parbattanews

কক্সবাজারে সবজির বাজার চওড়া!

৬০ টাকা কেজি দরের নিচে কোনো সবজিই এখানকার বাজারে মিলছে না

সবজি যেন কক্সবাজারের সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। ৬০ টাকা কেজি দরের নিচে কোনো সবজিই এখানকার বাজারে মিলছে না। শাকের আঁটিও মিলছে না ৩০/৪০ টাকার নিচে। প্রতিদিনের খাবারে নূন্যতম সবজি যাদের আবশ্যিক এমন নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো রীতিমতো অসহায় হয়ে পড়েছে।

শুক্রবার কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে সবজির এমনই উচ্চমূল্য দেখা গেছে। বিক্রেতারা বলছেন, রোহিঙ্গা, অতিবর্ষণ আর বন্যায় বাজারে সবজির সরবরাহ ঘাটতির কারণে মূল্য অতিরিক্ত।
সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, ‘আমরা তো অসহায়। যেখানে এককেজি সবজি কিনতে হয়, সেখানে ৫০০ গ্রাম কিনে পরিবারের প্রয়োজন মেটাতে হচ্ছে।’

শুক্রবার শহরের বাহারছড়া বাজার, বড় বাজার, কালুর দোকান বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজার ভেদে কিছু সবজির মূল্যের তারতম্য থাকলেও মূলত ৬০/৭০ টাকার নিচে কোনো সবজিই মিলছে না। বাহারছড়া বাজারে প্রতিকেজি ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বেগুন, শসা, বরবটি, করলা, পটল, কচুর লতি।

কক্সবাজার সর্ববৃহৎ বাজার বড় বাজারের চেয়ে অন্য বাজারে প্রতি কেজি সবজি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারে শসা, বরবটি, করলা, কচুর লতির কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত। তবে সবজির মধ্যে আলু , মিষ্টি কুমড়া কিছুটা ক্রেতাদের হাতের নাগালে রয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০/৪৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার মূল্য প্রতি কেজি ৪০ টাকা।

এ দিকে সবজির পাশাপাশি মাছ-মাংসের বাজারেও রীতিমত আগুন। প্রতিকেজি গরুর মাংস এবং হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা দরে। খাসির মাংসের মূল্য ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি।

বাজারে লইট্ট্যা ছাড়া ১৫০ টাকার নিচে কোনো মাছ মিলছে না। ইলিশ ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, লাল কোরাল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, কৈ ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, রূপচাঁদা বড় ৯০০ টাকা ও ছোট ৮০০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৬০০ টাকা, লইট্ট্যা ১৫০ টাকা, কাতলা ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগী ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছে। সেখানে আবার দেশি মুরগী বলে পাকিস্তানি (কক) মুরগীও বিক্রি করছে।

কক্সবাজার বড় বাজারের পাইকারি সবজি ব্যবসায়ী আরফাত বলেন, ‘বন্যা ও অতিবর্ষণের কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ অর্ধেকে নেমে এসেছে। ফলে সবজির মূল্য কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।’ একই রকম বক্তব্য সব সবজি বিক্রেতার। তবে সবচেয়ে দুংখজনক বিষয় হলো রোহিঙ্গা বাজার। জেলার সব সবজি চলে যাচ্ছে ক্যাম্পে। তার কারণে স্থানীয়রা চড়াদামে সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার ক্রয়ে হিমশিম খাচ্ছে।

শহরের বাহারছড়া বাজারে বাজার করতে আবাসিক হোটেলে এসে চাকরীজীবি রফিক জানান, এখন সবজি খেয়েও পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকা মুশকিল। যেখানে এক কেজি সবজি প্রয়োজন সেখানে ৫০০ গ্রাম কিনতে বাধ্য হচ্ছি। সবজির যে মূল্য তাতে ৫০০ টাকার সবজি কিনেও পরিবারে দুই দিন চলছে না। এই অবস্থায় আমরা রীতিমত অসহায়। এভাবে তো চলতে পারবো না। সামান্য বেতনে চাকরি করে এভাবে তো চলা যায়না। তারপরেও পেটের দায়ে বাঁচার জন্য চড়াদামে খাচ্ছি।

Exit mobile version