parbattanews

ওপারে চার রাত গুলির শব্দ নেই, স্বস্তি ফিরছে সীমান্তে

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তা ও বিদ্রোহীদের মধ্যে চলমান সংঘাত অস্থিরতার রেশ বাংলাদেশ সীমান্তে কমে এসেছে।

সোমবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তের লোকজন শান্তিতে ঘুমিয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে ওপারের গোলাগুলি ও ভারী অস্ত্রের বিকট শব্দের আওয়াজ শোনা যায়নি। এতে কয়েকদিনের অশান্ত পরিবেশ ও ভয়ভীতি অনেকটা কেটে উঠছে।

অপরদিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এবং কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের উত্তর দিকের সীমান্তে ৮-৯ দিন ধরে বড় ধরনের কোনো বিস্ফোরণ বা সংঘাতের খবর পাওয়া যায়নি।

সীমান্তের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী আরকান আর্মির সঙ্গে সংঘাত এখন রাখাইনের মংন্ডু শহরের দিকে অগ্রসর হয়েছে। এতে বাংলাদেশ সীমান্তে গোলাগুলি কমে এসেছে। সীমান্তের বেশির ভাগ বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) চৌকি বিদ্রোহীরা নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুস সালাম বলেন, কয়েক দিন ধরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের আশপাশের এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলি হচ্ছে। পাশাপাশি এতে বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছিল টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা। সোমবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত গোলাগুলি বা বিকট বিস্ফোরণ শোনা যায়নি।

সাবরাং নয়াপাড়ার বাসিন্দা সৈয়দ আলম ও শাহপরীর দ্বীপ বাজারপাড়ার আবদুল জলিল বলেন, গত কয়েক দিন টেকনাফ সীমান্তের মানুষের ঘুম ভেঙেছে বিকট শব্দে। এপারের মাটি কেঁপে উঠেছে। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের যেমন-তেমন, ভয় পেয়ে শিশুদের ঘুম ভেঙেছে। গত চার রাত শান্তিতে ঘুমিয়েছে লোকজন।

স্থানীয় লোকজন বলেন, টেকনাফ সীমান্তের উত্তরাংশে হোয়াইক্য এবং পূর্ব ও দক্ষিণাংশে সাবরাংয়ের বিপরীতে নাফ নদীর ওপারে রাখাইন রাজ্য। কয়েকদিন ধরে সেখান থেকে গুলির শব্দ আসছিল। স্থানীয় লোকজনের ধারণা, রাখাইন রাজ্যের মংডুর শহরের পাশের বলিবাজার, মেগিচং, কাদিরবিল, নুরুল্লাহপাড়া, মাংগালা, নলবন্ন্যা, ফাদংচা ও হাসুরাতা এলাকায় সে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর লড়াই চলছে।

এদিকে মিয়ানমারে সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে অনুপ্রবেশের আশঙ্কায় নাফ নদী এলাকায় টহল জোরদার করেছে বিজিবি ও কোস্টগার্ড। নিয়মিত টহল বাড়ানো হয়েছে। স্থলভাগেও পুলিশের টহল ও চারটি বিশেষ দল কাজ করছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেন কেউ অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ সময়ে বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

তিনি বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে বিজিবি, কোস্টগার্ড ও পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। সীমান্তে বসবাসরত মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

Exit mobile version