parbattanews

কক্সবাজারে খাস জায়গায় নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু

Cox OvijanCox Ovijan (4) copy

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার:

পর্যটন নগরী কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন সরকারি খাস জায়গায় নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছে প্রশাসন। এতে অভিযানের প্রথমদিনে বেশ কয়েকটি অভিজাত প্রতিষ্ঠানের অবৈধ দখলে থাকা এক একরের বেশি জায়গায় নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। সেই সাথে দখলমুক্ত হওয়া জায়গা কাঁটা তারের ঘেরা দিয়ে সীমানাও নির্ধারণ করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে কক্সবাজার শহরের সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন হোটেল-মোটেল জোন এলাকায় নির্মিত এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রশাসন অভিযান চালায় বলে জানান, কক্সবাজার সদর উপজেলার ইউএনও মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম।

অভিযানের প্রথমদিনে অভিজাত হোটেল সী-গার্লের ৫০ শতক, প্রাসাদ প্যারাডাইজের ২৫ শতক এবং তরঙ্গের ২৫ শতক অবৈধভাবে দখলে থাকা জায়গায় নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদ করে উদ্ধার করা হয় জানান তিনি। ইউএনও নজরুল বলেন, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত লাগোয়া সরকারি খাস জায়গা অবৈধভাবে দখল করে বিভিন্ন ধরণের স্থাপনা নির্মাণ করেছিল বেশ কয়েকটি অভিজাত প্রতিষ্ঠান। এতে পরিবেশের ক্ষতির পাশাপাশি সমুদ্র সৈকতেরও সৌন্দর্য্যহানি ঘটে। স্থানীয় বিভিন্ন পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে দখলমুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছিল।

এর প্রেক্ষিতে বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসন সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্ট থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও সরকারি খাস জায়গা দখলমুক্ত করতে অভিযান শুরু করে। এতে অভিযানের প্রথমদিনে অন্তত এক একরের বেশি সরকারি জায়গার উপর নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং দখলমুক্ত করা হয়। পাশাপাশি দখলমুক্ত হওয়া জায়গা কাঁটা তারের ঘেরা দিয়ে সীমানাও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

ইউএনও নজরুল জানান, সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্ট থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত অন্তত ৪০টির বেশি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে সরকারি খাস জায়গা দখল করে।

এ সবকয়টি প্রতিষ্ঠানের অবৈধ দখলে থাকা জায়গার উপর নির্মিত সব স্থাপনা উচ্ছেদ এবং দখলমুক্ত করার অভিযান অব্যাহত থাকবে। এদিকে প্রশাসনের অভিযানে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটক ও স্থানীয়রা সাধুবাদ ও প্রশংসাযোগ্য বলে মন্তব্য করলেও উচ্ছেদের কবলে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তৃপক্ষ আগে-ভাগে নোটিশ দিয়ে অবহিত না করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কক্সবাজার পিপলস্ ফোরামের সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বেশ কয়েকটি এলাকাকে ‘প্রতিবেশ সংকটাপন্ন’ (ইসিএ) বলে ঘোষণা করেছে।

সরকারি খাস দখল করে গড়ে উঠা বেশ কিছু স্থাপনা ইসিএ এলাকার অন্তর্ভুক্ত। পাশাপাশি সমুদ্র সৈকত লাগোয়ো অপরিকল্পিতভাবে অসংখ্য স্থাপনা গড়ে উঠায় পরিবেশের পাশাপাশি সৈকতেরও সৌন্দর্য্যহানিও ঘটে। দীর্ঘদিন পর হলেও প্রশাসন জনদাবির মুখে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করার বিষয়টি সাধুবাদ ও প্রশংসাযোগ্য বলে মনে করেন তিনি।

উচ্ছেদের কবলে পড়া অভিজাত হোটেল সী-গার্লের ম্যানেজার হারুন অর রশিদ বলেন, আমরা অভিযানে প্রশাসনকে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেছি।

তবে প্রশাসন যদি আগে-ভাগে অভিযানের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে অবহিত করতো তাহলে নির্মিত স্থাপনাগুলোর ক্ষতি না হওয়ার মতো করে নিজেরা সরিয়ে ফেলতে পারতাম।

এ নিয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) পংকজ বড়ুয়া বলেন, সরকারি খাস জায়গা অবৈধভাবে দখল করে নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদে আগে-ভাগে নোটিশ দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এ অভিযান চালানো হয়েছে।

তিনি জানান, সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্ট থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে উঠা সবধরণের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রশাসন অভিযান অব্যাহত রাখবে।

Exit mobile version