parbattanews

একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এবং নিরাপত্তাবাহিনীর সহানুভূতি

দীঘিনালা প্রতিনিধি:

একজন হতদরিদ্র দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর বসতঘর নির্মাণ করে দিবেন দীঘিনালা জোনের নিরাপত্তাবাহিনী। গত বুধবার সকালে দীঘিনালা জোনের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সাব্বির আহম্মদ ওই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর বাড়ি পরিদর্শণ করেছেন।

এসময় তিনি একটি বসতঘর নির্মাণ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। হতদরিদ্র ওই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর নাম কালাকচু চাকমা(৫৩)। তার বাড়ি উপজেলার জোড়াব্রিজ এলাকায়। এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়েই তার সংসার।

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী কালাকচু চাকমা জানান, ডায়রিয়া এবং টাইফয়েড এর কারণে মাত্র আট বছর বয়সে দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি হারান। যার কারণে পড়াশুনা করা সম্ভব হয়নি। চোখের আলো না থাকায় বাড়িতে নিজ অভিজ্ঞতায় অনেক কাজই করতে পারেন তিনি। এভাবে বিভিন্ন কাজে পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতাও করেন তিনি।

এদিকে বাইশ বছর বয়সে তাকে বিয়ের পিড়িতে বসান তার বাবা। বিয়ের কয়েক বছর পরই তার বাবা মারা যান। পরে পুরো সংসারের ভার তার উপরেই বর্তায়। পরে স্ত্রী নিরতা চাকমার সহযোগিতায় বাঁশ ও বেতের কাজ শিখতে শুরু করেন। মাত্র অল্পকয়েক দিনেই বাঁশ ও বেতের ডালা, কুলা, ঝুড়ি ও পাটি তৈরির কাজ আয়ত্ব করেন। এখন প্রতিনিয়ত স্ত্রী জঙ্গল থেকে বাঁশ এনে দেন, বাড়িতে বসে বাঁশ বেতের উপকরণ তৈরি করেন।

কালাকচু চাকমার এক ছেলে ও তিন মেয়ে। এক ছেলে ও এক মেয়ে বিয়ে করে আলাদা সংসার করছেন। আর এক ছেলে ও মেয়ে নিয়ে তাদের চারজনের সংসার।

কালাকচু চাকমার স্ত্রী নিরতা চাকমা জানান, তাদের বসতঘরটি খুবই জড়াজীর্ণ। বর্ষা এলে পুরো ঘরেই পানি পড়ে। বাঁশ ও বেতের উপকরণ বিক্রি করে যা পাওয়া যায়, তা দিয়ে তাদের সংসার চলে। ঘর মেরামত করার মতো কোন প্রকার সামর্থ্য নেই।

এব্যাপারে দীঘিনালা জোনের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সাব্বির আহম্মদ জানান, কালাকচু চাকমার বাড়ি আমি নিজে গিয়ে পরিদর্শণ করে এসেছি। খুব কষ্টে জড়াজীর্ণ পরিবেশে তারা দিনাতিপাত করছেন। তাই মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই “দীঘিনালা জোন-জাগ্রত বিশ” এর পক্ষ থেকে তার জড়াজীর্ণ ঘরটি ভেঙ্গে নতুন আকারে খুব শীঘ্রই তাদের একটি বসতঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে।

Exit mobile version