parbattanews

কক্সবাজারের দুই কিশোর থাইল্যান্ডের জঙ্গলে উদ্ধার

Cox_Human-Thailand-pic

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার:
থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে শঙ্খলা প্রদেশের জঙ্গল থেকে গত ৯ মে উদ্ধার হওয়া ১২৩ বাংলাদেশির মধ্যে কক্সবাজারের দুই কিশোর রয়েছে। ১০ মে রবিবার বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ছবি দেখে তাদের স্বজনেরা পরিচয় নিশ্চিত করেছেন।

উদ্ধার দুই কিশোর হলো- কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামপুর নতুন অফিসপাড়ার ফরিদুল আলমের ছেলে দেলোয়ার হোসাইন ও নাজমুল হক নজুর ছেলে সেলিমুল হক রিফাত। ছবিতে দ্বিতীয় সারিতে বসা সাদা গেঞ্জিপরিহিত ছেলেটি দেলোয়ার এবং তার বাম পাশে কান চুলকানোর ভঙ্গিমায় থাকা ছেলেটি রিফাত।

তারাসহ অন্যান্য বাংলাদেশীদের ক্ষুধার্ত ও ক্লান্ত দেখে উদ্ধারের পর রাত্তাফুম জেলার একটি আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যায় দেশটির আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। সেখানে তাদেরকে খাবার দেয়া হয় বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।

এ দিকে পাচারের শিকার ছেলেদের ছবি সম্বলিত সংবাদ দেখে স্বজনের মাঝে কান্নার রোল পড়ে যায়। পাড়া পড়শীরা ছুটে আসে খবরের পাতায় চোখ বোলাতে। জানতে চায়- তারা কোথায় আছে, কেমন আছে। কিভাবে দালালের কবল থেকে মুক্ত হলো। তাদের গ্রামের বাড়িতে গেলে দেখা যায় অন্য রকম পরিবেশ। শত শত মানুষ ভীড় করছে। হাতে হাতে পত্রিকা। সংবাদ ও ছবি দেখতে ওপচে পড়া ভীড়। স্বজনের চোখে কান্নার জল। যে কোন মূল্যে দেলোয়ার ও রিফাতের ফেরত চান তাদের মা-বাবা। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্টমহলের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন।

পাচারের শিকার দেলোয়ার হোসেনের মা দিলফিরোজ বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে অসুস্থ। গায়ে জ্বর নিয়ে সাত দিন বেডে শুয়ে ছিল। কোন খাবার মুখেও নেয়নি। হঠাৎ করে বাড়ি থেকে ওধাও। কোথাও খোঁজ নেই। সম্ভাব্য সব জায়গাতে তার সন্ধান চালিয়েছি। ছেলে চিন্তায় আমার দু’চোখে এক মাস ধরে ঘুম নেই। অবশেষে পত্রিকার লাল হরফে ছাপানো ছবিতে আমার ছেলে দেলোয়ারকে দেখে আঁচকে ওঠি। ছেলেকে ফেরত ছাড়া এখন আমার কোন চাওয়া নেই।’

লবণ মাঠে কর্মরত অবস্থায় ছেলের খবর পেয়ে সারা শরীরে ঘাম নিয়ে বাড়িতে ছুটে আসেন দেলোয়ারের পিতা ফরিদুল আলম। পত্রিকার পাতায় ছবি দেখে চোখের পানি ফেলছেন। এ সময় তিনি একটিই আকুতি করেন, ‘যে কোনমূল্যে আমার ছেলেকে ফেরত চাই।’

উদ্ধার হওয়া অপর কিশোর সেলিমুল হক রিফাতের পিতা নাজমুল হক নজু বলেন, ‘এমন কোন জায়গা নেই, যেখানে ছেলের সন্ধানে যায়নি। ছেলের কোন খবর না পেয়ে দিশেহারা আমি। তার মাতো তখন থেকেই পাগল। ছেলের ছবি বুকে চেপে কান্না ছাড়া আর কিছুই নেই। সঠিক হদিস দিতে পারে এমন লোকেরও জানা নেই। অবশেষে পত্রিকার মাধ্যমে আমার ছেলে উদ্ধার হয়েছে জেনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কমে আসতে শুরু করে।

তিনি আরো বলেন, ‘আমার ছেলেকে ফিরে পাওয়া ছাড়া আর কোন দাবি নাই। এ জন্য সকলের সহযোগিতা চাই।’

Exit mobile version