parbattanews

কক্সবাজারের বরইতলী গ্রাম এখন ‘গোলাপ পল্লী’

গোলাপ শুধু প্রেম প্রস্তাবে সীমাবদ্ধ নয়। এটি ভালবাসা ছাড়াও উদ্বেগ ও কোমলতার প্রতীক। আর সেই গোলাপের সৌন্দর্যের ডালি নিয়ে বসেছে কক্সবাজারের চকোরিয়া উপজেলার বরইতলী গ্রাম। এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস গোলাপ সহ নানা ফুলের চাষ।

বরইতলী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, তরতাজা গোলাপ ফুলের নিখাঁদ সৌরভ আর নান্দনিকতা। কোনোটা লাল, কোনটা সাদা, কোনটা হলুদ আবার কোনটা খয়েরি। সারারাত শিশিরে ভেজা গোলাপগুলো জানান দিচ্ছে অপরূপ সৌন্দর্য।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, বরইতলী ইউনিয়নের নতুন রাস্তার মাথা, নামারপাড়া, মাইজপাড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় গোলাপের চাষ করা হয়। ওই ইউনিয়নে এ বছর প্রায় একশো একর জমিতে গোলাপের আবাদ করেছে ৯০ জন কৃষক। একেকটি বাগানে প্রতিদিন ফুল ফোটে ৩ হাজার থেকে অন্তত ৬ হাজার। এসব গোলাপের অধিকাংশ বাণিজ্যিকভাবে যায় চট্টগ্রামে। তবে বিশেষ দিনগুলোতে এসব ফুলের চাহিদা থাকে বেশি। গোলাপের পাশাপাশি তারা গ্ল্যাডিওলাসের চাষ করে। দিনের শুরুতেই বাগান থেকে ফুল তুলে বিক্রির জন্য ফুল কাটা, বাছাই আর বাঁধছেন চাষীরা। প্রতিটি বাগানে কাজ করছেন ৫-৬ জন শ্রমিক। তবে করোনার সময় ফুলচাষে কিছুটা লোকসান গুনতে হলেও বর্তমানে তা কাটিয়ে উঠেছে চাষীরা।

বরইতলী গোলাপবাগান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম বলেন, তাদের ওখানে ৬০-৭০ টা বাগান আছে। এই বাগানের মাধ্যমে মালিক, কর্মচারীসহ অনেকের জীবিকা নির্বাহ করে। এক একর জমিতে সকল খরচ বাদ দেওয়ার পরেও ৩ লাখ টাকা আয় হয়।

কৃষি বিভাগ থেকে জানা যায়, রবইতলীর একশো একর বাগানের গোলাপ বিক্রি করে প্রতি বছর আয় হয় ৩ কোটি টাকার বেশি। আগে প্রায় ৩শ একর জমিতে গোলাপের আবাদ হলেও করোনার থাবা, কাগজ ও প্লাস্টিকের ফুলের সহজপ্রাপ্যতাসহ নানা সংকটে কিছুটা কমেছে সেই আবাদ।

বরইতলীর উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, এখানে কৃষকের সংখ্যা প্রায় ৮০-৯০ জনের মতো। আগে জমির পরিমাণ বেশি ছিল, সে সময় কৃষকের সংখ্যাও বেশি ছিল। পর্যায়ক্রমে করোনা, কাগজের ফুল বের হওয়ায় ও কৃষকরা গোলাপের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার কারণে দিন দিন এই গোলাপ চাষ কমে যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, আসন্ন পহেলা বৈশাখ, বসন্ত উৎসব, ভালোবাসা দিবস ও একুশে ফেব্রুয়ারিকে সামনে রেখে ১ কোটি টাকার ব্যবসা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

 

Exit mobile version