parbattanews

একদিনের শিশু নিয়ে ডিগ্রী পরীক্ষা দিলেন দিঘীনালার ফাতেমা আক্তার

ফাতেমা আক্তার

দীঘিনালা প্রতিনিধি:

শিরোনাম শুনেই অবাক হচ্ছেন?  অবাক করার মতো হলেও ঘটনাটি আসলেই বাস্তব এবং সত্য। এমনি এক চমক দেখালেন বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের সাহসী এক নারী- ফাতেমা আক্তার। সবাইকে অবাক করে মাত্র এক দিনের শিশু বাচ্চা নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসলেন পরীক্ষা দিতে।

গত ৫ মার্চ ঘটেছে এই ঘটনা। পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার কবাখালি ইউনিয়নের মুসলিম পাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. আব্দুর রহমানের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার। তিনি ২০১৪ সালের বি.কম প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থী। গত ৫ মার্চ দিঘীনালা ডিগ্রি কলেজে দুপুর ১টা থেকে বি.কম প্রথম বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়।

পরীক্ষা শুরুর ঠিক আগের দিন ৪ মার্চ রাত ১২টা ৪০ মিনিটে ফাতেমার ঘর আলো করে আসে এক ছেলে সন্তান। আগের দিন ছেলে সন্তানের জন্ম আর পরের দিন পরীক্ষা- এ নিয়ে ফাতেমা বেশ খানিকটা চিন্তিত ছিলেন। ভাবলেন পরিক্ষা দিতে না পারলে ১ বছর বিফলে যাবে। তাই  অনেক চিন্তা ভাবনা করলেন। বুঝতে পারছিলেন না ঠিক কি করবেন। অবশেষে অনেক চিন্তা ভাবনা করে এক আত্মীয়কে সাথে করে চলে আসলেন পরীক্ষা দিতে। পুরো তিন ঘন্টা পরীক্ষায় শিশুটিকে রাখেন সাথে আসা ফাতেমার আত্মীয়।

ফাতেমার এই সংগ্রামে অবাক হন কলেজের শিক্ষকরাও। পুরো দীঘিনালা উপজেলা জুড়ে একটিমাত্র কলেজ থাকায় সকল ছাত্র-ছাত্রীকেও এখানে এসেই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। ফাতেমার স্বামী মো. আব্দুর রহমানও খুশি স্ত্রীর এই উদ্যোমী কাজে। তার স্বামী পেশায় দিঘীনালা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক। ফাতেমা আক্তার বলেন, ‘আমার পরবর্তী পরীক্ষা ১০ মার্চ। ৫ মার্চ (বুধবার) আমি যদি নিজে সাহস করে পরীক্ষাটা না দিতাম তবে একটা বছর আমি পিছিয়ে পড়তাম।’

এরকম একটি সাহসী ও সংগ্রামী কাজের প্রশংসায় ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন ফ্যান পেইজে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ফাতেমা আক্তারকে শ্রদ্ধা জানিয়ে পোস্ট করা হয়।

  আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রাক্কালে ফাতেমার মতো সাহসী নারীকে পার্বত্যনিউজের পক্ষ থেকেও অনেক শুভেচ্ছা।

Exit mobile version