parbattanews

কক্সবাজারে ঝুঁকিপূর্ন শিশুদের পুর্নবাসন কেন্দ্র নিয়ে অপপ্রচার

কক্সবাজার

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

সারাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের ঝুঁকি হ্রাস করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে নানা ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধিনে কক্সবাজারেও ঝুঁকিপূর্ন শিশুদের জন্য স্থাপন করা হয়েছে পুনর্বাসন কেন্দ্র। যেখানে ঝুঁকিপূর্ন শিশুদের থাকা, খাওয়া, প্রশিক্ষণ ও লেখাপড়াসহ নানাভাবে সেবা প্রদান করা হচ্ছে। কিন্তু কিছু অসাধু লোকজন এই পুর্নবাসন কেন্দ্র সম্পর্কে নানা অপ-প্রচার চালাচ্ছে। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে এই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তিতে ফেলছে পুনর্বাসন কেন্দ্রে ঠাই পাওয়া ঝুঁকিপূর্ন শিশুদের অভিভাবক ও সাধারণ লোকজনকে। খোঁজ-খবর নিয়ে এইসব তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, চলতি বছরের জুলাই মাসে কক্সবাজারে আনুষ্ঠানিকভাবে ঝুকিপূর্ন শিশুদের জন্য স্থাপিত হয়েছে বালক ও বালিকা পুর্নবাসন কেন্দ্র। বালক পুর্নবাসন কেন্দ্রের অবস্থান শহরের ঝিলংজার নতুন জেল গেইট সংলগ্ন বাইপাস সড়কের পাল্স ভবন। আর বালিকা পুর্নবাসন কেন্দ্রের অবস্থান খুরুশকুল সড়কস্থ আনাস ভিলায়। দুই পুর্নবাসন কেন্দ্রে পথশিশুসহ ১৮৫ জন ঝুকিপুর্ন শিশু রয়েছে।

শুরু থেকে সবকিছু স্বাভাবিক থাকলেও গত কয়েকদিন ধরে পুর্নবাসন কেন্দ্রে বহিরাগত কয়েকজন লোক ও অভিভাবক এসে বিভ্রান্তিমূলক কথা বলছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলছেন, এই শিশুদের বর্হিবিশ্বে পাচার করা হবে। আবার কেউ বলছে তাদেরকে লেখা পড়ার নামে সরকার বর্হিবিশ্ব থেকে টাকা আয় করছে। এছাড়া অনেকে বলছে, ওখানে থাকা শিশুদের মগজ ধোলাই করা হচ্ছে। আর এসব কথা বলে কোমলমতি শিশু ও অভিভাবকদের মনে ভয় ভীতি তৈরী করা হচ্ছে। এতে বিভ্রান্ত হচ্ছেন অভিভাবকরা।

এসব তথ্য জানান, শেখ রাসেল ঝুঁকিপূর্ন শিশু প্রশিক্ষন ও পুনর্বাসন কেন্দ্র কক্সবাজার সার্ভিসেস ফর চিলড্রেন এট রিস্ক (স্কার) প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক জেসমিন আক্তার।

তিনি আরো জানান, পুর্নবাসন কেন্দ্রে পথশিশুসহ ঝুঁকিপূর্ন শিশুদের লেখাপড়াসহ সার্বিক সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ওখানে শিশুরা ভালই রয়েছে। তবে কয়েকদিন ধরে ৫-৬ জন অভিভাবক এসেছেন, যারা তাদের সন্তানদের পুর্নবাসন কেন্দ্র থেকে নিয়ে যেতে চান। তাদের অভিযোগ, তারা এলাকায় কয়েকজন লোকের কাছে শুনেছেন, তাদের শিশুদের সেবা প্রদান করা হচ্ছে বর্হিবিশ্বে প্রাচার করার জন্য।

এছাড়া এই শিশুদের দিয়ে পুর্নবাসন কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ সরকার থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এছাড়া আরো নানা কথা বলছে। পরে তাদেরকে মূল বিষয়টি বুঝিয়ে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। বিষয়টি তিনি উর্ধতন কর্মকর্তাকে জানালে, তারা অপপ্রচারকারীকে সনাক্ত কারার পরার্মশ দিয়েছেন। যাতে যাতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।

বালক পুর্ণবাসন কেন্দ্রে সন্তানকে দেখতে আসা রাবেয়া আক্তার বলেন, তার স্বামী নেই। এছাড়া ভিক্ষা করে ৩ সন্তানকে চালাতে পারছিলেন না। এমন সময় পুর্নবাসন কেন্দ্রে তার সন্তানকে দিতে পেরে তিনি খুবই আনন্দিত। তবে তার এলাকা সমিতি পাড়ার কিছু লোকজন আজে-বাজে কথা বলছেন পুর্নবাসন কেন্দ্র নিয়ে। তাই তার ভয় হচ্ছে সন্তানকে নিয়ে।

এ ব্যাপারে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কক্সবাজার এর সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেন, ভাল কিছু করতে গেলেই কিছু খারাপ লোক থাকে যারা ভাল কাজের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার করে। পুর্নবাসন কেন্দ্র নিয়ে এই বিষয়টিই হচ্ছে। এছাড়া কক্সবাজারে ঝুঁকিপূর্ন শিশুদের জন্য পুনর্বাসন কেন্দ্র পাওয়াটাই বড় কিছু। আর এই ভাল বিষয়টিকে স্বাগত না জানিয়ে যারা অপ-প্রচারে লিপ্ত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

Exit mobile version