ওয়াদুদ ভুঁইয়াকে বহিষ্কারের খবরটি মিথ্যা ও বানোয়াট- রুহুল কবির রিজভী: আইনী ব্যবস্থা নেবেন ওয়াদুদ ভুঁইয়া
পার্বত্যনিউজ রিপোর্ট:
খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি সভাপতি ও সাবেক এমটি ওয়াদুদ ভুঁইয়াকে জেলা বিএনপি’র সভাপতি পদ থেকে বহিস্কারের খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক রিজভী আহমেদ পার্বত্যনিউজকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানিয়েছে, ওয়াদুদ ভুঁইয়ার বহিস্কারাদেশের একটি চিঠি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর স্বাক্ষরসহ আজ দুপুরে খাগড়াছড়িতে পৌঁছে। ১৬ ফেব্রুয়ারী স্বাক্ষর করা এই চিঠিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গঠনতন্ত্রের ৫গ ধারা মোতাবেক দলীয় প্রাথমিক সদস্যপদ সহ সকল স্তর থেকে তাকে বাহিস্কার করা হলো। মুহুর্তের মধ্যেই এ চিঠির শত শত ফটোকপি মানুষের হাতে হাতে বিলি হতে থাকে। এর একটি চিঠি পার্বত্যনিউজের কাছেও পৌঁছায়।
পার্বত্যনিউজ চিঠিটি পাওয়ার পর ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য। ওয়াদুদ ভুইয়াকে বহিস্কার সম্বলিত কোনো চিঠিতে তিনি স্বাক্ষর করেননি। বরং তার বড় ভাই বেলায়েত হোসেন ভুঁইয়াকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বহিস্কার করা হয়েছে মর্মে একিট চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ চিঠিতে তার প্রদত্ত স্বাক্ষর কপি করে ওয়াদুদ ভু্ইয়ার বহিস্কারাদেশ সম্বলিত একটি চিঠি সৃষ্টি করে তা প্রচার করছে এ চক্রটি। রিজভী আরো বলেন, ওয়াদুদ ভুইয়া আমাদের এমপি ছিলেন। তাকে বহিস্কারের কোনো সম্ভাবনা নেই।
ওয়াদুদ ভুঁইয়ার বিবৃতি
এ ব্যাপারে ওয়াদুদ ভুইয়া পার্বত্য নিউজকে বলেন, একটি স্বার্থন্বেষী রাজনৈতিক মহল আগামী ১৯ তারিখের উপজেলা নির্বাচনে ভোটারদের বিভ্রান্ত ও আমাদের নেতাকর্মীদেরকে মানসিকভাবে দুর্বল করে আমাদের প্রার্থীদের ভোট নষ্ট করে, তাদের প্রার্থীদের পক্ষে ফায়দা হাসিলের জন্য, ‘আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে’ মর্মে একটি ভুয়া, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন কাগজের ফটোকপি জেলার বিভিন্ন স্তরে প্রচার করছে।
তিনি বলেন, মূলত রামগড় উপজেলায় আমাদের দল সমর্থিত একক প্রার্থী শহীদুল ইসলাম ফরহাদের বিপক্ষে স্থানীয় বিএনপি নেতা, রামগড় উপজেলার সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন ভূইয়া বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায়, দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডের দায়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি’র কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে যুগ্ম মহাসচিব (দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত পত্রে বেলায়েত হোসেন ভূইয়াকে দলের সকল পদ ও সাধারণ সদস্যপদ হতে বহিষ্কার করা হয়। বেলায়েত হোসেন ভূইয়াকে বহিষ্কারের উক্ত পত্রটি হুবহু রেখে, কেবলমাত্র ‘বেলায়েত হোসেন ভূইয়া’র নামের স্থলে ফটোশপে ম্যানুপুলেট / এডিট করে ‘ওয়াদুদ ভূইয়া’ নামটি বসিয়ে দিয়ে, তা ফটোকপি করে জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরির অপচেষ্টা করছে মহলটি। অনেক হলুদ ও দলভুক্ত সাংবাদিক এই বানোয়াট বহিষ্কারের ফটোকপি কোনরূপ যাচাই-বাছাই ছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার করছে। শুধুমাত্র আগামী উপজেলা নির্বাচনে ভোটারদের বিভ্রান্ত করে মহলবিশেষের পক্ষের প্রার্থীদের নির্বাচনী বৈতরণী পার করানোর জন্যই তারা এই জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে।
ওয়াদুদ ভুঁইয়া বলেন, আমার বক্তব্যের সত্যতা সম্পর্কে কারো সন্দেহ হলে, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় দপ্তরে যোগাযোগ করে জেনে নেবার আহবান জানাচ্ছি। বিষয়টি নিছক উপজেলা নির্বাচনী গুজব। উল্লেখ্য এই সময়ে উপজেলা নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকেই কেবল বহিষ্কার করছে বিএনপি। আমি তো উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী নই বা দল আমাকে বহিষ্কারের মত এমন কোন ঘটনার অবতারণা হয়নি। সুতরাং আমাকে বহিষ্কারের কোন কারনই নেই। এটি হাস্যকর একটি প্রোপাগান্ডা।
তিনি আরো বলেন, আমার রাজনৈতিক ইমেজে যাদের প্রার্থীদের ভরাডুবির আশংকা দেখা দিয়েছে, তারাই এই হাস্যকর অপপ্রচারে জড়িত। যারা এই মিথ্যে প্রচারণার সাথে যুক্ত, তাদেরকে চিহ্নিত করার কাজটি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। ম্যানুপুলেট করে অনলাইন বা বাহিরে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের অভিযোগে ‘আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা’ অনুসারে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যাবস্থা গ্রহণের কথা আমি ভাবছি।
ভালো মানুষের পেছনে শত্রু থাকেই