parbattanews

একটু পরেই পদ্মা সেতুর উদ্বোধন, প্রধানমন্ত্রী মাওয়া পৌঁছেছেন

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হবে আর কিছুক্ষণ বাদেই। বহু কাঙ্ক্ষিত সেই সেতুর উদ্বোধন করতে সেতুর মাওয়া প্রান্তে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল ৯ টা ৫৫ মিনিটে তিনি হেলিকপ্টার করে মাওয়া সমাবেশ স্থলে এসে পৌঁছান। তিনি সেখানে প্রথম সুধী সমাবেশে ভাষণ দেবেন। মাওয়া প্রান্তে সুধী সমাবেশে ভাষণ শেষে তিনি উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন। অমনি খুলে যাবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অপরাপর অংশের জন্য সংযোগ, যোগাযোগ ও সম্ভাবনার অনন্ত দুয়ার।

দেশের বৃহত্তম স্ব-অর্থায়নকৃত এ মেগা প্রকল্পের জমকালো উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচির সময়সূচি অনুযায়ী মাওয়া পয়েন্টে বেলা ১১টায় তিনি স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনির শিট, উদ্বোধনী খাম ও বিশেষ সিলমোহর উন্মোচন করবেন। পরে বেলা ১১টা ১২ মিনিটে মাওয়া পয়েন্টে টোল পরিশোধের পর উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সেখানে মোনাজাতেও যোগ দেবেন।

তিনি বেলা ১১টা ২৩ মিনিটে মাওয়া পয়েন্ট থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবেন।

প্রধানমন্ত্রী বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে জাজিরা পয়েন্টে পৌঁছে সেতু ও ম্যুরাল-২ এর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন। সেখানে মোনাজাতেও যোগ দেবেন তিনি।

দুপুর ১২টায় মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়িতে সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত দলের জনসভায় যোগ দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বিকেল সাড়ে ৫টায় হেলিকপ্টারে জাজিরা পয়েন্ট থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন।

আজ ভোর থেকেই সেতুর দুই প্রান্তে দলে দলে মানুষ আসতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী মাওয়া প্রান্তে সেতুর উদ্বোধন করে টোল দিয়ে গাড়িতে সেতু পার হবেন। যাবেন অপর প্রান্তে। সেখানে ফলক উন্মোচনের পর বেলা ১২টায় হবে সমাবেশ। সেখানে অন্তত ১০ লাখ মানুষের সমাগমের কথা বলেছেন আয়োজকেরা। সেখানে আজ ভোর থেকে নেমেছে মানুষের ঢল। দক্ষিণের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ জড়ো হচ্ছে সেখানে। নানা রঙের টি শার্টে, নেচে গেয়ে সমাবেশে আসছে মানুষ। আজ সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে মাওয়ার ও জাজিরা উভয় প্রান্তে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

আজ সুধী সমাবেশে প্রথমেই পদ্মা সেতুর ওপর প্রামাণ্য চিত্র দেখানো হবে। এরপর শুরু হবে বক্তৃতা। এই সমাবেশে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সাড়ে তিন হাজার নাগরিককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু। মাওয়া থেকে জাজিরা। পদ্মা সেতু সড়ক, রেল, গ্যাস, বিদ্যুতের সংযোগ ঘটাবে উত্তরের সঙ্গে দক্ষিণের। নির্মাণের বিশাল কর্মযজ্ঞের সঙ্গে আছে সংযোগ সড়ক, রেল সংযোগ, নদীশাসন, পুনর্বাসন, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা—নানা প্রকল্প ও কর্মকাণ্ড।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২২ জুনের সংবাদ সম্মেলনে জানান, পদ্মা সেতুর প্রকল্প ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। ২১ জুন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২৭ হাজার ৭৩২ কোটি ৮ লাখ টাকা।

পদ্মা সেতু দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি জেলাকে সড়কপথে সরাসরি সংযুক্ত করেছে। কংক্রিট আর ইস্পাতের কাঠামোয় পদ্মা নদীর দুই প্রান্তের সামাজিক ও অর্থনৈতিক যোগাযোগের সেতুবন্ধ ঘটছে। তবে এই সেতু শুধু একটি বড় অবকাঠামো নয়, এটি বিদেশি অর্থায়ন ছাড়া প্রথমবারের মতো বাস্তবায়িত বাংলাদেশের একটি ‘মেগা’ প্রকল্প। এটি প্রমত্ত পদ্মার বুকে কারিগরি নানা জটিলতা কাটিয়ে নির্মাণ করা একটি সেতু। এটি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর মানুষ ও ব্যবসায়ীদের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান।

Exit mobile version