parbattanews

 এক যুগ ধরে সেতুর বাতি বিকল, যাতায়তে দুর্ভোগ

চকরিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের চকরিয়ার শেষপ্রান্তে ও দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর প্রবেশদ্বারের মিলিত স্থানে নির্মিত বদরখালী-মহেশখালী সেতু। সেতুতে রাতের বেলায় জনসাধারণ যাতায়াতে সুবিধার্থে ৬০টি লাইটপোস্ট স্থাপন করেছিল সড়ক ও জনপদ বিভাগ। দীর্ঘ এক যুগের কাছাকাছি সময় ধরে সব বাতি বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। সেতু উদ্বোধনের দিন লাইটপোস্ট গুলি ঘন্টা খানেক জ্বালানোর পর পরই বিকল হয়ে যায় ওই লাইটপোস্ট।

এত বছর পার হলেও এখনো স্থানীয়রা দেখেনি কোন ধরণের আলোর মুখ। সেতুতে স্থাপনাকৃত লাইটপোস্ট দীর্ঘ সময় ধরে বিকলবস্থায় পড়ে থাকায় এতে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটারও আশঙ্কা করেছে সচেতন মহল।

স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়ক ও জনপদ বিভাগের খামখেয়ালী ও উদাসীনতায় বর্তমানে সেতু জুড়ে ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে। জনগুরুত্বপূর্ণ সেতুর এ বিষয় নিয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশ হলেও কর্ণপাত করছেনা সড়ক বিভাগের কর্তা ব্যক্তিরা। সেতু দিয়ে নিয়মিত যাওয়া-আসা করছে দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে চলমান দেশের সবচেয়ে বড় বড় ছয়টি মেগাপ্রকল্পের বিভিন্ন ভিআইপি কর্মকর্তারা। এতে করে আজো সড়ক ও জনপদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঘুম ভাঙছে না বলে ভুক্তোভোগীদের অভিযোগ।

সরেজমিনে দেখাগেছে, বদরখালী-মহেশখলী সেতুতে বর্তমানে কোনো বৈদ্যুতিক আলো সরবরাহ না থাকায় সন্ধ্যার পরই অন্ধকার নামার সাথে সাথে সেতুতে চলাচলকারী জনসাধারণ আতঙ্ক নিয়েই চলাফেরা করতে বাধ্য হচ্ছেন। সেতুর লাইটপোস্ট বিকল হওয়ার সুযোগে সেতুর উপর জমায়েত ঘটে স্থানীয় আশ-পাশ এলাকার মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবী চক্রের লোকজনের।

তাছাড়া জনগুরুত্বপূর্ণ এ সেতুতে পুলিশের কোন ধরণের নজরদারি না থাকার কারণে রাতের আঁধারে সেতু এলাকায় একশ্রেণির বখাটে আর ছিনতাইকারী দুরাত্মা বেড়ে যায়। যার ফলে বদরখালী সেতুতে ঘুরতে আসা বিনোদন প্রেমীরা পায়ে হেঁটে সেতু পার হলে কিংবা ছোট যানবাহন মধ্যে ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সা, টেম্পু, মোটরসাইকেল ও সিএনজি গাড়ি যাতায়াত করলে তাদের অনেকে সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে দুষ্কৃতকারীরা।

সেতুর পশ্চিম প্রান্তে দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী এলাকায় প্রবেশদ্বারে ছিনতাই, ডাকাতিসহ বড় ধরণের অসংখ্য নানা ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। সেতুর উপর স্থাপনাকৃত বিকল হওয়া লাইটপোস্টে আলো সরবরাহ করে সচল করলে অন্তত প্রায় ১কি.মি আশ-পাশের জনগোষ্ঠী এ ধরণের ঘটনা থেকে রেহায় পাবে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।

দীর্ঘদিন ধরে বদরখালী-মহেশখালী সেতুতে বৈদ্যুতিক আলোবিহীন ঘুঁটঘুঁটে অন্ধকার বিরাজ করায় সাধারণ পথচারীরা গাড়ির নিচে চাপা পড়ে যে কোনো সময় বড়ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন। এ অবস্থায় সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) চরম উদাসীন ভূমিকা পালন করে আসছে।

এ ব্যাপারে বদরখালী সেতুতে টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের ইজারাদার মো. নাজিম উদ্দিন কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বদরখালী সেতুটি এক বছরের জন্য ইজারা নিয়ে টোল আদায় করে আসছি। সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ কিংবা সংস্কারের দায়িত্ব সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

তিনি জানান, এই সেতু দিয়ে সরকার বিপুল অংকের রাজস্ব আয় করলেও টোল আদায়ের জন্য স্থায়ী কোনো টোলঘর বা টোল আদায়কারীসহ সাধারণ যাতায়াতকারী নারী পুরুষের ব্যবহারের জন্য সামান্য একটি বাথরুম পর্যন্ত করা হয়নি।এ ছাড়া সেতুতে দীর্ঘদিন ধরে লাইটপোস্টিং গুলো অকার্যকর হয়ে পড়ে থাকার কারণে যাত্রীদের মতো আমরাও নানা দুর্ভোগ নিয়ে কাজ করছি।

এ ব্যাপারে কক্সবাজারের সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়ুয়া কাছে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, মহেশখালী মাতারবাড়িতে সরকারের গৃহীত প্রকল্পের কাজ শুরু করার সাথে সাথে ওই কাজের সামঞ্জস্যতা রেখে সেতুর লাইটপোস্ট গুলো খুব শীঘ্রই বৈদ্যুতিক সংযোগ ব্যবস্থা করে লাইট জ্বালানোর উদ্যোগ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

Exit mobile version