কক্সবাজারে প্রকাশ্য দিবালোকে পাহাড়কাটার ‘উৎসব’ আটক ২ : ডাম্পার জব্দ
আবদুল্লাহ নয়ন, কক্সবাজার:
কক্সবাজারে প্রকাশ্য দিবালোকে রাতে-দিনে পাহাড় কাটার যেন ‘উৎসব’ চলছে। আওয়ামী লীগের নেতা পরিচয়ে শহরের সিটি কলেজ সংলগ্ন পাহাড়টি কাটা হচ্ছে টানা ৩ দিন ধরে। কক্সবাজার সিটি কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাথিন অংও ওই চক্রের সাথে যোগ দিয়ে পাহাড় কাটায় সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাই এমন অভিযোগ তুলেছেন।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তর ও পুলিশ রোববার দুপুরে যৌথ অভিযান চালিয়ে পাহাড় কাটাকালে দুই ব্যক্তিকে আটক ও মাটি বোঝাই একটি ট্রাক জব্দ করেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পাহাড় কাটার কাজে অত্যাধুনিক স্ক্রেবেটরসহ সবধরণের সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছে। অর্ধশতাধিক পাহাড়কাটা মাটি বহন করে নিয়ে যাচ্ছে। বিগত ৩ দিন ধরে পাহাড়কাটার এই ‘উৎসব’ চললেও জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ কিছু জানতেন বলে দাবি করা হয়েছে।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম জানান, পাহাড়কাটার এমন ভয়াবহ চিত্র তিনি ইতিপূর্বে কক্সবাজারে আর দেখেননি। পরিবেশ অধিদপ্তরকে না জানিয়ে পাহাড় কাটছিল স্থানীয় একটি ভূমিগ্রাসী চক্র।
তিনি দাবি করেন, কক্সবাজার সিটি কলেজ সংলগ্ন এই পাহাড়কাটায় কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাথিন অং ও স্থানীয় সাবেক জনপ্রতিনিধি শহিদুল্লাহ মেম্বার জড়িত রয়েছেন। কক্সবাজার সিটি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাথিন অং সাংবাদিকদের জানান, কক্সবাজারের উন্নয়নের স্বার্থেই তিনি পাহাড় কাটার পক্ষে। তিনি চান না কলেজের সামনে এই পাহাড় থাকুক।
‘পাহাড়টি সৌন্দর্যের জন্যও হানিকর’ দাবি করে তিনি বলেন, ‘শহর আওয়ামী লীগের নেতা নজিবুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে এই পাহাড় কাটা হচ্ছে।’
এদিকে পাহাড় কাটার দায়ে আটক শ্রমিক মুহাম্মদ উল্লাহ ও মোহাম্মদ ঈসমাইল জানান, ৩ দিন ধরে তারা শতাধিক শ্রমিক পাহাড় কাটছেন। এই ৩ দিন তারা কোন ভাবেই বাধার সম্মুখিন হননি। তাই অনেকটা উৎসবমুখর ভাবে তারা পাহাড় কাটছেন।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আজাদ মিয়া সাংবাদিকদের জানান, পাহাড়কাটার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। এখন জেনেছেন এবং এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনও প্রায় একই ধরনের কথা বলেন। তিনি জানান, পাহাড়কাটার সাথে জড়িত কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।