কক্সবাজারের স্থানীয়দের চাকুরী না দিলে একটি হোটেলও চলতে দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল।
তিনি বলেন, কক্সবাজারের অধিকাংশ আবাসিক হোটেলে বাইরের কর্মকর্তা। স্থানীয়দের চাকুরী হয় না। চাকুরী নিতে গেলে যোগ্যতা সত্ত্বেও দেখানো হয় নানা অজুহাত। চরম বৈষম্যের শিকার কক্সবাজারের শিক্ষিত যুবক-যুবতিরা। এমন আচরণ আর মেনে নেওয়া হবে না।
এমপি কমল বলেন, হোটেল কর্তৃপক্ষকে আগামী ৬ মাস সময় দিলাম। স্থানীয়দের চাকুরী না দিলে একটা হোটেলও চালতে দেয়া হবেনা।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত যুবক-যুবতীদের জন্য ইউএসএআইডি ইয়েস প্রকল্পের আওতায় ‘জব ফেয়ার’ উদ্বোধনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি কমল এসব কথা বলেন।
ইয়ং পাওয়ার ইন সোস্যাল একশন (ইপসা) এর উদ্যোগে আয়োজিত চাকুরীর মেলায় সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি বলেন, এনজিওতে ইন্টারভিউর নামে তামাশা করা হয়। আমাদের মেধাবী ছেলেমেয়েগুলোকে অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। বিসিএসের চেয়েও কঠিনভাবে পরীক্ষা নেয় এনজিওরা।
সরকার দলীয় এই সংসদ সদস্যের প্রশ্ন, রোহিঙ্গাদের বাথরুম গুনতে এত কিসের পরীক্ষা? বিদেশীরা ইন্টারভিউ কেন নেবে? অনার্স পাশ হলেই যোগ্য। পরীক্ষার নামে তামাশা না করে লটারীর মাধ্যমে বাছাই করুন।
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্থানীয়দের চাকুরী ও বৈষম্য দূর করতে এনজিওসমূহের সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান সাইমুম সরওয়ার কমল।
স্থানীয় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পড়ালেখা কর। নিজেদের যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলো। পরনির্ভর হবে না। নিজের পায়ে দাঁড়াতে শেখ। একদিন অনেক বড় হবে। তোমরাই আমাদের আগামীর দেশ।
ইপসার উপপরিচালক ও কক্সবাজার আঞ্চলিক প্রধান খালেদা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায়, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান, কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার, রিলিফ ইন্টারন্যাশনালের ইয়েস কার্যক্রমের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাহানা শারমিন।
ইপসার রোহিঙ্গা রেসপনস কার্যক্রমের প্রধান ও সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন- সিসিডিবির প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর শেখ মাকসুদুল হাসানও এমপাওয়ারের সিনিয়র ব্যবস্থাপক রাজিব হাসান মজুমদার।
উল্লেখ্য, ইউএসএআইডির অর্থায়নে রিলিফ ইন্টারন্যাশনালের কারিগরি সহায়তায় সহযোগী সংস্থা ইপসা, এমপাওয়ার ও সিসিডিবির যৌথ উদ্যোগে সামাজিক সংহতি সুরক্ষায় কক্সবাজারের ৪টি উপজেলার জন্য ‘ইয়ুথ এন্টারপ্রেনারশীপ এন্ড এম্পাওয়ারমেন্ট সাপোর্ট (ইয়েস) এক্টিভিটি ফর কক্সবাজার’ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
এতে ১৪-৩৫ বছরের স্থানীয় নারী ও পুরুষ যুবদের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূূল্যে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান ও সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলাই ইয়েস কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য। ইয়েস প্রকল্পের প্রশিক্ষিত যুবকদের চাকুরীদাতা প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগসূত্র সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘জব ফেয়ার ’বা‘ চাকুরী মেলা’র আয়োজন করা হয়।
ইপসার প্রোগ্রাম ম্যানেজার ড. সাখাওয়াত উল্লাহ চৌধুরী জানান, জব ফেয়ারে কক্সবাজারের তারকা মানের হোটেল লং বীচ, নিসর্গ হোটেল এন্ড রিসোর্ট, হোটেল বেস্ট ওয়েস্টার্ন, লাইটহাউস ফ্যামিলি রিট্টিট, হোটেল আল আমিন, হোটেল আইল্যান্ড ডাইনেস্টি, টুর এন্ড ইভেন্ট সান ডান্সার, ক্যাফে এন্ড রেস্টুরেন্ট নীলা এবং টেইলরস, ফেব্রিক্স এন্ড বুটিকস মাথিনু বিউটিপার্লার মেলায় অংশ গ্রহণ করে। ইয়েস প্রকল্পের অধীনে কারিগরি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৭৫ জন যুবক-যুবতীর জন্য শিক্ষানবীস সুযোগ ও চাকুরীর আশ্বাস দিয়েছে মেলায় অংশ গ্রহণকরী প্রতিষ্ঠানগুলো।