কক্সবাজারে শিশু অপহরণ: মুক্তিপণ না পেয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা : লাশ উদ্ধার

image_39522

আবদুল্লাহ নয়ন, কক্সবাজার:
কক্সবাজার শহরে অপহরণের ২২ ঘন্টা পর হৃদয় মনি নামে এক শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে সৈকতের কলাতলী সী ইন পয়েন্টে তার লাশ পাওয়া যায়। হৃদয় মনি (৭) কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়াছড়ার টুইট্যা পাড়া এলাকার নুরুল হকের পুত্র। সে স্থানীয় হাসান আলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণীর ছাত্র।
পারিবারিক সুত্র জানিয়েছে, হৃদয় মনি বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় স্কুল ছুটি শেষে বাসায় ফিরে আসে। মায়ের কাছ থেকে ১০ টাকা চেয়ে নিয়ে কিছু খেতে দোকানে যায়। ওই সময় মোটর সাইকেল যোগে আসা দুই ব্যক্তি হৃদয় মনিকে একটি ‘মজো’ পানীয় কিনে দেয়। তার সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে কক্সবাজার বিমান বন্দরের পাশ দিয়ে তাকে নিয়ে যায় ওই দুই ব্যক্তি।

পারিবারিক সুত্র আরো জানায়, এর কিছুক্ষণ পরই একটি মোবাইল থেকে ফোন করে নুরুল হকের কাছ থেকে তার পুত্রের ‘মুক্তিপণ’ বাবদ ২ লক্ষ টাকা দাবী করে।
ওই সময় নুরুল হক ‘টাকা কোথায়-কাকে দিবে’ বললে অপহরণকারীরা জানায়, গেঞ্জী পড়া একজন রিক্সা চালক যাবে। তার গেঞ্জীর গায়ে ‘এইট (৮)’ লিখা থাকবে। তাকে টাকা দিবে। এক পর্যায়ে নুরুল হক টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে বিকেলে আবার সে টাকা দেওয়ার কথা বললে অপহরণকারীরা প্রথমে ‘লিংক রোড’ ও পরে ‘সুগন্ধা পয়েন্টে’ টাকা নিয়ে আসতে হবে।
কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, অপহরণকারীদের দেয়া তথ্যমতে অপহৃত শিশুর পুত্র নুরুল হকের সাথে পুলিশ সুগন্ধা পয়েন্টে গিয়ে ওই রিক্সা চালককে আটক করে।
ধৃত রিক্সা চালক পুলিশকে জানিয়েছে, তাকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে ভাড়া করা হয়েছিল ‘মুক্তিপণ’র টাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য।

এদিকে রাতভর শিশু হৃদয় মনির খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে স্থানীয়রে দেয়া তথ্যমতে সৈকতের সী ইন পয়েন্ট থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ধারণা করছে, ভোরেই শিশুটিকে বালির ভিতর মুখ চেপে ধরে শ্বাস রুদ্ধ করে ‘হত্যা’ করেছে অপহরণকারীরা। কারণ শিশুটির মুখে প্রচুর বালি রয়েছে।
এদিকে নুরুল হক বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার কক্সবাজার সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেখানে তার অপর ভাই মোহাম্মদ আলমকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। শুক্রবা বিকেলের দিকে একটি হত্যা মামলা রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন