীকে ভোগান্তিতে রেখেছে। তিনি এক একটি বাল্বের বিদ্যুৎ বিল রাখছে আড়াই’শ থেকে তিন’শ টাকা। একইভাবে ফ্যান আর টিভি’তেও দাম রাখছে।

এ অতিরিক্ত দাম রাখার কারণে গত বছর ভ্রাম্যমান আদালত তাকে জরিমানা করেছিল। সর্বশেষ মো. হেলাল দীর্ঘদিন ধরে ওই টিসি মিটারের বিল না দেওয়ার গত কয়েক মাস আগে ওই মিটারের লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয় বিদ্যুৎ অফিস। কিন্তু এ বিষয়টি তিনি কাউকে জানায়নি। তিনি অবৈধভাবে সংযোগ দিয়ে বিদ্যুৎ অফিসের নাম ভাঙ্গিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এলাকাবাসীর কাছ থেকে।

বিষয়টি বিদ্যুৎ অফিস জানতে পেরে অভিযান চালিয়ে তার অবৈধ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। জব্দ করছে বৈদ্যুতিক তার। আর তার বিরুদ্ধে নেয়া হচ্ছে আইনানুগ ব্যবস্থা। এদিকে এ ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকার বেশিরভাগ ঘর অন্ধকার হয়ে গিয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় এ গরমে তাদের ভোগান্তির শেষ থাকছেনা।মঙ্গলবার বিকালে কক্সবাজার বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল হকের নেতৃত্বে এ অভিযান চালিয়ে এ অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, মো. হেলাল গত ১০ বছর ধরে ব্যবসায়ীক মিটার দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। মূলত তিনি বিদ্যুৎ অফিসের অস্থায়ী সহযোগী হিসেবে কাজ করার সুপাতে এ ব্যবসায়ীক মিটারটি পায়। যদিও এ মিটারটি একই এলাকার আব্দুর সালামের ছেলে শাহজান (২৭) এর নামে। শাহজাহান বর্তমানে জেল হাজতে। শাহজানকে এ মিটার নিয়ে দিয়েছে মো. হেলাল। আর হেলালকে সহযোগিতা করেছে বিদ্যুৎ অফিসে চাকরি করা রিপন। যিনি সর্ম্পকে হেলালের দুলাভাই।

মো. হেলাল ওই এলাকায় বিদ্যুৎ দেওয়ার পর থেকে কাউকে শান্তিতে থাকতে দেয়নি। এক একটা বাল্ব, ফ্যান এমনকি টিভি থেকেও আড়াই’শ থেকে তিন’শ টাকা বিল নিয়েছে। এ অতিরিক্ত টাকা রাখার ব্যাপারে কেউ প্রতিবাদ করলে লাইন কেটে দিয়েছে। মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে বিদ্যুৎ বিল না দিলেও লাইন কেটে দিত। এছাড়া এলাকার কেউ মিটারের জন্য বিদ্যুৎ অফিসে গেলে তাকে মিটার না দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগত হেলাল ও তার দুলাভাই রিপন।

শুধু তাই নয়, গাছ আর বাঁশের সাথে হিজিবিজি অবস্থায় ঝুঁকির মধ্যে বৈদ্যুতিক লাইন দিয়েছে ঘরে ঘরে। যার ফলে যে কোন মুহুর্তে বড় ধরনের অঘটন ঘটতে পারে।এ ব্যাপারে কক্সবাজার বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল হক জানান, মো. হেলাল যা করেছে তার সম্পূর্ণ বে-আইনী। সে অতিরিক্ত বিদ্যুতের দাম রেখে দীর্ঘ দিন এলাকাবাসীকে ঠকিয়েছে। পাশাপাশি ঠকিয়েছে বিদ্যুৎ অফিসকে। সে দীর্ঘদিন বিদ্যুৎ বিল না দেওয়ায় ওই টিসি মিটারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় কয়েক মাস আগে।

কিন্তু খবর পাওয়া যায় মিটার সংযোগ বিচ্ছিন্নের বিষয়টি গোপন রেখে অবৈধভাবে লাইন দিয়েছে এলাকায়। আর বিদ্যুৎ অফিসের নাম ভাঙ্গিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাই অভিযান চালিয়ে অবৈধ লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়। আর তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।এ অবস্থায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকাবাসী। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকায় তাদের কষ্টের শেষ থাকছে না। তাদের প্রত্যাশা দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে এলাকায় বিদ্যুৎ দেওয়া হোক। প্রয়োজনে দ্রুত মিটার দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হোক।

Exit mobile version