কক্সবাজারে লবণ উৎপাদনে রেকর্ড, তবু সক্রিয় আমদানিকারক সিন্ডিকেট

fec-image

*২২ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন * মাঠ পর্যায়ে লবণের মণ সাড়ে চারশত টাকা * উৎপাদনের ৮৬ শতাংশ কক্সবাজারে * ২ হাজার ১৬২ লবণ চাষী প্রশিক্ষণ * ঋণ সহায়তা সাড়ে ৫৮ লাখ টাকা

এ বছর দেশে রেকর্ড পরিমাণ লবণ উৎপাদন হয়েছে। চলতি মৌসুমে লবণের চাহিদা ধরা হয় ২৩ লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয়েছে ২২ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন। যা দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ। প্রতিবছর নভেম্বর থেকে মে পর্যন্ত লবণ উৎপাদন মৌসুম।

অভিযোগ উঠেছে, রেকর্ড পরিমাণ লবণ উৎপাদনের পরেও সেই চিরচেনা আমদানিকারক সিন্ডিকেট আবারও তৎপর হয়েছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে ভুলভাল তথ্য দিয়ে লবণ আমদানির চেষ্টা করছে। তারা সুযোগ পেলে পুনরুজ্জীবিত লবণ শিল্প আবার ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাবে। শূন্য পড়ে থাকবে লবণ মাঠ। বদনাম হবে সরকারের।

লবণ শিল্পের উন্নয়নের কার্যালয় (বিসিক) কক্সবাজারের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. জাফর ইকবাল ভূঁইয়া জানান, মৌসুমের শুরুতে চাষীদেরকে উৎপাদনের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়। তাই আগ্রহভরে তারা মাঠে নেমেছে। যার ফলশ্রুতিতে রেকর্ড পরিমাণ লবণ উৎপাদন হয়েছে।

তিনি জানান, সরকারি বেসরকারি মিলে ২,১৬২ জন লবণ চাষীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সাড়ে ৫৮ লাখ টাকা ঋণ সহায়তা পেয়েছে ১০৭ জন লবণ চাষী। মৌসুমের শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লবণের বাজার ভালো ছিল। তাছাড়া বিসিকের ব্যাপক প্রচারণার ফলে লবণ চাষীরা উৎসাহ নিয়ে অগ্রিম উৎপাদনের কার্যক্রম শুরু করে। যে কারণে কাঙ্খিত পরিমাণ লবণ উৎপাদন হয়েছে। চাষী, মিলার, ব্যবসায়ী সবাই খুশি।

ডিজিএম জানান, লবণ শিল্পের উন্নয়ন কার্যালয়ের আওতাধীন ১২টি লবণ কেন্দ্রের মাধ্যমে বাংলাদেশের একমাত্র লবণ উৎপাদন এলাকা কক্সবাজার জেলার সাতটি উপজেলা এবং চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালীতে লবণ চাষে সার্বিক সহায়তা প্রদান করা হয়।

বিসিক কক্সবাজারের পরিদর্শক (উন্নয়ন) মো. ইদ্রিস আলী জানিয়েছেন, গেল মৌসুমে লবণ উৎপাদনের চাহিদা ধরা হয় ২৩ লাখ মেট্রিক টন। বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ২২ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন। আগের মৌসুমের মজুত ছিল ৪০ হাজার মেট্রিক টন।

এ বছর মন প্রতি লবণের উৎপাদনে গড় খরচ পড়েছে ২৭০ টাকা। চাষি পর্যায়ে সাড়ে চারশত টাকা বিক্রি হয়েছে। সে হিসাবে মন প্রতি লাভ ১৮০ টাকা।

চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও কক্সবাজার মিলে লবণ উৎপাদনের জমির পরিমাণ ৬৬ হাজার ৪২৪ একর। চাষী প্রায় ৪০ হাজার। দেশের মোট লবণ উৎপাদনের প্রায় ৮৬ শতাংশ কক্সবাজার জেলায়। চট্টগ্রাম জেলায় ১৪ শতাংশ।

লবণ চাষী বাঁচাও পরিষদের সভাপতি সাজেদুল করিম জানান, এবছর রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন হয়েছে। আমদানির প্রশ্নই উঠে না। কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে আমদানি করলে দেশীয় লবণ শিল্প ধ্বংস হবে।

তিনি বলেন, দেশে লবণের চাহিদা পূরণ করে রপ্তানির স্বপ্ন রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। সেই লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন