parbattanews

কক্সবাজারে ঠান্ডাজনিত রোগে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে

DSCN0076

নিজস্ব প্রতিনিধি:

কক্সবাজারে ঠান্ডাজনিত রোগে শিশুর মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। কেবল মাত্র গত ৩ দিনে মারা গেল আরো ৮ শিশু। আগে ১ সপ্তাহে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এ নিয়ে গত ১০ দিনে ২৫ শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে কক্সবাাজর সদর হাসপাতালে। ঠান্ডাজনিত রোগে এই শিশু মৃত্যুর ঘটনা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি বলে অভিমত প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্টরা।

সোমবার কক্সবাজার সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের দায়িত্বরতদের দেয়া তথ্য মতে, ২২ জানুয়ারি থেকে ২৫ জানুয়ারি গত ৩ দিনে নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে শিশু ভর্তি হয়েছিল ৬৭ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছে ৮ জন। মৃতদের মধ্যে ৩ জন ছিল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।

এছাড়া ২১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে দায়িত্বরত চিকিৎসক সৌরভ দত্তের দেয়া তথ্যে জানা যায়, ১৪ জানুয়ারি থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত এক সপ্তাহে নিউমোনিয়াসহ শীত জনিত রোগে শিশু মারা গেছে ১৭ জন। ওই ১ সপ্তাহে ভর্তি ছিল ৩৩৭ জন। আর মৃত শিশুর বেশিরভাগই হল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে। এছাড়াও ছিলো, সর্দি, কাঁশি, শ্বাসকষ্টজনিত রোগ। ১০ দিনে নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে শিশু ভর্তি হয়েছে ৪০৪ জন। আর মারা গেছে ২৫ জন শিশু।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডে রোগীর ভীড় বাড়ছে। বিছানা না পেয়ে শিশুদের অবস্থান নিতে হচ্ছে নিচে। তাদের অনেককে অক্সিজেন (নেব্যুলাইজার) দেয়া হচ্ছে।

রোগীর অভিভাবকদের অভিযোগ, যথাসময়ে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেনা রোগীরা। নার্স ও চিকিৎসকদের অবহেলার কারনেই এই সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া জরুরী অবস্থার শিশু রোগীদের আইসিইউতে (নিবিড় পর্যবেক্ষন কেন্দ্র) রাখার ব্যবস্থা নেই। যার ফলে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত রোগীর চাপের মধ্যে স্বল্প সংখ্যক চিকিৎসক ও নার্সরা সেবা প্রদানে ক্রটি রাখছে না। মৌসুম গত প্রভাবে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশিভাগই শিশু। শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে বাড়ছে এই রোগের সংখ্যা। যার ফলে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল থেকে শুরু করে বিভিন্ন হাসপাতালে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। সচেতনতার অভাবেই এত শিশু মারা যাচ্ছে। যেসব শিশু মারা যাচ্ছে তার বেশির ভাগই শিশুদের খুব আংশকাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে। ফলে উন্নত চিকিৎসার জন্য হয় অন্যত্রে রেফার করতে হচ্ছে। নয়ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালেই মারা যাচ্ছে। তবে বেশিরভাগ শিশু চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হচ্ছে।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাক্তার পুচনু জানান, মৌসুম গত প্রভাবে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এ ক্ষেত্রে অসুস্থ শিশুদের অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসা উচিত।

ঠান্ডজনিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় নির্দেশনা অনুযায়ী চিকিৎসকরাও সচেতন রয়েছে সেবা প্রদানে। তবে রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলে প্রচুর চাপে পড়ে যান সেবিকা ও চিকিৎসকরা। মূলত লোকবল স্বল্পতার কারনে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়। অনেক সময় ২ জন নার্সকে ৬০-৭০ জন রোগী সামাল দিতে হয়। ওই সময় অনেক রোগীর অভিভাবক ভুল বুঝে বসে তাদের দ্রুত সেবা প্রদান করতে না পারলে। এছাড়া আশঙ্কাজনক অবস্থার শিশুদের রাখার জন্য আইসিইউ নেই কক্সবাজার সদর হাসপাতালে। তবে নবজাতক শিশুদের চিকিৎসার জন্য রয়েছে স্কেনু (নবজাতক শিশুর বিশেষ সেবা ইউনিট)। যেখানে জন্ম থেকে ২৮ দিনের শিশুদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়।

Exit mobile version